Suvendu Adhikari: ‘আমি শুধু তৃণমূলের মুসলিমদের কথা বলেছি…’, সংখ্যালঘুদের নিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট শুভেন্দুর
Suvendu Adhikari: এই প্রথম নয়, মাস খানেক আগেও শ্রীরামপুরের গিয়ে একটি সভায় ঠিক এই কথাটাই বলেছিলেন শুভেন্দু। তিনি মুসলিম ভোট চান না নয়, পান না! আর সে সময়ে শাসকদলের তরফেও এসেছিল খোঁচা। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেছিলেন, "আসলে বিজেপি এখন খাদে পড়েছে।" শুভেন্দুর এই অবস্থানকে 'ব্যাক গিয়ার' বলেই কটাক্ষ করেছিলেন তিনি।

কলকাতা: এর আগেও বলেছিলেন। আবারও সংখ্যালঘুদের মন পেতে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মুসলিম ভোট ও বিজেপির অবস্থান নিয়ে তাঁর মতামতের ব্যাখ্যা দিয়েছেন শুভেন্দু। তাঁর বক্তব্য, তিনি কখনই বলেননি, মুসলিম ভোট তিনি চান না, তিনি যে আসলে সংখ্যালঘুদের ভোট পান না, সেটাই বলেছেন। তাঁর বক্তব্য, খুনী, দুষ্কৃতীদের কোনও জাত ধর্ম হয় না, তৃণমূল আশ্রীত মুসলিম দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে বলেছেন বলেই দাবি করছেন তিনি।
সাংবাদিক বৈঠকে শুভেন্দু বলেন, “আমি সবসময় এটাই বলে এসেছি, বিজেপি শাসিত রাজ্যে সব ধর্মের লোক ভাল আছে। সবাই ভাল আছেন, নিজ নিজ ধর্ম পালন করছেন। গুন্ডা গুন্ডাই হয়। খুনি খুনিই হয়। তার জাত ধর্ম আলাদা হয় না। ভারতীয় মুসলিমদের সঙ্গে বিজেপির কোনওদিনও লড়াই ছিল না। আজও নেই। আমাকে নিয়ে অনেক কথা বলা হয়।” আর সে প্রসঙ্গেই বলেন, “আমি কখনও বলিনি মুসলিমদের ভোট চাই না। আমি বলেছি পাই না। এটা তো ধ্রুব সত্য। ‘১৯, ‘২১, ‘২৪ তিনটে বড় নির্বাচনেই দেখা গিয়েছে বিজেপি এক শতাংশের কম মুসলিম ভোট পেয়েছে।আমি তৃণমূলের মুসলিমদের বিরুদ্ধে বলেছি, সব মুসলিমদের বিরুদ্ধে কেন বলব?”
তবে এই প্রথম নয়, মাস খানেক আগেও শ্রীরামপুরের গিয়ে একটি সভায় ঠিক এই কথাটাই বলেছিলেন শুভেন্দু। তিনি মুসলিম ভোট চান না নয়, পান না! আর সে সময়ে শাসকদলের তরফেও এসেছিল খোঁচা। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেছিলেন, “আসলে বিজেপি এখন খাদে পড়েছে।” শুভেন্দুর এই অবস্থানকে ‘ব্যাক গিয়ার’ বলেই কটাক্ষ করেছিলেন তিনি।
মাসখানেক পরে আবারও নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন শুভেন্দু। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা পাচ্ছেন অন্য সূত্র। যেদিন দলের বঙ্গ সভাপতির দায়িত্ব নিলেন শমীক ভাট্টাচার্য, সেদিনই তিনি স্পষ্ট করেছিলেন বাংলায় বিজেপির লক্ষ্য আসলে কী? তৃণমূল সরকারকে কটাক্ষ করলেও বাংলার মুসলিমদের প্রতি তাঁর সুর অনেকটাই নরম ছিল সেদিন। বলেছিলেন, “দিনের পর দিন একটা সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরি করে দেওয়া হয়েছে রাজ্যের মাটিতে। সংখ্যালঘুদের বুঝতে হবে বিজেপির লড়াই সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে নয়।” শমীক ভট্টাচার্য দুর্গাপুজোর বিসর্জন আর মহরমের প্রসঙ্গও টেনেছিলেন। শমীক এটাও বলেছিলেন, “আমরা চাই দুর্গাপুজোর বিসর্জন আর মহরমের মিছিল একই সময়ে একই রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাবে। কোনও দাঙ্গা নয়, কোনও সংঘর্ষ নয়, কোনও বিভাজন নয়। ” রাজনৈতিক অভিজ্ঞদের মতে, শুভেন্দুর বক্তব্যে বিজেপির অবস্থানের বদল খানিকটা সে সময় থেকেই।
সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপটে আবার বাংলার মাটিতে হুমায়ুনের প্রস্তাবিত ‘বাবরি’ মসজিদ নিয়ে নয়া সমীকরণ তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শুভেন্দুর গলায় এহেন কথা শোনার পর হুমায়ুন কবীরও বলছেন, “আমার মনে হয় বিজেপি এখন বুঝেছে কেবলমাত্র হিন্দু ভোট দিয়ে, যেখানে ৩৭ শতাংশ সংখ্যালঘু রয়েছেন, তাঁদের কিছু শতাংশ ভোট না পেলে তারা ক্ষমতায় আসতে পারবে না। এটা এতদিনে বোধগম্য হয়েছে।”
