Mamata Banerjee: ‘অধিকার ছিনিয়ে নিতে হবে’, পাট্টা বিলি অনুষ্ঠানে NRC ইস্যুতে কেন্দ্রকে আক্রমণ মমতার
Mamata Banerjee: প্রায় ৪০০০ হাজার পাট্টা বিলি করা হয় এদিন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, কল্যাণ চট্টোপাধ্যায় ও আরও অনেকে।
আজ পুরুলিয়ায় গিয়েছেন মিঠুন চক্রবর্তী। পঞ্চায়েত ভোটের আগে বিজেপি নেতাদের আরও চাঙ্গা করতেই বঙ্গে এসেছেন মিঠুন। একদিকে যখন পুরুলিয়ায় বিজেপি নেতা পৌঁছেছেন। অপরদিকে নেতাজি ইন্ডোরে পাট্টা বিলির অনুষ্ঠানে পৌঁছেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রায় ৪ হাজার পাট্টা বিলি করা হয় এদিন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও আরও অনেকে।
- বিজেপিকে কটাক্ষ করে মমতা বলেন, ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার পুরো রাজ্যের টাকা। তাই নিয়েও চিঠি লিখেছে। বলেছে এখানের টাকা অপব্যবহার হচ্ছে। কোথা থেকে এল? যেন কাঠালি কলা-হলুদ গুড়ো। অকাজে লাগে। আগে আমরা কৈকেয়ী-মন্থরা-কুচুটি বলতাম। কুটুস-কুটুস করে মিথ্যা কথা বলে কান ভাঙায়। দিল্লি সরকারও পারে, সরকার-থেকে সরকার কথা না বলে পার্টি টু পার্টি কথা বলে। পার্টি যদি বলে সূর্য ওঠেনি। বলবে ওঠেনি। আগে জনগণ। পার্টি পরে। তুমি ভুলে গেছ যে তুমি জনগণের জন্য এসেছ।’
- এরপর মমতা বলেন, ‘কেন্দ্র সার দিচ্ছে না। তিনবার চিঠি লেখা হয়েছে। আলুর জন্য সার ওরা পাঠায়। আমরা তৈরি করি না। রাজনৈতিক মতভেদ থাকতে পারে তা বলে ১০০ দিনের টাকা, সার দেব না এসব কী। আমাদের প্রয়োজন আমাদের ২ লক্ষ ২০ মেট্রিক টন সার। দিয়েছে মাত্র ৭৭ হাজার। সমুদ্রে ১ মুঠো নুন। চাষীদের সমস্যা হচ্ছে। বারবার বলছি। আজ বিধানসভায়ও বলেছি। ওরা কাজ করে। ওদের প্রাপ্ত টাকা। ১০০ দিনের কাজের টাকাই দিচ্ছে না। আমি এখনও মনে করি শুভ বুদ্ধির উদয় হোক। যারা এই চিঠি লেখে। তাদের নাম বলতেও লজ্জা লাগে। বিরোধী থাকাকালীন গরীব মানুষের টাকা বন্ধ করে দিইনি। হয়ত কষ্ট হবে। কিন্তু করে দেব।’
- মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা থাকলে আমি আছি। আমি বলব যত উদবাস্তু কলোনি আমরা চিহ্নিত করেছি তাঁদের সকলকে পাট্টা দিতে হবে। কৃষিজ, বনভূমি পাট্টা আরও বাড়াতে হবে। আর হাতির হানাতে মারা গেলে ৫ লক্ষ টাকা করে আগেই দেওয়া হয়ে থাকে। এই টাকা পাওয়ার ক্ষেত্রে কেউ যেন বাদ না যান। সঙ্গে পরিবারের একজন চাকরি পাবেন। কারণ জঙ্গল বাঁচাতে জঙ্গলের মানুষই পারবেন। কলকাতার লোক গিয়ে জঙ্গল বুঝবে না।’
- মমতা বলেন, ‘আমি ভেদাভেদ পছন্দ করি না। আজ পাট্টা বিলির অনুষ্ঠানে সব ধর্মের ভাইবোনরা ছিলেন। চা বাগানের শ্রমিকদের বলছি চা সুন্দরীর ২০০০ ঘর তৈরি।আজ কৃষি জমির কর দিতে হয় না। সবটাই ফ্রি। আপনার তথ্যের ভুল থাকলে দুয়ারে সরকারে গিয়ে আবেদন করে আসুন।
- মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কত মানুষ বাংলাদেশ থেকে সব কিছু হারিয়ে এখানে এসেছেন। ১৯৭১ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত চুক্তি আছে সরকারের সঙ্গে যে তাঁরা ভারতের নাগরিক। ভাওতা দিয়ে তাদের ভারতের নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত করা হয়।’ এরপর বিজেপিকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘আমার ভোটে তুমি প্রধানমন্ত্রী, আর মন্ত্রিত্ব পেয়ে তুমি বলছ তোমায় নাগরিকত্ব দেব। এর মানে কী? এটা অসম্মান করা। যারা রিক্সা চালান, যারা দোকান চালান, আরও অনেকে আছেন যাদের রেশন, আধার সব কার্ড আছে। এনআরসির নাম করে যেন কেটে দিতে না পারে। দেখে আসবেন। তাই ভোটার লিস্টে নিজেদের নাম তুলুন। নয়ত বলে দেবে আপনি এনআরসি। ভোটার লিস্টে যার স্বামী-স্ত্রীর নাম ভুল আছে সেগুলি ঠিক করবেন। নয়ত কবে বলে দেবে ইউ আর নো মোর। অধিকার কেউ কাউকে দেয় না। ছিনিয়ে নিতে হবে।’
- মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আজ বিধানসভায় গিয়ে শুনলাম রেল অনেক জায়গায় পুর্নবাসন না দিয়ে উচ্ছেদ করেছে। আমি বারবার বলছি ক্ষতিপূরণ না দিয়ে বুলডোজার দিয়ে উচ্ছেদ করতে দেব না। যদি রেল, এয়ারপোর্টের জমিও থাকে তাও আন্দোলন করবেন। সরকার আপানার পাশে আছে।’
- এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমি যখন যাদবপুরে দাঁড়িয়েছিলাম তখন সেখানকার মানুষ আমায় বলেছিল, দিদি আপনি জিতলে উদবাস্তুদের পাট্টা দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন। আমি লড়ে গিয়েছিলাম। নিঃশর্ত জমির দলিল আমি পার্লামেন্ট থেকে পাশ করেছি। প্রায় ৩০০ উদবাস্তু কলোনিকে চিহ্নিত করেছি। তাদের সকলকে পাট্টা দেওয়া হবে। এর আগে প্রায় আড়াই লক্ষ লোক পাট্টা পেয়েছেন। মেদিনীপুরের খাসমহলে ১ লক্ষ লোক পাট্টা পেয়েছেন। পাহাড়ে পাট্টা দেওয়া বন্ধ ছিল। জট কাটছে। পাহাড়ের মানুষ পাট্টা পাচ্ছে। আমি বারবার বলি গরিব মানুষকে উচ্ছেদ করা যাবে না।