Nishiyama Onsen Keiunkan: কিছু বছর যাবৎ পশ্চিমবঙ্গের ভগ্নপ্রায় জমিদারবাড়িগুলো মেরামত করে তৈরি করা হচ্ছে বিলাসবহুল হোটেল। জমিদারবাড়িগুলো কয়েক বছর পুরনো। কিন্তু হোটেল হিসেবে তাদের রূপ নতুন। কিন্তু বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো হোটেল কোথায় জানেন? সেই হোটেল বয়স কত, জানেন? কিংবা সেখানে থাকার খরচ কত? শুনলে চমকে উঠতে পারেন। আগেরকার দিনে ‘হোটেল’-এর কোনও কনসেপ্ট ছিল না। পথে পান্থশালায় রাত কাটাতেন মানুষ। ধীরে-ধীরে সংস্কৃতির সঙ্গে মিশল হোটেল। স্থাপত্যে ভরপুর হোটেলের দৌড়ে এগিয়ে রোম, প্যারিসের মতো ইউরোপীয় শহর। কিন্তু সেসব হোটেল খুব বেশি হলেও কয়েক’শ বছর পুরনো হবে। বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন হোটেল প্রায় হাজার বছর পুরনো। এশিয়া মহাদেশেই রয়েছে তার অবস্থান। এখনও সেখানে বিশ্বজুড়ে মানুষের ভিড় লেগেই থাকে।
জাপানের নিশিয়ামা ওনসেন কিয়ুনকান স্পা হোটেল বিশ্বের প্রাচীনতম হোটেল। ৭০৫ খ্রিস্টাব্দে চালু হয়েছিল এই হোটেল। হিসেব করলে দেখা যাবে, ১৩১২ বছর পুরনো নিশিয়ামা ওনসেন কিয়ুনকান হোটেল। প্রাচীনতম ও আভিজাত্যে পরিপূর্ণ হওয়ায় এই হোটেল জায়গা করে নিয়েছে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে। বিশ্বের প্রাচীনতম হোটেল যে হাজার বছর পুরনো—এটাই শুধুমাত্র এর বৈশিষ্ট্য নয়। ১৩১২ বছরেও বিশ্বের প্রাচীনতম হোটেলের মালিকানা আজও পরিবর্তন হয় না। একই পরিবারের ৫২তম প্রজন্ম বর্তমানে এই হোটেল পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে।
রেকর্ড বলছে, প্রায় ১৩০০ বছর আগে ফুজিওয়ারা মাহিতো এবং তাঁর পরিবার একটি পান্থশালা খুলেছিলেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই পান্থশালা হয়ে ওঠে হোটেল। এমনকী হোটেল হওয়ার পরও নানা পরিবর্তন হতে থাকে নিশিয়ামা ওনসেন কিয়ুনকানে। আধুনিকীকরণ হয়েছে ঠিকই কিন্তু কোনওদিন নিশিয়ামা ওনসেন কিয়ুনকানের দরজা বন্ধ হয়নি অতিথিদের জন্য। শেষবার ১৯৯৭ সালে মেরামতের কাজ হয়েছিল হোটেলের।
বর্তমানে নিশিয়ামা ওনসেন কিয়ুনকানে ৩৭টি শয়নকক্ষ রয়েছে। সেখানে এক রাত কাটানোর খরচ ৪০৮ ডলার। যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৩৩,৬৩৮ টাকা। প্রাচীনতম হওয়ার পাশাপাশি এই হোটেলের হট স্প্রিং বাথ খুবই জনপ্রিয়। পাশাপাশি হট স্প্রিংয়ের জল দিয়ে আতিথেয়তা জানানো হয়। তার সঙ্গে রয়েছে জাপানের স্থাপত্য। আর হোটেলের চারপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও নেহাত কম কিছু নয়।
নিশিয়ামা ওনসেন কিয়ুনকানের খুব কাছেই অবস্থিত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট মাউন্ট ফুজি। মাউন্ট ফুজির পাদদেশে অবস্থিত বিশ্বের প্রাচীনতম হোটেল। তবে, হোটেলের রুমে বসে আপনি মাউন্ট ফুজি দেখতে পাবেন না। তবু এখানকার হট স্প্রিং, নদী, জঙ্গল ও ভ্যালির সৌন্দর্যের টানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নামী ব্যক্তিত্বরা নিশিয়ামা ওনসেন কিয়ুনকানে আসেন।