Ukraine War: ন্যাটোয় যোগের আবেদন দুই নর্ডিক দেশের! পারমাণবিক অস্ত্রে ফিনল্যান্ড ঘিরছে রাশিয়া

Ukraine War: বুধবার ন্যাটোয় যোগ দেওয়ার জন্য সরকারিভাবে আবেদন করল ফিনল্যান্ড এবং সুইডেন। তার আগেই ইউরোপীয় সীমান্তে পারমানবিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করেছে মস্কো, এমনটাই অভিযোগ।

Ukraine War: ন্যাটোয় যোগের আবেদন দুই নর্ডিক দেশের! পারমাণবিক অস্ত্রে ফিনল্যান্ড ঘিরছে রাশিয়া
রুশ পারমাণবিক সক্ষম ইস্কান্দার ক্ষেপণাস্ত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 18, 2022 | 3:11 PM

হেলসিঙ্কি: আর জল্পনা নয়, ন্যাটোয় যোগ দেওয়ার জন্য সরকারিভাবে আবেদন করল ফিনল্যান্ড এবং সুইডেন। বুধবার এই খবর জানিয়েছেন খোদ ন্যাটোর সেক্রেটারি জেনারেল জেনস স্টলটেনবার্গ। প্রসঙ্গত, পূর্ব ইউরোপের এই দুই দেশের নেতারা আগেই জানিয়েছিলেন, ইউক্রেনে রুশ আক্রমণের প্রেক্ষিতে নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। আর এই কারণেই তারা বিশ্বের বৃহত্তম সামরিক জোটে যোগ দিতে চাইছে। এদিকে, ফিনল্যান্ড এবং সুইডেনের এই পদক্ষেপের কারণে ইউক্রেনের পর এই দুই দেশেও রুশ আক্রমণের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। অভিযোগ করা হচ্ছে, গত সোমবার (১৬ মে) থেকেই ফিনল্যান্ড-রাশিয়া সীমান্তের অদূরে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করেছে মস্কো।

দুই নর্ডিক দেশের রাষ্ট্রদূতদের কাছ থেকে যোগদানের আবেদনপত্র পাওয়ার পর জেনস স্টলটেনবার্গ বলেন, ‘ন্যাটোয় যোগদানের জন্য ফিনল্যান্ড এবং সুইডেনের অনুরোধকে আমি আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই। আপনারা আমাদের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু। আমাদের নিরাপত্তার এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে এটা একটা ভাল দিন।’ এরপর, এই দুই দেশ ন্যাটোর সদস্য হবে কিনা, সেই বিষয়ে ভোট নেওয়া হবে ৩০ সদস্য দেশের। এমনিতে, ন্যাটো সদস্য হওয়ার প্রক্রিয়া শেষ হতে ৮ থেকে ১২ মাস সময় লাগে। কিন্তু, এই ক্ষেত্রে ২ সপ্তাহের মধ্যেই ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। আর সব কিছু পরিকল্পনামাফিক চললে, এক মাসের মধ্যেই ন্যাটোর সদস্য হয়ে যাবে ফিনল্যান্ড এবং সুইডেন। রুশ হামলার ঝুঁকির কথা মাথখায় রেখেই এই প্রক্রিয়া দ্রুত করা হচ্ছে। ন্যাটো সদস্যদের মধ্যে একমাত্র তুর্কির রিসেপ তাইপ এরদোগান বাধা দিতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে।

রাশিয়া এবং ন্য়াটোর টক্করে বরাবরই সামরিকভাবে নিরপেক্ষ থেকেছে সুইডেন এবং ফিনল্যান্ড। ন্যাটো বাহিনীতে যোগ না দেওয়ার বিষয়ে সরকারের অবস্থানের সঙ্গে সহমত ছিল দেশের বাসিন্দারাও। ১৯৩৯ এবং ১৯৪৪ সালে দুই বার মস্কোর সঙ্গে যুদ্ধে অন্তত ১০ শতাংশ এলাকা হারালেও, ন্যাটোর দিকে ঝোঁকেনি হেলসিঙ্কি। তবে, ২০১৪ সালে রাশিয়ার ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল চিত্রটা বদলে দেয়। গত কয়েক বছরে ন্যাটোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে শুরু করেছিল দুই নর্ডিক দেশ। বদলে গিয়েছে জনমতও।

এদিকে, সুইডেন এবং ফিনল্যান্ড সরকারিভাবে ন্যাটোয় যোগ দেওয়ার আগেই মস্কোর পক্ষ থেকে ফিনল্যান্ড-রাশিয়া সীমান্ত অঞ্চলে পারমাণবিক শক্তি সম্পন্ন ‘ইসকান্দার ক্ষেপণাস্ত্র’ বাহিনীর একটি ইউনিট পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগের মূলে রয়েছে একটি ভাইরাল ভিডিও। ডেইলি স্টার-এর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত সোমবার (১৬ মে) এই ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, সড়কপথে সাত-সাতটি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ ব্যবস্থা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে রুশ শহর ভাইবর্গে। পশ্চিম রাশিয়ার এই শহরটি ফিনল্যান্ডের সীমান্ত থেকে মাত্র ২৪ মাইল দূরে অবস্থিত। প্রসঙ্গত, রাশিয়া এবং ফিনল্যান্ডের মধ্যে প্রায় ১৩০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে।

ভিডিওটির সত্যতা যাচাই না করা গেলেও, মস্কোর আগেই ইউরোপীয় সীমান্তে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের হুমকি দিয়েছিল মস্কো। রাশিয়ার সরকারি টেলিভিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ফিনল্যান্ড এবং সুইডেনের মতো নর্ডিক দেশগুলিতে ন্যাটোর সামরিক ঘাঁটি তৈরি হলে ইউরোপীয় সীমান্তে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করা ছাড়া উপায় থাকবে না ক্রেমলিনের। ন্যাটো বাহিনীর সামরিক ঘাঁটি তৈরি হলে, ওই অঞ্চলে সামরিক শক্তির ভারসাম্য নষ্ট হবে। সেই ভারসাম্য বজায় রাখতেই পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করা হবে।