Dengue Death: টিউশন পড়ে ফিরে মেয়ের মাথায় যন্ত্রণা, ধরা পড়ল ডেঙ্গি… সপ্তাহ ঘোরার আগেই মৃত্যু
Dengue: Death: শনিবার তুমুল জ্বর আসে। ডেঙ্গি পরীক্ষা করানো হলে রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
কলকাতা: ক্রমেই ভয়াবহ হচ্ছে রাজ্যের ডেঙ্গি (Dengue) পরিস্থিতি। ফের শহরে ডেঙ্গির কোপ। মৃত্য়ু হল ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীর। নিহতের নাম ভার্গবী মণ্ডল। ১০৫ নম্বর ওয়ার্ডের হালতুর যাদবগড়ের বাসিন্দা ভার্গবী। অষ্টম শ্রেণীর পড়ুয়া ছিল সে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার ওই কিশোরী টিউশন পড়ে বাড়িতে ফেরার পর মাথায় প্রবল যন্ত্রণা শুরু হয়। বিষয়টি সে তার দিদা ভারতী পালকে জানায়। এদিকে রাত যত বাড়তে থাকে শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে থাকে।
পরিজনরা জানিয়েছেন, এই পরিবার যে কোনও সমস্যায় হোমিওপ্যাথি ওষুধে ভরসা রাখে। সেইমতো এদিনও ভার্গবীকে ওষুধ খাওয়ানো হয়। কিন্তু শনিবার থেকে ওই কিশোরীর গায়ের তাপমাত্রা ১০৪-১০৫ ডিগ্রি উঠে যায় বলে পরিবারের দাবি। ওই কিশোরীকে নিয়ে তার বাড়ির লোকজন এলাকার এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান।
সেখানে দেওয়া প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ওই কিশোরীর রক্ত পরীক্ষা করা হলে তাতে ডেঙ্গি ধরা পড়ে। এরপর কিশোরীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে রবিবার রাতে তাকে বাড়ির লোকজন এমআর বাঙুর হাসপাতালে রাতে নিয়ে যায়। বাড়ির সদস্যদের অভিযোগ, আউটডোরে থাকা চিকিৎসরাও দেখে বুঝতে পারেন তাদের বাড়ির মেয়ের অবস্থা ভালো নয়। কিন্তু হাসপাতালে শয্যা নেই, এই যুক্তি দেখিয়ে চিকিৎসকরা কয়েকটি ওষুধ লিখে ওই কিশোরীকে বাড়ি পাঠিয়ে দেন।
অভিযোগ, সোমবার সকাল থেকে ফের ওই কিশোরীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। দুপুরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ওই কিশোরীকে। তখনও চিকিৎসকরা বেড নেই বলে ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলেন। কিন্তু কিশোরীর পরিজনদের কাকুতি মিনতিতে সোমবার রাতে ভার্গবীকে ভর্তি নেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বুধবার গভীর রাতেই ওই কিশোরীর মৃত্যু হয়।
কিশোরীর পরিজনদের চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, ডেঙ্গিতে ওই কিশোরীর লিভার এবং শরীরের অন্যান্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গে প্রভাব পড়েছে। শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছিল। কিন্তু পরিজনদের অভিযোগ, রবিবার রাতে ওই সরকারি হাসপাতাল যদি ফিরিয়ে না দিত, তাহলে তাদের বাড়ির মেয়েকে বাঁচানো যেত। নিহত কিশোরীর পরিবার প্রশ্ন তুলেছে সরকারি হাসপাতালের ভূমিকা নিয়ে।
বৃহস্পতিবার ভার্গবীর বাড়িতে থমথমে পরিস্থিত। বাড়িতে প্রতিমা তৈরি করা হয়। সেগুলির কাঠামো আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। পাড়ায় ভয়ঙ্কর মশার দাপট। এলাকার সবকটি জলাশয় আবর্জনায় পরিপূর্ণ। বাড়ির লোকজন ভেঙে পড়েছেন মেয়েকে হারিয়ে। একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে ভার্গবীর মা কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন কিশোরীর দিদা এবং মাসি। এলাকায় ভয়ঙ্করভাবে মশার উৎপাত বেড়েছে বলে জানালেন বাসিন্দারা। তাদের অভিযোগ, সে কারণে বাড়ি বাড়ি ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাব। ফিরহাদ হাকিম বলেন, “ওই বেল্টটা খুব ভয়াবহ হয়েছে। মানুষের সমর্থন চাই এই ডেঙ্গি তাড়াতে। সকলের পাশে দাঁড়ানো দরকার।”