Teens drown in Kolkata: রোয়িং করতে গিয়ে ঝড়ের তাণ্ডবে উল্টাল বোট, জলে ডুবে মৃত্যু ২ কিশোরের

Rowing in Kolkata: একটি বোটে রোয়িং করছিল পাঁচ জন। ঝড়ের মধ্যে পড়ে বোটটি উল্টে যায়। বোটের মধ্যে থাকা তিন জন সাঁতরে পাড়ে ফিরে আসতে পারলেও নিখোঁজ ছিল দুইজন। তাঁদের খোঁজে ডুবুরি নামানো হয়। দীর্ঘক্ষণ লেকে ডুবুরি নামিয়ে খোঁজ চালানোর পর দুইজনের দেহ উদ্ধার করেন ডুবুরিরা।

Teens drown in Kolkata: রোয়িং করতে গিয়ে ঝড়ের তাণ্ডবে উল্টাল বোট, জলে ডুবে মৃত্যু ২ কিশোরের
ডুবুরি নামিয়ে উদ্ধার দুই কিশোরের দেহ
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 21, 2022 | 11:03 PM

কলকাতা : শনিবার বিকেল থেকেই আকাশ কালো করে মেঘ জমে কলকাতার আকাশে। শুরু হয় তুমুল ঝড়-বৃষ্টি। এরই মধ্যে এক মর্মান্তিক ঘটনা কলকাতায়। রোয়িং করতে গিয়ে জলে ডুবে মৃত্যু হল দুই কিশোরের। ঘড়ির কাঁটায় তখন বিকেল ৫ টা ১৫ মিনিট। লেক ক্লাবে একটি বোটে রোয়িং করছিল পাঁচ জন। ঝড়ের মধ্যে পড়ে বোটটি উল্টে যায়। বোটের মধ্যে থাকা তিন জন সাঁতরে পাড়ে ফিরে আসতে পারলেও নিখোঁজ ছিল দুইজন। তাঁদের খোঁজে ডুবুরি নামানো হয়। দীর্ঘক্ষণ লেকে ডুবুরি নামিয়ে খোঁজ চালানোর পর দুইজনের দেহ উদ্ধার করেন ডুবুরিরা। মৃত কিশোরদের নাম পুশন সাধুখাঁ এবং সৌরদীপ চট্টোপাধ্যায়। পুশন উল্টোডাঙা ট্রাফিক গার্ডের ওসির ছেলে। দুই জনেরই বয়স ১৪ বছর। দুইজনেই সাউথ পয়েন্ট স্কুলের পড়ুয়া ছিল। একজন নবম শ্রেণি এবং অন্যজন দশম শ্রেণি।

কলকাতা রোয়িং ক্লাবের নিয়ম অনুযায়ী, সাঁতার না জানলে কেউ বোটে উঠতে পারবে না। সাউথ পয়েন্ট স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওই দুই পড়ুয়া ভাল সাঁতার জানত। তারপরও কীভাবে এই দুর্ঘটনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এদিকে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, রোয়িং করতে গেলে সব সময় একটি উদ্ধারকারী বোট থাকে। আগেও ছিল। কিন্তু পরিবেশবিদদের অভিযোগের জন্য সেটি তুলে দেওয়া হয়েছিল। কারণ সেই রেসকিউ বোট পেট্রোল চালিত ছিল। ফলে, মাছ মারা যেত বলে অভিযোগ। পরিবেশবিদদের সেই অভিযোগের ভিত্তিতে উদ্ধারকারী বোট রোইং করার সময় তুলে দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে ওই রেসকিউ বোট যদি থাকত, তাহলে এই দুই কিশোরকে হয়ত প্রাণে বাঁচানো যেত। অন্তত এমনই মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।

এর পাশাপাশি কালবৈশাখীর পূর্বাভাস থাকার পরেও কীভাবে রোয়িং-এর অনুমতি দেওয়া হল, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলতে শুরু করে দিয়েছেন একাংশের মানুষ। ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌঁছেছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। কেন উদ্ধারকারী নৌকা ছিল না, তা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেন ফিরহাদ হাকিম। মেয়র বলেন, “আমাদের সবথেকে বড় সমস্যা হল, এখানে যাঁরা পরিবেশবিদ আছেন, তাঁরা বাস্তবটা বুঝতে পারছেন না। একটি উদ্ধারকারী নৌকা থাকা অত্যন্ত দরকার। আমিও লেকে পেট্রোল বোটের বিরুদ্ধে। কিন্তু বিপদ-আপদের জন্য একটি উদ্ধারকারী নৌকা থাকা দরকার। পরিবেশের খবর দিয়ে ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনালে পিটিশন করে রেসকিউ বোটটিকে এখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওটা থাকলে অন্তত এই দুটি জীবন বেঁচে যেত।”

এই বিষয়ে ক্লাব কর্তা চন্দন রায় চৌধুরী বলছেন, “তখন ওরাও (কিশোররা) বুঝতে পারেনি ঝড় আসবে। জলের মধ্যেই ছিল। পাঁচ জনের মধ্যে তিনজনকে তখনই আশেপাশে যারা ছিল উদ্ধার করেছে। বাকি দুই জনকে আর পারেনি।” কিন্তু ঝড়ের পূর্বাভাস থাকা সত্ত্বেও কীভাবে অনুমতি দেওয়া হল, তার কোনও সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি। উল্টে ক্লাব কর্তা বলেন, “বাচ্চারা তো আর অত পূর্বাভাস দেখে না। ওদের তো বারণই করা হয়। কিন্তু চলে গেলে আর কী করা যাবে। আগামিকাল ওদের রোয়িং প্রতিযোগিতার ফাইনাল রয়েছে। তাই আজ প্র্যাকটিসের জন্য গিয়েছিল।”

সাউথ পয়েন্ট হাই স্কুলের প্রিন্সিপাল আর এস ভট্টাচার্য বলেন, “পুষন এবং সৌরদীপকে হারানোর খবরে আমরা মর্মাহত। তারা দুই জনই খুব ভাল সাঁতারু ছিল এবং স্কুল রোয়িং দলের জন্য ভাল প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল। আগামিকাল একটি ইন্টার-স্কুল প্রতিযোগিতার ফাইনালের জন্য যোগ্যতাও অর্জন করেছিল তারা। তাদের মৃত্যুর খবরে সহপাঠী ও শিক্ষকদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাদের পরিবারের পাশে আমরা আছি এবং এই ভয়ঙ্কর ঘটনার সাক্ষী যেন আর কোনও বাবা-মা না হন। আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাই যে রোয়ারদের নিরাপত্তার মান পর্যালোচনা করার কথা বিবেচনা করা হোক।”