Arjun Singh: ‘পদ্মবনে’ তিন বছরে ‘গদ্দার’ তকমাও জুটেছিল তৃণমূলের ‘ঘরের ছেলে’ অর্জুনের, হয়েছিল বাড়ি তল্লাশিও
Arjun Singh: তিন বছর অর্জুন ছিলেন মমতার পুরোপুরি বিরোধী শিবিরের মানুষ। বার বার বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছে ভাটপাড়ায়। অর্জুন সিংয়ের বাড়ির আশেপাশেও বোমাবাজি হয়েছে। তার জেরে জেড ক্যাটেগরির নিরাপত্তাও দেওয়া হয়েছিল অর্জুনকে।
কলকাতা : ২০১৯ সাল। ১৪ মার্চ। ফুল বদল করেছিলেন অর্জুন সিং। মমতার সঙ্গ ছেড়ে গায়ে চাপিয়েছিলেন গেরুয়া জার্সি। তারপর ২০২২ সালের ২২ মে। আবার ফুলবদল। এবার পদ্ম ছেড়ে জোড়াফুলের ঘরে ফিরেছেন অর্জুন। ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে এসেছে। আর মাঝে কেটে গিয়েছে তিন বছরের কিছু বেশি সময়।
বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগে অর্জুন ছিলেন ভাটপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক। কানাঘুষো শোনা যায়, ২০১৯ সালের লোকসভার ভোটে তিনি চেয়েছিলেন দলের প্রার্থী হতে। কিন্তু দলনেত্রীর পছন্দ ছিলেন দীনেশ ত্রিবেদী। আর তাই নিয়েই তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব শুরু হয় অর্জুনের। তৃণমূলের প্রার্থী তালিকাতেই দেখা যায়, প্রার্থী দীনেশই। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, “কয়েকজনের প্রার্থী হওয়ার লোভ আছে। যাঁরা যেতে চান, তাঁরা চলে গেলেই বেঁচে যাই।” মুখ্যমন্ত্রী যেদিন এই কথা বলেন, সেদিনই দিল্লিতে উড়ে যান অর্জুন সিং। আর ঠিক তার পরের দিনই সোজা দিল্লির বিজেপি পার্টি অফিসে। মুকুলের পথে হেঁটেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন অর্জুন।
এই তিন বছর অর্জুন ছিলেন মমতার পুরোপুরি বিরোধী শিবিরের মানুষ। বার বার বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছে ভাটপাড়ায়। অর্জুন সিংয়ের বাড়ির আশেপাশেও বোমাবাজি হয়েছে। তার জেরে জেড ক্যাটেগরির নিরাপত্তাও দেওয়া হয়েছিল অর্জুনকে। একাধিক মামলা হয়েছে অর্জুনের বিরুদ্ধে। অর্জুনও বিভিন্ন সময়ে আক্রমণ শানিয়েছেন রাজ্যের শাসক শিবিরকে।
অর্জুন সিং বিজেপিতে যাওয়ার পর বার বার ‘গদ্দার’ প্রসঙ্গ ঘুরে ফিরে এসেছে। দীনেশ ত্রিবেদীকে পাশে নিয়ে সেই সময় মমতা বলেছিলেন, “এখানে একজন গদ্দার ছিল। ভাটপাড়ার টিকিট চেয়েছিল। আমি দিইনি।” ভাটপাড়ায় বিধানসভা উপনির্বাচনের আগে এক জনসভায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমুন্ত্রীর মুখে ‘বড়া গদ্দার’ , ‘ছোটা গদ্দার’ বক্রোক্তিও শোনা গিয়েছিল। বার্তা দিয়ে গিয়েছিলেন, “হম সে যো টকরায়েগা, ওহ চুরচুর হো যায়েগা।” উল্লেখ্য, সেই বার ভাটপাড়ার বিধানসভা উপনির্বাচনে মদন মিত্রর বিপরীতে বিজেপি প্রার্থী করছিল অর্জুন সিংয়ের ছেলে পবন সিংকে। মমতার সেই ঝাঁঝালো বাক্যবাণের পাল্টাও শোনা গিয়েছিল অর্জুনের গলায়। বলেছিলেন, “দিদিকে দেখেই গদ্দারি শিখেছি।”
এখানেই শেষ নয়, এ তো ছিল সবে শুরু। এরপর থেকে বার বার উত্তপ্ত হয়েছে ভাটপাড়া। বোমাবাজি হয়েছে। এমনকী মাথাও ফেটেছিল অর্জুনের। কর ফাঁকি ও অনিয়মের অভিযোগ বেশ কিছু কোম্পানির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছিল ডিরেক্টরেট অব রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট। এটি রাজ্য সরকারের একটি সংস্থা। ওই কোম্পানিগুলির মধ্যে কয়েকটির সঙ্গে অর্জুন সিংয়ের যোগ ছিল, এমন অভিযোগও উঠেছিল। অভিযোগ আরও রয়েছে। সমবায় ব্যাঙ্কের তহবিল তছরূপের মামলায় সাংসদ অর্জুন সিংয়ের বাড়িতে তল্লাশিও হয়। জালিয়াতির অভিযোগে অর্জুন সিংয়ের ভাইপোকে গ্রেফতারও করা হয়।