ISL: ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানকে টেক্কা দিয়ে বাঙালি ব্রিগেড বানাচ্ছে ধোনির চেন্নাই

ধোনি-অভিষেকের টিম কিন্তু আইএসএল খেতাব জিততে বিদেশিদের পাশাপাশি ভরসা রাখছে একঝাঁক বাঙালির উপর।

ISL: ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানকে টেক্কা দিয়ে বাঙালি ব্রিগেড বানাচ্ছে ধোনির চেন্নাই
সৌরভ, দেবরিৎ, রফিক। (ফাইল ছবি)Image Credit source: FILE PHOTO
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 21, 2022 | 5:58 PM

কলকাতা: বিশ্বকাপার মার্কো মাতেরাজ্জির ছোঁয়ায় শুরুটাই ছিল অন্যরকম। ২০১৫ সালে ইতালিয়ান ছকেই ইন্ডিয়ান সুপার লিগ (Indian Super League) চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল চেন্নাইয়িন এফসি (Chennaiyin FC)। ২০১৭ সালে আবার সাফল্যের আকাশে উঠে পড়েছিল, আইএসএল চ্যাম্পিয়ন হয়ে। ২০১৯ সালে রানার্স। মহেন্দ্র সিং ধোনি (Mahendra Singh Dhoni), অভিষেক বচ্চনের (Abhishek Bachchhan) টিম তার পর থেকে যেন হারিয়েই গিয়েছে। লিগ টেবলের তলানিতে থাকতে হয়েছে গত তিন মরসুমে। সেখান থেকে এ বার ঘুরে দাঁড়ানোর ব্লু-প্রিন্ট বানাতে শুরু করেছে চেন্নাই। আইএসএলে প্রত্যাবর্তনের মঞ্চ সাজানোর দায়িত্ব নিয়েছেন একঝাঁক বাঙালি ফুটবলার। গত বার ছিলেন অনেকেই। এ বার জুড়ে যেতে চলেছেন আরও বেশ কয়েক জন। আইএসএলের দাপটে যেখানে কলকাতার টিমেই বাঙালি ফুটবলারের সংখ্যা ক্রমশ কমছে, সেখানে বাংলার বাইরে চেন্নাই হয়ে উঠেছে এক মুঠো বাংলা।

এ বার চেন্নাইয়ের বাঙালি ব্রিগেডের মণিমুক্তো কারা?

দেবজিৎ মজুমদার— মোহনবাগান থেকে গত বারই গিয়েছেন চেন্নাইয়ে। বাঙালি গোলকিপার সব ম্যাচ না খেললেও বেশ কিছু ম্যাচে সেরা ছন্দে দেখা গিয়েছে তাঁকে।

নারায়ণ দাস— ভারতীয় ফুটবলে অন্যতম সেরা লেফটব্যাক। ইস্টবেঙ্গল থেকে গত মরসুমে সই করেছেন চেন্নাইয়ে।

রহিম আলি— ইন্ডিয়ান অ্যারোজ থেকে উত্থান। তিন বছর ধরে খেলছেন চেন্নাইয়েই।

শমীক মিত্র— ইস্টবেঙ্গলের যুব দল থেকে উত্থান। চেন্নাইয়ের বি টিমে সই। সেখান থেকে ইন্ডিয়ান অ্যারোজে লোনে গিয়েছিলেন এই গোলকিপার। দু’বছর ধরে সিনিয়র টিমের সদস্য।

শুভদীপ মাঝি— গত মরসুমেই তিন বছরে চুক্তিতে সই। মিডফিল্ডার, ধীরে ধীরে নিজেকে তৈরি করছেন।

মনোতোষ চাকলাদার— ইস্টবেঙ্গল, মহামেডানে খেললেও প্রচার পেয়েছেন গত মরসুমে সন্তোষ ট্রফিতে দুরন্ত পারফর্ম করে। বাংলাকে ফাইনালে তুলেছিলেন। তারই সুফল হিসেবে চেন্নাই সই করিয়েছে তাঁকে।

সৌরভ দাস— ৩ বছর মোহনবাগানে খেলে মুম্বই সিটিতে সই করেন। সেখান থেকে গত মরসুমে ইস্টবেঙ্গলে লোনে এসেছিলেন। আগামী মরসুমের জন্য সই করেছেন চেন্নাইয়ে।

মহম্মদ রফিক— ইস্টবেঙ্গল, এটিকে, কেরালা ব্লাস্টার্স, মুম্বই সিটি খেলে আবার ফিরেছিলেন ইস্টবেঙ্গলে। এ বার সই করলেন চেন্নাইয়ে।

সজল বাগ— মোহনবাগানের যুব দল থেকে উত্থান। ১৯ বছরের ফুটবলার ২০১৯-২০ মরসুমে টিমের অন্যতম সেরা ফুটবলার ছিলেন। এই মিডফিল্ডার খেলেছিলেন ৪৬টা ম্যাচ। ৬টা গোলও করেছিলেন।

রহিম, নায়ায়ণ, দেবজিৎদের সঙ্গে এ বার মনোতোষ, সৌরভ, রফিক, সজলদের জুড়ে যাওয়ার নৈপথ্যে রয়েছেন প্রথম বসু। চেন্নাইয়িনের ফুটবল অপারেশন্সের হেড নিজে বাঙালি হওয়ায় বাংলার ফুটবলারদের উপর যে বাড়তি নজর থাকে, সন্দেহ নেই। তবে, মনোতোষদের নেওয়ার ক্ষেত্রে কাজ করেছে তাঁদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স। চেন্নাই থেকে ফোনে প্রথম বললেন, ‘বাঙালি ফুটবলার আগেও চেন্নাইয়ে ছিল। নতুন নয়। গত বছরই একঝাঁক বাঙালি ফুটবলার সই করানো হয়েছিল। সেই প্রক্রিয়া মেনে এ বারও বেশ কিছু বাঙালি এসেছে। একটা ব্যাপার বলে দেওয়া উচিত, আমি বাঙালি বলে বাংলার প্লেয়ার নিই, তা নয় কিন্তু। ওরা প্রত্যেকেই সেরাটা দিয়েছে। নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করেছে। সেই কারণেই চেন্নাই ওদের নিয়েছে।’

সন্তোষ ট্রফিতে দারুণ খেলা মনোতোষ কিংবা রফিককে নেওয়ার ক্ষেত্রে অন্য যুক্তি কাজ করেছিল। প্রথম বলে দিলেন, ‘রফিককে নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। ও বোধহয় ভারতীয় ফুটবলে একমাত্র প্লেয়ার, যাকে প্রচুর পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে। সব পরীক্ষাতেই ও দারুণ ভাবে সফল হয়েছে। এর আগেও কলকাতার বাইরে খেলেছে রফিক। ও টিমে থাকা মানেই কিন্তু ভারসাম্য বেড়ে যাওয়া। মনোতোষের ক্ষেত্রেও একই কথা বলতে হবে। সন্তোষে ও দারুণ খেলেছে। আইএসএলে সেটাই তুলে ধরতে পারলে ওর ভবিষ্যৎ কিন্তু উজ্জ্বল।’

গত কয়েক মরসুমে সাফল্য না পাওয়া চেন্নাই নতুন করে স্বপ্ন সাজাতে চাইছে। জার্মান কোচ থমাস ব্রাডারিচকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে টিমের। ধোনি-অভিষেকের টিম কিন্তু আইএসএল খেতাব জিততে বিদেশিদের পাশাপাশি ভরসা রাখছে একঝাঁক বাঙালির উপর।