চাষের কাজে গিয়েই বিপত্তি! আচমকা বজ্রপাতে মৃত্যু কৃষকের
Thunderstorm: ঘটনার খবর পেয়েই মৃতের বাড়িতে যান জয়নগর ১ নম্বর ব্লকের ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক সত্যজিৎ বিশ্বাস। বিপদগ্রস্ত পরিবারের পাশে থেকে সবরকম সাহায্য করা ছাড়াও সরকারি সাহায্যদানের আশ্বাস দেন তিনি।
জয়নগর: ফের বজ্রে বলি বঙ্গে। মাঠে চাষের কাজ করতে গিয়ে বজ্রপাতে মৃত্য়ু হল এক কৃষকের। জানা গিয়েছে মৃত কৃষকের নাম পিন্টু সরকার। জয়নগর ১ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত ঢোষা-চন্দনেশ্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা পিন্টুই ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনশীল।
মৃতের পরিবার জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে নিজের জমিতে চাষের কাজে গিয়েছিলেন পিন্টু। সেই সময় আচমকা ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়। মাঠ থেকে ফেরার আগেই মাথায় বাজ পড়ে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। এদিকে, স্বামী অনেকক্ষণ বাড়ি না ফেরায় তাঁকে খুঁজতে স্থানীয়দের নিয়ে মাঠে যান পিন্টুর স্ত্রী। সেখানেই মাঠের মধ্য়ে মৃত অবস্থায় ওই কৃষককে আবিষ্কার করেন তাঁরা। স্থানীয়রা জানিয়েছেন ওই কৃষকের শরীরে বজ্রাঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। মৃতের পরিবারে তাঁর স্ত্রী ছাড়াও রয়েছে দুটি ছোট ছেলেমেয়ে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনশীল ব্যক্তির এই মৃত্যুতে শোকাতুর গোটা গ্রাম।
এদিন, ঘটনার খবর পেয়েই মৃতের বাড়িতে যান জয়নগর ১ নম্বর ব্লকের ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক সত্যজিৎ বিশ্বাস। বিপদগ্রস্ত পরিবারের পাশে থেকে সবরকম সাহায্য করা ছাড়াও সরকারি সাহায্যদানের আশ্বাস দেন তিনি। শুক্রবার বাড়িতে গিয়ে সরকারি ভাবে ২লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার কথাও জানিয়েছেন ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক।
প্রসঙ্গত, সরকারি পরিসংখ্যানে নজর দিলে, ইয়াস পরবর্তী বঙ্গে বজ্রাঘাতে মৃতের সংখ্যা অন্তত ৫০ ছাড়িয়েছে। নথিভুক্ত করা হয়নি এমন মৃত্য়ু সংখ্যা কত তা স্পষ্ট নয়। বঙ্গে বাজে মৃত্যু খুব অপরিচিত না হলেও এত ঘন ঘন মৃত্যু বিশেষ পরিচিত নয়। বিশেষ করে ইয়াস ঘূর্ণিঝড়ের পর থেকেই বেড়েছে এই মৃত্যু সংখ্যা। এই মুহূর্তে বঙ্গে বজ্রপাতে মৃ্তের সংখ্যা ৫৩। চলতি সপ্তাহেই চার জেলায় বজ্রপাতে মোট মৃতের সংখ্যা ৪। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন।
পরিবেশবিদদের মতে, বিশ্বউষ্ণায়ন ও মাত্রাতিরিক্ত দূষণ এই বজ্রপাতের কারণ। শুধুমাত্র প্রাকৃতিক বিপর্যয় এর কারণ বলে মানতে নারাজ বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের দাবি, মানুষের অসাবধানতা মৃত্যু হওয়ার একটা বড় কারণ। জেলায় জেলায় যেখানে বারবার প্রশাসনের তরফে সতর্ক করা হচ্ছে সেখানে আমজনতার ‘গা-ছাড়া’ মনোভাবই মৃত্যুর অন্যতম কারণ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, মাঠে কাজ করতে গিয়েই মৃত্য়ু হচ্ছে। অতিবর্ষণ বা ভারী বর্ষণ চলাকালীন ফসল বাঁচাতে অনেকেই ছুটছেন মাঠে। বিশেষজ্ঞরা এই অসাবধনতাকেই কারণ বলে মনে করছেন।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, মৌসুমী বায়ু সক্রিয় হয়ে বর্তমানে পটনা, বরেলি হয়ে পঞ্জাবের অমৃতসরের উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যার ফলে বঙ্গোপসাগরের উপর প্রচুর পরিমাণে জলীয় বাষ্প তৈরি হয়েছে। ঠিক সেই কারণেই ১১ অগস্ট রাত থেকে শুরু করে ১৫ অগস্ট পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই হালকা থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হবে। দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ তুলনামূলক কম হলেও উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রে তা ভারী থেকে অতিভারী হবে বলেই জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। সেই জন্য উত্তর থেকে দক্ষিণ, প্রায় সব জেলাতেই বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আরও পড়ুন: ভাণ্ডার পূর্তি ‘দালালে’, ‘লক্ষ্মী’ এল না ঘরে! শুধু ‘কাটমানির’ যাওয়া-আসা…