Kalapani Boundary Dispute: ‘ফিরিয়ে আনব ভারতের দখল করা জমি’, ফের নেপালের প্রধানমন্ত্রীর মুখে বিতর্কিত ‘কালাপানি’

Kalapani Boundary Dispute: নেপালের প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবা বলেছেন, ভারতের দখলে থাকা বিতর্কিত জমি ফিরিয়ে নিতে প্রস্তুত নেপাল সরকার।

Kalapani Boundary Dispute: 'ফিরিয়ে আনব ভারতের দখল করা জমি', ফের নেপালের প্রধানমন্ত্রীর মুখে বিতর্কিত 'কালাপানি'
নেপালের প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবা (ছবি সৌজন্য - এএনআই)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 30, 2022 | 7:30 AM

নয়াদিল্লি: মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগেই বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে লুম্বিনীতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবা। কেপি ওলি জমানার পর, ফের দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সুসম্পর্কের মহল দেখা গিয়েছিল। কিন্তু, ফের নেপালি প্রধানমন্ত্রীর গলার শোনা বিবাদের স্বর। সংবাদ সংস্থা আইএএনএস-এর প্রতিবেদন অনুসারে, গত শনিবার (২৮ মে) নেপালের বাজেট উপস্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী দেউবা। সেই সময়ই তিনি বলেছেন, ‘বর্তমানে ভারতের দখলে থাকা বিতর্কিত জমি ফিরিয়ে নিতে প্রস্তুত নেপাল সরকার’। এই নিয়ে তার আগে, দেউবা সরকারকে একহাত নিয়েছিলেন সেই দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী কেপি ওলি। সংসদে ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি বলেন, ‘ভারতের দখল করা জমি ফিরিয়ে নিতে ব্যর্থ হয়েছে দেউবা সরকার’।

বিতর্কিত জমি ফেরানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও প্রধানমন্ত্রী দেউবা স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন, এই বিষয়ে আগের ওলি সরকারের থেকে তাঁর সরকার ভিন্ন পথে এগোবে। তিনি বলেছেন, তাঁর ‘সরকার নেপালের জমি রক্ষা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে বিষয়টি সংবেদনশীল, তাই কালাপানি, লিপুলেখ এবং লিম্পিয়াধুরা নেপালের অন্তর্গত বলে দাবি করে সরকার আলোচনা এবং কূটনৈতিক উপায়ে সমস্যাটির সমাধান করবে’। ওলির সমালোচনার জবাবে প্রধানমন্ত্রী দেউবা আরও বলেন, ‘বৈদেশিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমরা জোটনিরপেক্ষ নীতি অনুসরণ করছি। জাতীয় স্বার্থ, পারস্পরিক সুবিধা এবং সম্মান বজায় রেখে, সরকার প্রতিবেশী এবং সমস্ত বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সেইসঙ্গে নেপালের জমি রক্ষা করার জন্যও সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’। আইএএনএস জানিয়েছে, ভারতের সঙ্গে নেপালের সম্পর্ককে ‘বহুমাত্রিক এবং বৈচিত্র্যময় সহযোগিতার’ বলে ব্যাখ্যা করেছেন প্রধানমন্ত্রী দেউবা।

প্রসঙ্গত, নেপাল ও ভারতের মধ্যে কালাপানি এলাকা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সীমান্ত বিরোধ রয়েছে। তবে কেপি ওলির জমানায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক তলানিতে পৌঁছেছিল। ২০২০ সালের মে মাসে তৎকালীন ওলি সরকার নেপালের একটি নতুন রাজনৈতিক মানচিত্র প্রকাশ করেছিল। সেই মানচিত্রে বিতর্কিত কালপানি, লিপুলেখ এবং লিম্পিয়াধুরা এলাকাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। এই এলাকাগুলির ভারতীয় অঞ্চল বলে দাবি করে নয়া দিল্লি। অন্যদিকে কাঠমাণ্ডর দাবি, এই তিনটি এলাকা নেপালের। ওলি সরকারের ওই মানচিত্র প্রকাশের তীব্র বিরোধিতা করেছিল ভারত। ভারত বলেছিল এটা ‘কার্টোগ্রাফিক দাবি’, অর্থাৎ দাবিটি মানচিত্রেই সীমাবদ্ধ। ‘একতরফা আঞ্চলিক সম্প্রসারণের চেষ্টা’ না করে ‘প্রতিষ্ঠিত কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার’ মাধ্যমে এই বিরোধ নিষ্পত্তির আহ্বান জানিয়েছিল নয়া দিল্লি। কেপি ওলি সরকারের ওই সিদ্ধান্তের পিছনে চিনের মদত ছিল বলে মনে করেন একাংশের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা। তবে ওলি যে বেজিং-এর সুনজরে ছিলেন, তা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট ছিল।

নয়া দিল্লি থেকে এখনও পর্যন্ত শের বাহাদুর দেউবার জমি ফেরানোর প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি। তবে, কেপি ওলি সরকারের পতনের পর থেকে ভারতের সঙ্গে নেপালের সুসম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে নেপালি প্রধানমন্ত্রী দেউবার আমন্ত্রণে মাত্র ৫ ঘণ্টার সংক্ষিপ্ত সফরে লুম্বিনীতে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সফরকালে ভারত ও নেপালের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। ভারত ও নেপালের অংশীদারিত্ব ভবিষ্যতে কোন পথে এগোবে, তার একটা রোডম্যাপও তৈরি করা হয়েছে। সূত্রের খবর, দেউবা সরকার অন্তত ওলি সরকারের মতো কোনও একতরফা সিদ্ধান্ত নেওয়ার পথে যাবে না, এমনটাই মনে করছে সাউথ ব্লক।