মায়ের হাতে মায়ের পুজো! কলকাতার এই দুর্গাপুজোয় এবার দেখা যাবে চার মহিলা পুরোহিতকে
প্রতিবছর কলকাতার নামকরা ক্লাবগুলি কিছু না কিছু অভিনবত্বের চাপ রেখে দিতে চান। এবছরও অন্যথা হবে না। তবে এবার যেটি হবে, তা হিন্দুশাস্ত্রে নজিরবিহীন ও বিরল ঘটনা ঘটবে বলে মনে করা হচ্ছে।
সামনেই বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব। শুধু পশ্চিমবঙ্গেই এই পুজো সীমাবদ্ধ যে নয়, তা বলাই বাহুল্য়। সারা দেশ তো বটেই, বিদেশের মাটিতে যেখানেই বাঙালিরা একজোট হয়েছেন, সেখানেই দুর্গাপুজো অনুষ্ঠিত হয়েছে। করোনা অতিমারির জেরে গত বছর উত্সবের রঙ ফিকে হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু বাঙালির মনন থেকে পুজোর আনন্দ থামানো যায়নি। প্রতিবছর সন্তানদের নিয়ে স্বামীর ঘর থেকে পুজোর চারদিন বাপের বাড়িতে আসেন দেবী দুর্গা। আর সেই চারদিনেই মেয়ের ঘরে ফিরে আসার আনন্দে মেতে ওঠেন আপামর বাঙালি।
প্রতিবছর কলকাতার নামকরা ক্লাবগুলি কিছু না কিছু অভিনবত্বের চাপ রেখে দিতে চান। এবছরও অন্যথা হবে না। তবে এবার যেটি হবে, তা হিন্দুশাস্ত্রে নজিরবিহীন ও বিরল ঘটনা ঘটবে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রথমবারের মতো কলকাতার বড় বাজেটের পুজোয় মহিলা পুরোহিত পুজো করবেন বলে জানা গিয়েছে। রাশবিহারী অ্যাভিনিউের বিখ্যাত ৬৬পল্লী পুজোয় এবার পৌরহিত্য করবেন চার মহিলা পুরোহিত।
দুর্গা পুজোয় পৌরহিত্যের হাত ধরে নারী জাগরণের সূচনা! জানা গিয়েছে, গত বছর পুজোর অভিজ্ঞ পুরুষ পুরোহিতের মৃত্যুর পর পুজো কমিটির সদস্যরা চার মহিলা পুরোহিত দিয়ে পুজো করানোর সিদ্ধান্ত নেন। বর্তমানে, বাঙালি বিয়েতে মহিলা পুরোহিতের চল শুরু হয়েছে। বিষয়টি যেমন অভিনব তেমন নারীর অধিকার ও ক্ষমতারও বিকাশ ঘটেছে। এবারের দুর্গাপুজোয় মহিলা পুরোহিতের যোগদান ঘিরে পুজো কমিটির বরিষ্ঠ পদাধিকারী একজন জানিয়েছেন, চারজন মহিলাই হলেন পণ্ডিত। যাঁরা হিন্দু শাস্ত্রে অন্যতম উদাহরণ তৈরি করেছেন। প্রতিটি মহিলাই নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত, কেউ অধ্যাপিকা, কেউ আবার দেবীর উপাসক। তিনি আরও জানিয়েছেন, নারী হওয়ায় পুজোর করার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে এমন ভাবাটা এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে তা শোভা পায় না। মহিলারা কি গৃহস্থ ও পুজোর নানান অনুষ্ঠানে সবরকম ব্যবস্থা করেন না? দেবী হিসেবে যাঁকে পুজো করছি, তিনিও একজন নারী, তেমনি বর্তমানে পুজোর মহিলা সংগঠক থাকতে পারে, তেমন মহিলা পুরোহিতে কেন নয়?
এ বছর মহিলা পুরোহিতদের অনুমোদন পেলে আগামী বছরও মহিলাদের দিয়েই পুজো করার ইচ্ছে রয়েছে পুজো কমিটির। ৬৬ পল্লী পুজো কমিটির এবারের থিম মায়ের হাতে মায়ের পুজো। যার অর্থ হল, মায়ের পুজোতেই মাতৃদেবীকে আগমন করা। সে অর্থে এই থিম যে একেবারেই যথার্থ তা বলাই বাহুল্য।
আরও পড়ুন: কম খরচে ৬ দিনের জন্য কাশ্মীর ভ্রমণের সুবর্ণ সুযোগ! হাতছাড়া করলেই মিস করবেন অনেক কিছু