Himachal Pradesh: হিমাচলের এই ভুতুড়ে শহরে সাক্ষী হতে পারেন ইতিহাসের!

এই অঞ্চলে মোঘলরা অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ডের জন্য পাঠাত। তারপর শুরু হয় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ, নাম পরিবর্তনের সঙ্গেই এটি পরিণত হয় আর্মি ক্যান্টনমেন্টে।

Himachal Pradesh: হিমাচলের এই ভুতুড়ে শহরে সাক্ষী হতে পারেন ইতিহাসের!
দাগশাইয়ের কবরস্থান
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 29, 2021 | 2:10 PM

রোজকারের ব্যস্ত জীবন, শহরের দূষণ থেকে হাঁপিয়ে উঠে সবাই ছুটি কাটানোর জন্য খুঁজে নিতে চায় অফবিট কোনও জায়গা। সেখানে পাহাড়ের ডেস্টিনেশনই তালিকায় সবার ওপরে উঠে আসে। কিন্তু এটা কোনও পর্যটন কেন্দ্র নয়। তবে এমনটাও নয় যে এই অফবিটের কোনও ইতিহাস নেই। হিমাচল প্রদেশের ছোট্ট গ্রাম দাগশাই। সোলান থেকে ১১ কিলোমিটার দূরত্বে এবং সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৫৬৮৮ ফুট উঁচুতে অবস্থিত এই দাগশাই।

দাগশাই ভারতের একটি খুব পুরোনো ক্যান্টনমেন্ট শহর এবং একটি ভুতুড়ে শহরও। এই শহর মোঘল সাম্রাজ্যের সময়কালের। সেই সময়ের ‘দাগ-ই শাহি’ থেকে আজ দাগশাই। এই অঞ্চলে মোঘলরা অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ডের জন্য পাঠাত। তারপর শুরু হয় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ, নাম পরিবর্তনের সঙ্গেই এটি পরিণত হয় আর্মি ক্যান্টনমেন্টে।

কিন্তু সবুজে ঘেরা এই পাহাড় শহর ভুতুড়ে কেন! তাহলে অতীতের গল্পে ফিরে যাওয়া যাক। বর্তমানে এই দাগশাইতে সেনা ক্যান্টনমেন্টে, কিছু সেনা ভবন, কয়েকটি স্কুল, স্থানীয় বাড়ি এবং একটি কবরস্থান রয়েছে। স্থানীয়রা মনে করেন এই কবরস্থানের অস্তিত্ব ব্রিটিশ সাম্রাজ্যকাল থেকে। সেই সময় মেজর জর্জ ওয়েস্টন নামে একজন ব্রিটিশ ব্যক্তি তাঁর স্ত্রী মেরির সঙ্গে দাগশাইতে থাকতেন। সেই দম্পতি এই শহরে চিকিৎসক এবং নার্সের কাজ করতেন। বহু সময় নিঃসন্তান থাকার পর, এই শহরের এক সাধুর আশীর্বাদে মেরি গর্ভবতী হলেন। কিন্তু আট মাসের গর্ভবতী অবস্থায় মেরি মারা গেলেন এবং জর্জ তাঁর গর্ভস্থ স্ত্রীর উদ্দেশ্যে একটি কবরস্থান তৈরি করেন। সেই সময় সেই করবস্থানের মার্বেল ইংল্যান্ড আমদানি করা হয়েছিল।

সময়ের সঙ্গেই মৃত মেরির সম্পর্কে শহরে গুজব রটতে লাগল। সবাই বলতে শুরু করল যে, মৃত মেরি নাকি বর প্রদানে সক্ষম। সবাই এমনটাও বিশ্বাস করতে শুরু করল যদি কোনও গর্ভবতী মহিলা মেরির কবর থেকে মার্বেলের টুকরো কেটে ফেলে তাহলে সে পুত্রসন্তানের জন্ম দেবে। যাতে কোনও ভাবেই কন্যা সন্তান জন্ম না নেয় তাই অনেকে ওই কবরস্থানে যাতায়াত শুরু করল। আর এই কারণে ধীরে ধীরে মৃত মেরির মার্বেলের তৈরি কাঠামোটি নষ্ট হয়ে যায়। আর এখান থেকে অনেকের ধারনা কবরস্থানটি রক্ষা করার জন্য মৃত মেরি তাঁর কবরের চারপাশে ঘুরে বেড়ায়। অনেকে তাঁকে সেখানে ঘুরে বেড়াতে দেখেছেন বলেও দাবি করেন।

দাগশাইয়ের সেন্টার জেল মিউজিয়াম

তবে এই শহর শুধু কবরস্থানের জন্য ভুতুড়ে নয়। ১৮৪৯ সালে দাগশাই কেন্দ্রীয় কারাগারেও এমন কিছু ঘটনা ঘটেছিল যেখান থেকে এই পাহাড়ি শহর আজ ভুতুড়ে। এই কারাগারে অনেক হত্যা ও নির্যাতনের সাক্ষী হয়ে রয়েছে, এবং স্পষ্টতই, এই রক্তাক্ত বিষয়গুলি এখনও কারাগারের আশেপাশে রয়েছে বলেই অনেকে ধারণা করেন। তবে এখন এই কারাগারটি একটি জাদুঘরে পরিণত হয়েছে। দাগশাই-এর কবরস্থানের মতো, কারাগারটিও ভুতুড়ে কিনা তা বলা কঠিন।

কিন্তু এই সুন্দর শহরটি ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে খুব প্রিয় হয়ে উঠতে পারে। কালকা থেকে সিমলা যাওয়ার পথে ধরমপুরের ক্রসিং পেড়িয়ে ওপরে উঠলেই পেয়ে যাবেন ‘দাগ-ই-শাহি’। চণ্ডীগড় থেকে সিমলা যাওয়ার পথেও কুমারহাট্টি স্টেশনে নেমে চলে যেতে পারেন এই ছোট্ট শহরে।

আরও পড়ুন: ঘুরতে যাওয়ার আগে প্যাকিং করার সময় কোন কোন বিষয়গুলির দিকে বিশেষ খেয়াল রাখবেন, জেনে নিন