Rice price hike : মাছে-ভাতে বাঙালির পাতে টান, কেন বাড়ছে চালের দাম ?

Rice price hike : প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য এবছর ধানচাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর জন্য চালের দাম বাড়ার কোনও কারণ থাকতে পারে না বলে কৃষকরা বলছেন।

Rice price hike : মাছে-ভাতে বাঙালির পাতে টান, কেন বাড়ছে চালের দাম ?
চালের দাম বৃদ্ধিতে চিন্তায় মধ্যবিত্ত বাঙালি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 14, 2022 | 7:19 PM

কলকাতা : মাছে-ভাতেই বাঙালি। ভাত না খেলে বাঙালির খাওয়া যেন অসম্পূর্ণ থেকে যায়। একবেলা অন্তত ভাত চাইই-চাই। সেই ভাতেই এবার টান পড়েছে। এমনিতে বাজারে গিয়ে সবজির দর ছ্যাঁকা দেয় মধ্যবিত্তের পকেটে। বেড়েছে গ্যাসের দামও। এবার তার সঙ্গে যোগ হয়েছে চালের দাম। চলতি বছরের শুরুর সঙ্গে এখনকার বাজারদর তুলনা করলে অনেকটা ফারাক চোখে পড়বে। বিভিন্ন চালের দাম (Rice Price Hike) ১০-২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। কিন্তু, চালের দাম এতটা বাড়ার কারণ কী? কী বলছেন চাল ব্যবসায়ী-মজুতদার আর কৃষকরা? চালের দামবৃদ্ধি নিয়ে টাস্ক ফোর্সের বক্তব্য কী ? সেসবের খোঁজ নিল টিভি নাইন বাংলা।

মোটা ধানের জোগান থাকায় মোটা চালের দাম প্রায় একই আছে। তার ওপর রেশনেও মোটা চাল দেওয়া হচ্ছে। সমস্যা তৈরি হয়েছে সরু চালের ক্ষেত্রে। মিনিকেট, বাঁশকাটি, দেরাদুন চালের দাম অনেকটা বেড়েছে।

বছরের শুরুতে মিনিকেট চালের দাম ছিল কিলো প্রতি ৩৮ থেকে ৪২ টাকা । এখন তা বেড়ে হয়েছে ৪৬-৪৮ টাকা। খাস চাল নতুন বছরের প্রথমে এক কিলোতে পড়ত ৬৮-৭০ টাকা। এখন সেই চাল এক কিলো কিনতে গ্রাহককে দিতে হচ্ছে ৯০-১০০ টাকা। লাল স্বর্ণ চালের দামও এই চার মাসের মধ্যে বেড়েছে। আগে এক কিলো লাল স্বর্ণ চালের দাম পড়ত ২২-২৪ টাকা। এখন ৩০-৩২ টাকা।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য এবছর ধানচাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিঘের পর বিঘে জমির ধান জলে ভেসে গিয়েছে। ফলে ধান উৎপাদন কম হবে, এমন আশঙ্কা ছিলই। অভিযোগ, সেই আশঙ্কাকে হাতিয়ার করে চালের কৃত্রিম অভাব সৃষ্টি করেছেন একশ্রেণির মজুতদার। রাইস মিলগুলো খাঁ খাঁ করছে।

রাইস মিলগুলির বক্তব্য, প্রান্তিক কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনে নিচ্ছেন মজুতদাররা। সেই চাল তাঁরা রাইস মিলগুলিতে না দিয়ে মজুত করে রাখছেন। ফলে একটা কৃত্রিম অভাবের সৃষ্টি হচ্ছে।

হুগলির আরামবাগ মহকুমায় ১০০টি চালকল অর্থাৎ রাইস মিল আছে। সেখানে ধানের জোগান কম থাকায় উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে। অভিযোগ, মজুতদাররা চাল মজুত করে রাখাতেই চালের দাম বেড়েছে।

মজুতদাররা অবশ্য তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, এবছর ধান উৎপাদন কম হয়েছে। সেজন্যই বাজারে জোগান কম। তাই, চালের দাম বেড়েছে।

চালের দাম বাড়ায় কৃষকরা কী লাভবান হয়েছেন?

শস্যগোলা হিসেবে পরিচিত পূর্ব বর্ধমান জেলা। এই জেলার ৩ লক্ষ ৬৯ হাজার ৬৬৪ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়। যেখান থেকে ধান উৎপাদন হয় ১৮ লক্ষ ৩৯ হাজার ৬৯২ মেট্রিক টন। এই জেলা পাশের ৮ জেলায় ধানের জোগান দেয়। কৃষকরা বলছেন, চালের দাম বাড়ার আগেই তাঁরা ধান বিক্রি করে দেন। ফলে এই দাম বাড়ার সঙ্গে তাঁদের লাভবান হওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই।

এবছর পূর্ব বর্ধমান জেলাতে ধান উৎপাদন কমেছে। কৃষকরা বলছেন, এবার আমন ধান গোলায় তোলার আগেই বৃষ্টিতে ধান নষ্ট হয়েছে। কিন্তু, তার জন্য চালের দাম বাড়ার কোনও কারণ দেখছেন না তাঁরা। তাঁদের বক্তব্য, সরকারের বিষয়টা দেখা উচিত।

চালের দামবৃদ্ধি নিয়ে কী বলছে টাস্ক ফোর্স? টাস্ক ফোর্সের সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলে বলছেন, আগে দাম বাড়লেও ফের তা কমছে। তাঁর কথায়, মার্চ-এপ্রিলে দাম বেড়েছিল। মে মাস থেকে ফের দাম কমেছে। ডিসেম্বরে ঝড়বৃষ্টির জন্য ধান চাষে ক্ষতি হয়েছিল। সেজন্য দাম বেড়েছিল। এখন নতুন চাল বাজারে আসছে। আবার দাম কমেছে।

কারণ যাই হোক না কেন, চালের দাম বাড়ায় মধ্যবিত্ত বাঙালির পকেটে টান পড়েছে। ভাতের বিকল্প কী, বাঙালি বোধহয় ভাবতেও পারে না। তাই, মাছে-ভাতে বাঙালিকে রাখতে সরকারের দিকেই তাকিয়ে সবাই।