Schools Reopen : গাছের ঝুরি ধরে দোল, বন্ধুদের সঙ্গে গল্প, ৫৬ দিন পর হাসিমুখে ক্লাসে পড়ুয়ারা
Schools Reopen : গ্রীষ্মের ছুটির পর আজ থেকে খুলল স্কুল। কোনও স্কুলে যেমন প্রায় সব পড়ুয়া উপস্থিত হল। আবার কোথাও বৃষ্টির জন্য পড়ুয়াদের উপস্থিতি কম।
কলকাতা : স্কুলের গেট খোলার অপেক্ষা। যেন তর সইছিল না। গেটটা খুলতেই দৌড়ে ক্লাসরুমে। ৫৬ দিন পর স্কুলে এসে খুশি পড়ুয়ারা। খুশি অভিভাবক ও শিক্ষক-শিক্ষিকারাও। তবে করোনা সংক্রমণ আবার বাড়তে থাকায় কিছুটা শঙ্কায় তারা। করোনার জেরে ফের বন্ধ হবে না তো স্কুল। করোনা সংক্রমণ বাড়ায় কোভিড-বিধি মানতে স্কুলগুলিকে নির্দেশ পাঠিয়েছে স্কুল শিক্ষা দফতর। সেই নির্দেশিকা মেনেই আজ রাজ্যে খুলল স্কুল।
অত্যধিক গরমের জন্য স্কুল শিক্ষা দফতর প্রথমে ২ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করেছিল। কিন্তু, গরম না কমায় ফের বাড়ানো হয় স্কুলের ছুটি। স্কুল শিক্ষা দফতর নোটিস দিয়ে জানায়, ২৬ জুন পর্যন্ত বন্ধ থাকবে স্কুল।
এই নিয়ে বিভিন্ন মহলে বিরূপ প্রতিক্রিয়াও হয়। অনেকের বক্তব্য, করোনা পরিস্থিতির জন্য এমনিতেই গত দু’বছরে বেশিরভাগ সময় স্কুল বন্ধ থেকেছে। ফলে পড়াশোনার ক্ষতি হয়েছে পড়ুয়াদের। এর মধ্যে গরমের ছুটি এতদিন হলে পড়াশোনার আরও ক্ষতি হবে। তবে স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফে জানানো হয়, গরমে পড়ুয়াদের সুরক্ষার কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
হুগলির বিভিন্ন স্কুলে দেখা গেল, পড়ুয়াদের স্কুলে পৌঁছে দিতে এসেছেন অভিভাবকরা। তাঁরা বললেন, “বাড়িতে থাকলে পড়াশোনা তেমন করছে না। সবসময় মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকছে ছেলেমেয়েরা।” স্কুল খুলে যাওয়ায় খুশি তাঁরা। তবে কেউ কেউ করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করলেন।
আলিপুরদুয়ারে আজ সকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। তবে বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই স্কুলমুখী হল পড়ুয়ারা। তাদের অনেকে বলল, “অনেকদিন পর স্কুল খুলল। বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হবে।” একাধিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক বললেন, বিদ্যালয় চত্বর স্যানিটাইজ করা হয়েছে। কোভিড বিধি মেনে স্কুল খোলা হয়েছে। মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। তবে বৃষ্টির জন্য স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা কিছুটা কম হয়েছে।
জলপাইগুড়িতে গতকাল রাত থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। এমনিতে জলপাইগুড়ির একাধিক এলাকা জলমগ্ন। আজও বৃষ্টি হওয়ায় স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা কম। কোনও স্কুলে মাত্র জনা পঁচিশেক পড়ুয়া এসেছে। টানা বৃষ্টির জেরে একাধিক স্কুল জল জমেছে। শিক্ষক-শিক্ষিকারা বলছেন, বৃষ্টির জন্য স্কুলে আসতে পারেনি পড়ুয়ারা।
গ্রীষ্মের ছুটি শেষে স্কুলে এসে আনন্দে মেতে উঠতে দেখা গেল পড়ুয়াদের। আজ বাঁকুড়ার একাধিক স্কুলে দেখা গেল পড়ুয়ারা গল্পে মেতেছে। কেউ বা বট গাছের ঝুরি ধরে দোল খেল। কেউ আবার দীর্ঘ ছুটিতে শেখা ভল্ট প্রদর্শন করে কুড়িয়ে নিল বন্ধুদের প্রশংসা।
কলকাতায়ও সেই একই ছবি দেখা গেল। স্কুলে ফেরার আনন্দে মেতে উঠল পড়ুয়ারা। অনেক দিন পর স্কুলের পোশাক পরে গেটের বাইরে অপেক্ষা। আর স্কুলের দরজা খুলতেই দৌড়ে গিয়ে বেঞ্চে বসা।
প্রায় দু’মাস স্কুল বন্ধ থাকায় অনেক পড়ুয়ার নাম ঠিকমতো মনে করতে পারছেন না শিক্ষক-শিক্ষিকারা। পড়ুয়ারাও স্কুলের নিয়ম ভুলতে বসেছে। এমনই বললেন পশ্চিম মেদিনীপুরের একটি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। কেউ কেউ মাস্ক পরে না আসায় সতর্ক করা হল। আগামিকাল থেকে সবাইকে মাস্ক পরে আসতে বলা হয়েছে।
স্কুল খুলেছে। কিন্তু, করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি আশঙ্কা বাড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষক ও অভিভাবকদের বক্তব্য, করোনার জন্য যেন স্কুল বন্ধ না হয়। স্কুলে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা, পড়ায় মেতে থাক পড়ুয়ারা।