Throwback Thursday: বিবাহিত হয়েও একাধিক মহিলা সঙ্গ, কামপোজ় ওষুধে আসক্তি; চরম হতাশায় কাটে মেহমুদের জীবন

Mehmood: মেহমুদ তাঁর আত্মজীবনীতে লিখেছেন, "এটা এক্কেবারে সত্যি যে, মহিলারা আমার দুর্বলতা ছিল। কিন্তু আমার সঙ্গে শোয়ার জন্য কোনওদিনও কোনও মহিলাকে আমি জোর করিনি। আমি যা করেছি, খোলাখুলি করেছি..."

Throwback Thursday: বিবাহিত হয়েও একাধিক মহিলা সঙ্গ, কামপোজ় ওষুধে আসক্তি; চরম হতাশায় কাটে মেহমুদের জীবন
মেহমুদ...
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 29, 2022 | 7:51 PM

বলিউডে তাঁর অভিনয় কেরিয়ার ছিল সফল। কিন্তু ব্যক্তি জীবন ছিল ততটাই সমস্যায় জর্জরিত। নানা সমস্যার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে তাঁর বিবাহিত জীবন। এতটাই সমস্যা তৈরি হত যে, মেহমুদকে ওষুধও খেতে হয়েছে। এমনও দিন গিয়েছিল যেদিন ১০০টি ওষুধ খেয়েছিলেন অভিনেতা।

অভিনয়ের জাদুতে পর্দায় দর্শককে হাসিয়েছিলেন মেহমুদ। কিন্তু এই হাসানোর পিছনেই লুকিয়ে ছিল যন্ত্রণা। পেট চালাতে একটা সময় রাস্তায় বসে ডিম বিক্রি করেছেন। গাড়ির চালকের কাজও করেছেন মেহমুদ। শিশু শিল্পী হিসেবে বলিউডে কাজ করতে শুরু করেছিলেন ‘কিসমত’ ছবিতে। ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৪৩ সালে। অভিনেতা অশোক কুমারের শিশুবেলার চরিত্রে দেখা যায় তাঁকে। অনেকগুলো বছর পর গুরু দত্ত তাঁকে খুঁজে পেয়ে বড় ব্রেক দিয়েছিলেন। জীবন পাল্টে গিয়েছিল মেহমুদের। পরবর্তী কালে ‘সসুরাল’ ছবিতে অভিনয় করেন ১৯৬১ সালে। একদিকে যেমন তাঁর কেরিয়ার উন্নত হচ্ছিল। অন্যদিকে ক্রমশ সমস্যা তৈরি হচ্ছিল ব্যক্তি জীবনে। একাধিক বিয়ে করেছিলেন মেহমুদ এবং সেগুলি সুখের ছিল না। ওষুধ খেতে শুরু করেছিলেন অভিনেতা।

ওয়াইল্ড ফিল্মসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মেহমুদ ব্যক্ত করেছিলেন তাঁর বিয়ে ও আসক্তি নিয়ে। তিনি বলেছিলেন, “আমি জানি না কীভাবে কামপোজ় নামের একটি ওষুধে আসক্তি তৈরি হয়েছিল আমার। কিন্তু আমি একটা জিনিস ভাল করেই জানি – খারাপটা খারাপই। বিয়ে করেছিলাম। কিন্তু ভালবাসতাম অন্য কাউকে। একটা নয়, ৭-৮টি ট্র্যাক ছিল আমার মস্তিষ্কে। আমি পাগল হয়ে যাচ্ছিলাম। বুঝতেই পারছিলাম না কোথায় যাচ্ছি। ফোন আসত। বলা হত, ‘তুমি এলে না’। আমি বলতাম, ‘আমি আসছি। তুমি আমার ডার্লিং। আমি তোমাকে ভালবাসি’। প্রেম জিনিসটা ভেলপুরির মতো হয়ে গিয়েছিল তখন।” মেহমুদের সঙ্গে অরুণা ইরানির প্রেমের গুঞ্জনও শোনা গিয়েছিল সেই সময়। দু’জনেই বিষয়টি অস্বীকার করেছিলেন যদিও। মেহমুদ এও জানিয়েছিলেন, প্রেম হয়নি, তবে সুসম্পর্ক ছিল তাঁদের মধ্যে।

মেহমুদ বলেছিলেন, “আমি বলতাম, এগুলো সব ভুল। ভাবতাম, কীভাবে এর থেকে বেরব। আমি মাকে হারিয়েছিলাম। ছোটবেলা থেকেই ভাল করে ঘুমতে পারতাম না। আমার ডাক্তারই আমাকে কামপোজ় ওষুধটি খেতে দেয়।” কিন্তু সেই ওষুধেই আসক্তি বাড়ে মেহমুদের। জানিয়েছেন, এমনও দিন গিয়েছে, যেদিন ১০০টি ওষুধ খেয়েছিলেন মেহমুদ। একসঙ্গে অতগুলো ওষুধ খেয়ে নিতেন অভিনেতা। মেহমুদ বলেছেন, “আমি গাড়ি চালাতাম। অভিনয় করতাম। আমার ছবি – ‘কুয়ারা বাপ’, ‘সবসে বড়া রুপাইয়া’ তৈরি করেছিলাম কামপোজ়ে আসক্তি থাকাকালীন।”

একটা সময় পর মেহমুদ লক্ষ্য় করলেন মাত্রাতিরিক্ত ওজন বেড়ে যাচ্ছে তাঁর। সেই সময় তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন ওষুধটি থেকে নিস্তার না নিলে উপায় নেই। তাঁর আত্মজীবনীতে অনেক মহিলার কথা উল্লেখ আছে। সেখানে মেহমুদ লিখেছেন, “এটা এক্কেবারে সত্যি যে, মহিলারা আমার দুর্বলতা ছিল। কিন্তু আমার সঙ্গে শোয়ার জন্য কোনওদিনও কোনও মহিলাকে আমি জোর করিনি। আমি যা করেছি, খোলাখুলি করেছি…”

সারা জীবনে অনেক শোক পেয়েছেন মেহমুদ। সদ্যজাত কন্যা মাসুমাকে হারিয়েছিলেন। বলেছেন, “আমি মাসুমার নিষ্প্রাণ পুতুলগুলো নিয়ে শুয়ে থাকতাম। আমার মৃত সন্তানের কথা মনে পড়ত।” তাঁর তিন ছেলেই বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিল। বিষয়টি ব্যথিত করেছিল মেহমুদকে। তিনি লিখেছিলেন, “আমার তিন ছেলে পাকি আলি, লাকি আলি ও মাকি আলি। তাদের প্রত্যেকজনকে ৬ লাখ টাকা দিয়েছিলাম যাতে সেই টাকা তারা বিনিয়োগ করে। কিন্তু সেটা তারা করেনি। পরিবর্তে সেই টাকা নিয়ে তারা বিদেশে চলে গেল। এবং সেখানে গিয়ে সব টাকা উড়িয়ে দেয়। তারপর তাদের যখন টাকার প্রয়োজন হল, আমি ওদের দিইনি। ওরা বাড়ি ছেড়ে চলে যায়।”