Weather in Durga Puja: জমা জল ঠেলে মণ্ডপে ঢুকতে হবে না তো? উদ্বেগে নিকাশি বিভাগের কর্তারাই
Weather in Durga Puja: বৃষ্টি হলে জোয়ারের জলের কারণে বিপত্তি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সে কারণেই আগেভাগে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
কলকাতা: আলিপুর আবহাওয়া দফতর যা বলছে, তাতে দুর্গা পুজোর সময় বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে। তা নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন পুজো উদ্যোক্তারা। তবে বৃষ্টি হলেই কলকাতায় সবথেকে বেশি দুর্ভোগের কারণ যা হয়, তা হল জমা জল। সেই জমা জলে যাতে দর্শনার্থীদের সমস্যা না হয়, সে কথা মাথায় রেখে বৈঠক বসল কলকাতা পুরনিগমে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কলকাতা পুরনিগমে ১৬ টি বরোর সিভিল এবং নিকাশি বিভাগের চিফ এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে বৈঠক করলেন নিকাশি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ তারক সিং।
টানা বৃষ্টি চললে গঙ্গায় জোয়ার দেখা যায়, লকগেট বন্ধ থাকার কারণে যে সমস্যা তৈরি হয়, সেই বিষয়েই মূলত আলোচনা হয় এ দিন। দিনে দু’বার জোয়ার আসে গঙ্গায়। সেই সময় প্রায় চার ঘণ্টা লকগেট বন্ধ রাখতে হয়। নিকাশি বিভাগের আধিকারিকরা সে বিষয়ে তারক সিং-এর কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তাঁদের দাবি, টানা ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে জোয়ারের জন্য লকগেট বন্ধ রাখতে হয়। এই অবস্থায় জল জমে। সেই জল নামতে সাত থেকে আট ঘন্টা লেগে যেতে পারে। তাই নিকাশি বিভাগের কর্তারা মোটেই নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না।
উত্তর কলকাতা এবং দক্ষিণ কলকাতার একটা বড় অংশের জল গঙ্গার একাধিক লকগেট দিয়ে বেরোয়। এই জল যদি বেরতে না পারে, তাহলে টানা বৃষ্টিতে হাঁটু সমান জল নিয়েই দর্শনার্থীদের মণ্ডপে প্রবেশ করতে হবে বলেই আশঙ্কায় রয়েছেন নিকাশি বিভাগের আধিকারিকরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে অতিরিক্ত সাবমারসিবল পাম্প প্রতিটি বরোতে আগে থেকে বসানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বৈঠকে, যাতে টানা বৃষ্টি হলে সেই পাম্প দিয়ে ওই জমা জল সোজা একটি পাইপের সঙ্গে অন্য একটি পাইপ যুক্ত করে খালে বের করে দেওয়া যায়।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যে মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে নির্দেশ দিয়েছেন, কয়েকটি এলাকার ওপরে বিশেষ নজর রাখতে। বেহালা, টালিগঞ্জ, যাদবপুর, ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসের দু ‘ধার, উত্তর কলকাতার ঠনঠনিয়া, আমহার্স্ট স্ট্রিট, সেন্ট্রাল এভিনিউ এর দু’ধারের বেশ কিছু এলাকা, সিঁথি, কাশীপুর, বৌবাজার, তিলজলা, কসবা সহ শহরের বিস্তীর্ণ এলাকা নিয়েই উদ্বেগ বেশি।
সংশ্লিষ্ট এলাকা গুলিতে কলকাতার একাধিক বিখ্যাত দুর্গাপুজো হয়। স্বাভাবিকভাবেই এই এলাকাগুলি নিয়ে টানা বৃষ্টি হলে উদ্বেগ বাড়বে বলেই মনে করছেন কর্তারা। সূত্রের খবর, এদিন তারক সিং প্রত্যেকটি বরোতে একটি নির্দিষ্ট ক্যালেন্ডার তৈরি করে দিয়েছেন পুজোর জন্য। যেখানে গঙ্গায় কখন জোয়ার এবং কখন ভাঁটা যাচ্ছে, তার উল্লেখ করা থাকবে।
নিকাশি পাম্পিং স্টেশনে প্রত্যেকদিন কাজ শুরুর সময় পাম্পিং মেশিন গুলির কি অবস্থা তা রোস্টারে উল্লেখ করতে হবে। ডিজি সিভিল এবং ডিজি নিকাশি গোটা প্রক্রিয়ার ওপরে নজর রাখবেন। বর্তমানে কলকাতা পুরসভার অধীনে মোট পাঁচটি নিকাশি পাম্পিং জোন রয়েছে। যেগুলি হল, ধাপা লক পাম্পিং স্টেশন জোন, মানিকতলা পাম্পিং স্টেশন জোন, বালিগঞ্জ পাম্পিং স্টেশন জোন, পামার বাজার পাম্পিং স্টেশন জোন এবং কুদঘাট পাম্পিং স্টেশন জোন। ধাপা লক পাম্পিং স্টেশন জোনের অধীনে রয়েছে ১৯টি পাম্পিং স্টেশন। যেখানে রয়েছে ১১৪ টি পাম্প। মানিকতলা পাম্পিং স্টেশন জোনের অধীনে রয়েছে ১৪টি পাম্পিং স্টেশন। যেখানে রয়েছে ৫৮ টি পাম্প। বালিগঞ্জ পাম্পিং স্টেশন জোনের অধীনে রয়েছে ২১টি পাম্পিং স্টেশন। যেখানে রয়েছে ১৩১টি পাম্প। পামার বাজার পাম্পিং স্টেশন জোনের অধীনে রয়েছে ১৪টি পাম্পিং স্টেশন। যেখানে রয়েছে ৭৪টি পাম্প। কুদঘাট পাম্পিং স্টেশন জোনের অধীনে রয়েছে ৮টি পাম্পিং স্টেশন। যেখানে রয়েছে ৩১টি পাম্প। অর্থাৎ মোট ৭৬টি পাম্পিং স্টেশনে ৪০৮টি পাম্প রয়েছে। এদিন বৈঠকে যে রিপোর্ট নিকাশি বিভাগের পেশ হয়েছে তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, ৪০৮ টি পাম্পের মধ্যে ৩৯৬টি কাজ করছে।