
কলকাতা: রবি ঠাকুরের লেখা ‘সোনার বাংলা’-কে রাষ্ট্রদ্রোহীতার সঙ্গে জুড়ে দিয়েছিল অসমের হিমন্ত বিশ্বশর্মার সরকার। সেই বিতর্কের আগুন এখনও নিস্তেজ হয়নি। তার আগেই সূত্রপাত আরও এক বিতর্কের। রবি ঠাকুরের গানকে নিশানা করলেন আরও এক গেরুয়া শিবিরের নেতা। জুড়ে দিলেন ‘ইংরেজ বন্দনার’ কথা। যা ঘিরে ক্ষোভ চড়ল বাংলাতেও।
ঘটনা কর্নাটকের। সেখানে একটি ভরা সভায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা জাতীয় সঙ্গীতকে ‘ইংরেজ বন্দনার’ সঙ্গে জুড়ে দিলেন কর্নাটকের উত্তরা কন্নড় লোকসভার কেন্দ্রের সাংসদ বিশ্বেশ্বর হেগড়ে কাগেড়ি। তিনি বলেন, ‘ভারতের জাতীয় সঙ্গীত জন গণ মন লেখা হয় ব্রিটিশদের স্বাগত জানাতে।’ মূলত ভরা সভা থেকে ‘বন্দে মাতরম’কে জাতীয় সঙ্গীত করার প্রস্তাব দিয়েছেন এই বিজেপি সাংসদ। আর সেই প্রস্তাব দিতে গিয়েই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘জন গণ মন’ নিয়ে বির্তকিত মন্তব্য করে বসেন তিনি।
জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে পারদ চড়েছে বঙ্গের রাজনীতিতে। দুই মণীষীকে ঘিরে কার্যত দ্বিধা বিভক্ত দুই শিবির, এমনটাই মত একাংশের। এদিন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর গোটা জীবন ধরে শুধুই হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির কথা বলে গিয়েছেন। যা বিজেপির একেবারে পছন্দ নয়। যে ভাবে ওরা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে অপমান করেছে, আমরা তার বিরোধিতা জানাই। জন গণ মন গানের সঙ্গে পঞ্চম জর্জের আসা বা যাওয়ার কোনও সম্পর্ক নয়। এটা তাঁর জানার কথাও নয়। উনি তো বিজেপির লোক।’
সম্প্রতি নিজের মন কি বাত অনুষ্ঠান থেকে ‘বন্দে মাতরম’ গানের দেড়শো বছর পূর্তিতে দেশজুড়ে উদযাপনের বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সামনেই বাংলার ভোট। ওয়াকিবহাল মহল বলছে, তার আগে রাজনীতির আঙিনায় ‘বন্দে মাতরম বনাম জন গণ মন’। একই সুর ব্রাত্যরও। তাঁর কথায়, ‘এটা একটা সুপরিকল্পিত অভিসন্ধি। বন্দে মাতরম গানের সঙ্গে জন গণ মন গানকে লাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। বিশ্বেশ্বরের মন্তব্য সেই অভিসন্ধিরই অংশ।’ উল্লেখ্য়, কর্নাটকের বিজেপি সাংসদের বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ গেরুয়া শিবির। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারের কথায়, ‘এই মন্তব্য ওনার ব্যক্তিগত।’