AUKUS: ৩ দেশের ঠান্ডা যুদ্ধে রসনায় টান, প্রিয় গলদা চিংড়ি পাতে পড়ছে না অজিদের

Cold War: কী ভাবে পরিস্থিতি এতটা খারাপ হল যে অজি প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনকে সোজা জো বাইডেনের কাছে সরকারিভাবে আশ্বাস চাইতে হয় যে চিন যদি অস্ট্রেলিয়ার উপর হামলা করে, তবে আমেরিকাও জবাব দেবে?

AUKUS: ৩ দেশের ঠান্ডা যুদ্ধে রসনায় টান, প্রিয় গলদা চিংড়ি পাতে পড়ছে না অজিদের
সাধারণত যে পরিমাণ চিংড়ি রফতানি হয়, তার মাত্র ১০ শতাংশ গলদা চিংড়িই পৌঁছছে অস্ট্রেলিয়ায়
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 16, 2021 | 8:16 PM

অস্ট্রেলিয়া এবং চিনের মধ্যে ঠান্ডা যুদ্ধের জেরে ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বিখ্যাত গলদা চিংড়িতে টান পড়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের ক্ষমতায় জো বাইডেন আসার পর থেকেই আমেরিকার সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার অর্থনৈতিক ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। আর এই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে চিন অর্ধেক বিলিয়ন ডলারের গলদা চিংড়ি রফতানি আটকে দিয়েছে। মাসপ্রতি সাধারণত যে পরিমাণ চিংড়ি রফতানি হয়, তার মাত্র ১০ শতাংশ গলদা চিংড়িই পৌঁছছে অস্ট্রেলিয়ায়। দামও প্রায় আকাশ ছুঁয়েছে। ফলে অজিদের রসনায় আপাতত চিংড়ির টান ভয়াবহ।

তবে চিন যে ক্যানবেরা ও ওয়াশিংটনের এই বন্ধুতা মেনে নিতে নারাজ, সেই ইঙ্গিত গত ২১ জুলাই মিলেছিল স্পষ্টভাবে। তাইওয়ানের প্রশ্নে অজি সেনা যদি আমেরিকার পাশে দাঁড়ায়, তবে সরাসরি অস্ট্রেলিয়ার সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হবে বলে হুমকি দেয় বেজিং। যদিও ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় চিনের একক আধিপত্য নিয়ে বহু দেশের আপত্তি রয়েছে। তবে চিনের সঙ্গে আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ার এই ত্রিমুখী সমীকরণে নাক গলানোর আগ্রহ কেউই দেখায়নি।

একটা প্রশ্ন যদিও লাগাতার উঠছে। কী ভাবে পরিস্থিতি এতটা খারাপ হল যে অজি প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনকে সোজা জো বাইডেনের কাছে সরকারিভাবে আশ্বাস চাইতে হয় যে চিন যদি অস্ট্রেলিয়ার উপর হামলা করে, তবে আমেরিকাও জবাব দেবে?

নতুন করে ঠান্ডা যুদ্ধের এই অধ্যায়ের সূচনা হয় চিনে এক অস্ট্রেলিয় নাগরিকের মৃত্যুতে। মাদক পাচারে অভিযুক্ত ওই অজি নাগরিক মারা যান পুলিশি হেফাজতেই। দুই দেশের সম্পর্ক আরেকটু বিষিয়ে ওঠে চিনা সরকারের এক পরামর্শে। যেখানে বলা হয়, কোনও চিনা নাগরিক যেন ঘুরতে বা পড়াশোনা করতে অস্ট্রেলিয়ায় না যায়। কারণ এটি একটি বর্ণবিদ্বেষী দেশ। দুই দেশের আর্থিক লেনদেনেও এই সম্পর্কের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। জি৭ সম্মেলনে আমেরিকার পাশাপাশি ফ্রান্স এবং ব্রিটেনের সমর্থনও পায় অস্ট্রেলিয়া। সংশ্লিষ্ট দেশগুলি জানিয়ে দেয়, তারা চিনের সঙ্গে কোনও ধরনের বাণিজ্যিক যুদ্ধে জড়ানোর পক্ষপাতী নয়।

কিন্তু এই সবের মধ্যেই কূটনৈতিক বিরোধিতার বিষ আরও বেশি করে ছড়িয়ে পড়ে যখন আমেরিকা ও ব্রিটেনের সঙ্গে জুটি বেঁধে অস্ট্রেলিয়াও ত্রিদেশীয় একটি নিরাপত্তাজনিত অংশীদারিত্বে যোগ দেয়। যার মাধ্যমে কার্যত চিনের বিরুদ্ধেই প্রতিরোধ গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই উদ্যোগের নাম দেওয়া হয় আওকুশ (Aukus)। এই কর্মসূচির মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়া পরমাণু ক্ষমতা বিশিষ্ট সাবমেরিন তৈরি করতে পারবে, যা স্পষ্টভাবে চিনের জন্য সুখের খবর নয়। তারপর থেকেই কার্যত তেলে-বেগুনে জ্বলছে চিন। সেই মতো নির্মমভাবে অজিদের প্রিয় গলদা চিংড়ি সরবরাহ রুখে দিয়েছে বেজিং।

আরও পড়ুন: ‘শত্রুদের ষড়যন্ত্রের জবাব দেওয়া হবে’, মৃত্যুর জল্পনা উড়িয়ে অবশেষে প্রকাশ্যে এলেন মোল্লা বরাদর

চিনকেও স্পষ্টভাবে একটা বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে এই পদক্ষেপের মাধ্যমে। সেটা হল– সাগরে চিনের সম্প্রসারণ নীতি যে খুব একটা ফলপ্রসূ হবে না, সেটা বুঝিয়ে দেওয়া গিয়েছে। এই এলাকায় যে চিন পদে পদে বাধা পাবে, সেই ইঙ্গিতটাও টের পেয়েছে বেজিং। নয়া দিল্লি যদিও চুপচাপ গোটা পরিস্থিতি মেপে নিচ্ছে। আসলে চাপ যেই দেশেরই হোক না কেন, সেটা যদি চিনের উপর হয় তবে আখেরে তো ভারতেরই লাভ!

আরও পড়ুন: ‘মেয়েদের মানুষ বলেই গণ্য করে না ওরা’, তালিবরাজে নিত্যদিন ঠিকানা বদলই ভরসা মহিলা সমাজকর্মীদের!