কলকাতা: এবার ‘দুয়ারে’ স্বাস্থ্য কমিশন (Health Commission)। জেলায় জেলায় হবে স্বাস্থ্য কমিশনের শুনানি। অভিযোগকারীকে আর কমিশনের কাছে আসতে হবে না। স্বাস্থ্য কমিশনের সদস্যরাই অভিযোগকারীর দুয়ারে পৌঁছে যাবেন। প্রসঙ্গত, গত শনিবার মুখ্যসচিব স্বাস্থ্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন। সেই বৈঠকে কী কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, তা নিয়ে এদিন সাংবাদিক বৈঠক করেন কমিশনের চেয়ারম্যান অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ‘দিদির দূতে’রা শুধু আবাস-রাস্তাঘাট-পানীয় জল নিয়েই অভিযোগের মুখে পড়ছেন না। গ্রাম বাংলার পঞ্চায়েত এলাকার মানুষের মুখে স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়েও অভিযোগ বিস্তর। গ্রামীণ বাংলায় সরকারি হাসপাতাল পরিষেবার ‘অসুখে’র তালিকা দীর্ঘ। সেই সকল মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড হাতে বাড়ির কাছের নার্সিইহোমই রাতবিরেতে ভরসা। কিন্তু সেই পরিষেবা নিয়েও মানুষের মধ্যে তৈরি হচ্ছে অসন্তোষ। উপভোক্তার চাপে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে খরচের কমাতে প্রকল্পের ছিদ্রপথ বন্ধে সচেষ্ট হয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। যার জেরে বেড়েছে রোগী প্রত্যাখ্যান।
তাই এবার গ্রাম বাংলার ভোটের ক্ষোভ প্রশমনে একেবারে অভিযোগকারীর দুয়ারে স্বাস্থ্য কমিশন। মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর সঙ্গে বৈঠকের পরই এই সিদ্ধান্ত বলে বুধবার কমিশনের সকল সদস্যের উপস্থিতিতে সাংবাদিক বৈঠক করে জানান কমিশনের চেয়ারম্যান অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়।
এতদিন অভিযোগকারীরা অনলাইন, ডাকযোগ বা সশরীরে সল্টলেকে কমিশনের কার্যালয়ে সশরীরে হাজির হয়ে অভিযোগ জানাতেন। তাতে কলকাতা, হাওড়া, দুই ২৪ পরগনার ৬৩টি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে অভিযোগ আসা কমেছে বলে দাবি কমিশনের চেয়ারম্যান। শহুরে ৬৩টি বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের বাইরে কমিশনের আওতাভুক্ত সাড়ে পাঁচ হাজার চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে সারা বাংলায়। সেই সকল প্রতিষ্ঠানকে কমিশনের সক্রিয় নজরদারির আওতায় আনার লক্ষ্যে শুধু দুয়ারে কমিশন নয়। খোলা হচ্ছে কল সেন্টারও। কল সেন্টারের টোল-ফ্রি নম্বরে স্বাস্থ্যসাথী প্রত্যাখ্যান-সহ বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা সংক্রান্ত যে কোনও অভিযোগ জানানো যাবে।
কমিশনের পঞ্চায়েত যাত্রার কর্মসূচিও তাৎপর্যপূর্ণ। মার্চের ২-৩ তারিখ ঝাড়গ্রামে দক্ষিণবঙ্গের সব জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের বৈঠকে ডেকে নবান্ন কমিশনের মাধ্যমে কী চায় তা স্পষ্ট করে দেওয়া হবে। দক্ষিণবঙ্গের আগে উত্তরবঙ্গের মালদহ-উত্তর দিনাজপুর থেকে সফর শুরু করছে কমিশন। জেলা সদর নয়। ৭-৮ ফেব্রুয়ারি সেই বৈঠক হবে মালদহের চাঁচলে। ১৫-১৬ ফেব্রুয়ারি পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুরের বৈঠক হবে পশ্চিম মেদিনীপুরের রঘুনাথপুরে। আর সব দেখে শুনে বিরোধীর বলছেন এ হল কমিশনের চলো পঞ্চায়েত ডাক!