
কলকাতা: বন্যা বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনের গিয়ে হামলার মুখে দুই জনপ্রতিনিধি। একজন সাংসদ, অন্যজন বিধায়ক। আর দু’জনেই বিজেপি নেতা। ফলত, রাজ্য়ের শাসকদলকে বিঁধতে সংশ্লিষ্ট পক্ষ রাজনৈতিক আঙিনা ব্যবহার করে আসরে যে নামবে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই বললেই চলে। আর তেমনটাই হল। বিজেপির মালদহ উত্তরের সাংসদ খগেন মুর্মু এবং শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের উপর হওয়া হামলার প্রতিবাদে রাজ্য়ের শাসকদলকেই বিঁধলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
সোমবার রাতে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করে তিনি লেখেন, ‘যে ভাবে আমাদের দলের কার্যকর্তা তথা একজন সাংসদ ও অন্যজন বিধায়ক বাংলার বিপর্যস্ত এলাকায় দুর্গতদের সাহায্য করতে গিয়ে হামলার মুখে পড়েছেন, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এই ঘটনা আসলে সে তৃণমূলের অসংবেদনশীলতা ও রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার করুণ পরিস্থিতির একটা উদাহরণ মাত্র।’
যেভাবে আমাদের দলের সহকর্মীরা—যাদের মধ্যে একজন বর্তমান সাংসদ ও বিধায়কও রয়েছেন—পশ্চিমবঙ্গে বন্যা ও ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সেবা করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এটি তৃণমূল কংগ্রেসের অসংবেদনশীলতা এবং রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলার করুণ রূপের স্পষ্ট প্রতিফলন।
আমার…
— Narendra Modi (@narendramodi) October 6, 2025
তাঁর সংযোজন, ‘আমার একান্ত কামনা, এই রকম একটা কঠিন সময়ে সে রাজ্যের সরকার তথা তৃণমূল কংগ্রেস প্রতিহিংসা পরায়ণ না হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াক। বিজেপির অন্য সকল কার্যকর্তারাও দুর্গতদের সাহায্যে কোনও কমতি রাখবে না বলেই আমার দৃঢ় বিশ্বাস।’
মোদীর এই আক্রমণ মোটেই সহজ ভাবে দেখছে না রাজ্যের শাসক শিবির। তাই দিনের দিনই আসরে নেমে পড়তে দেখা গেল তাঁদেরও। নিজের সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট লিখে বিজেপির দিকে পাল্টা তির ছুড়লেন খোদ রাজ্যের মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। এমন একটা বিপর্যয়ের সময়ও মোদী রাজনীতি করছেন বলেই সরাসরি তোপ দাগলেন তিনি।
তিনি লিখলেন, ‘উত্তরবঙ্গের মানুষ যখন বিপর্যস্ত, সেই সময় দেশের প্রধানমন্ত্রী একটি প্রাকৃতিক বিপর্যয় নিয়ে রাজনীতি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কোনও উপযুক্ত অনুসন্ধানের অপেক্ষা না করেই তৃণমূল কংগ্রেসের দিকে দায় ঠেলতে মরিয়া হয়ে পড়েছেন তিনি। আমরাও ওই ঘটনার প্রকাশ্যে নিন্দা জানিয়েছি। আর সর্বোপরি এটা তো বুক চাপড়ানোর সময় নয়। বরং দুর্গতদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার সময়।’
পাশাপাশি, মোদীর মণিপুর সফর নিয়েও আক্রমণ করতে দেখা যায় তাঁকে। মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, ‘যে প্রধানমন্ত্রী মণিপুর অশান্ত হওয়ার ৮৬৪ দিনের মাথায় গিয়েছিলেন, তাঁকে বাংলা নিয়ে এই সহসা উদ্বেগ মানায় না। আমি ওনাকে একটা কথা বলতে চাই, নির্বাচিত রাজ্য সরকারের কথা শুনুন, শুধু নিজের দলের লোকের নয়। আপনি ভারতেও প্রধানমন্ত্রী, শুধু বিজেপির নন।’