Slum Tours: মাত্র ১২০০ টাকায় বিকোচ্ছে দিল্লির বস্তিতে ভ্রমণের ব্যবস্থা! ট্রাভেল এজেন্সির বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন নেটিজ়েনরা

Poverty Tourism: জানা গিয়েছে, গ্রুপ ট্যুরে সর্বাধিক ৬ জন পর্যটক অংশ নিতে পারবেন। সম্মানহানি ব্যতিরেকে এবং অনুমতি নিয়েই বস্তিতে প্রবেশের ব্যাপারে নিশ্চয়তা দিচ্ছে ওই সংস্থা।

Slum Tours: মাত্র ১২০০ টাকায় বিকোচ্ছে দিল্লির বস্তিতে ভ্রমণের ব্যবস্থা! ট্রাভেল এজেন্সির বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন নেটিজ়েনরা
প্রতীকী ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 09, 2022 | 8:30 AM

এক ভ্রমণ সংস্থার (Travel Agency) তরফে ভারতের বস্তি ভ্রমণের (Slum Tours) প্রস্তাবে তৈরি হয়েছে বিপুল বিতর্ক। সম্প্রতি ইংরেজি ‘টি’ অক্ষর দিয়ে শুরু হওয়া ওই জনপ্রিয় ভ্রমণ উপদেশমূলক সংস্থার তরফে শরু হয়েছ ‘নিউ দিল্লি বস্তি পদযাত্রা ভ্রমণ’। এই পর্যটনের মূল লক্ষ্য গরিব বস্তিবাসীর জীবনযাপন দেখানো। আগ্রহী পর্যটকরা (Tourists) মাত্রা ১২০০ টাকায় ‘উপভোগ’ করতে পারেন দুঃস্থ মানুষের জীবনযাপনের রীতি। ‘আমাদের সবচাইতে জনপ্রিয় ট্যুর আপনাকে নিয়ে যাবে এশিয়ার অন্যতম বৃহত বস্তিতে। সেখানে গেলে আপনি এই সুন্দর পৃথিবীতে অন্য রূপে আশা এবং আলো দেখতে পাবেন। আমাদের সঙ্গে হাঁটুন এবং জীবন.সম্পর্কে জানুন। জানুন প্রতিদিনের জীবনপ্রণালী, ক্ষুদ্র ব্যবসা, বস্তির অন্দরের বাজার, প্রতি দশ মিনিট অন্তর আসা ট্রেন, চাপাটি কারখানা সম্পর্কে। সম্পূর্ণ মৌলিক উপায়ে আরও অনেক কিছু সম্পর্কে বোঝার সুযোগ পান।’— নেটিজেনদের মতে ওই ভ্রমণ সংস্থার পেজে পোস্ট করা ট্যুর সম্পর্কে লেখা বিজ্ঞাপনের বক্তব্য মোটামুটি এইরকম।

ওই ভ্রমণ সংস্থার দাবি অনুসারে, সঞ্জয় কলোনিতে ৩ ঘণ্টার এই আলাদা ধরনের পদযাত্রা দিল্লির বস্তিজীবন সম্পর্কে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা দিতে পারে। এমনকী দুঃস্থ বস্তিবাসীর জীবনের লড়াই সম্পর্কেও জানাতে পারে এই পদযাত্রা। বস্তিতে বসবাসকারী ব্যক্তিদের গোষ্ঠীগঠন ও গোষ্ঠীর মধ্যে তৈরি হওয়া সংস্কৃতি এবং ঐক্যের সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনেরও সুযোগ করে দিতে পারে। জানা যাচ্ছে, গ্রুপ ট্যুরে সর্বাধিক ৬ জন পর্যটক অংশ নিতে পারবেন। সম্মানহানি ব্যতিরেকে এবং অনুমতি নিয়েই বস্তিতে প্রবেশের ব্যাপারে নিশ্চয়তা দিচ্ছে ওই সংস্থা।

স্ল্যাম ওয়াকিং ট্যুর-এ বস্তিজীবন উপভোগ করার জন্য থাকছে আরও কিছু সুযোগ—

– ক্ষুদ্র শিল্প পর্যবেক্ষণ

– মুরগি বাজার পরিদর্শন

– প্রতিদিন শহরে ৮ হাজার চাপাটি সরবরাহকারী চাপাটি কারখানা ভ্রমণ

– এক কাপ চায়ের স্বাদ গ্রহণ সহ পর্যটকদের চিন্তাভাবনা ভাগ করে নেওয়ার সুযোগ।

সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুসারে প্রথমদিকে এই ট্যুরের খরচ ছিল ১৮০০ টাকা। পরে তা কমানো হয়।

নেটিজেনরা ওই ভ্রমণ সংস্থার পেজে ট্যুর সম্পর্কে জানতে পেরে ক্রোধে ফেটে পড়েন। তাঁরা এই ট্যুরকে ‘পভার্টি ট্যুরিজম’ বলে কটাক্ষ করেন। কিছু নেটিজেন আবার এই ট্যুরিজমকে ‘পভার্টি পর্ন’ নামেও অভিহিত করেছেন। অর্থাৎ বিত্তবানরা এই দারিদ্রকে উপভোগ করার ভঙ্গিতে দেখবেন ও নিজের অবস্থান সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠবেন যা তাদের মানসিকভাবে তৃপ্তি প্রদান করবে! এমনকী কম খরচে অন্য বস্তিও দর্শন করানোর বিজ্ঞাপনও রয়েছে ওই ভ্রমণ সংস্থার পেজে। ওই বস্তির নাম ধারাভি। এই বস্তি পরিদর্শন করানোর খরচ সামান্য কম। মাত্র ৬৫৩ টাকা।

ভ্রমণ সংস্থার এহেন বিজ্ঞাপনে অত্যন্ত বিরক্ত হয়েছে নেটিজেনরা। তাঁরা বলছেন, ক্রমাগত মুদ্রাস্ফীতির কারণে নিত্যব্যবহার্য জিনিসপত্র্র সহ খাদ্যদ্রব্যের মূল্য চড়চড় করে বাড়ছে। মানুষ দু’বেলা দু’মুঠো খাবার জোগাড় করতে গিয়ে খাচ্ছেন হিমশিম। ঠিক এমন সময়ে আত্মাকে বেচে দারিদ্রকে প্লেটে সাজিয়ে বিক্রি করতে নেমেছে কিছু অসাধু সংস্থা। চিড়িয়াখানার পশু আর দুঃস্থ মানুষের মধ্যে তফাত ঘুচিয়ে দিতে চাইছে কিছু শয়তান ব্যবসায়ী। অবস্থার ফেরে বাধ্য হয়ে বস্তিতে আটকে থাকা দরিদ্র মানুষের আত্মসম্মান ও লজ্জা বিকিয়ে নিজেদের পকেট ভরার ব্যবস্থা করতে চাইছে কিছু ব্যবসায়ী। মানুষ ও মনুষ্যত্বের এই অপমান ও অবনমন কখনওই কাঙ্খিত নয়। অবিলম্বে ওই ভ্রমণ সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার আর্জি জানিয়েছেন নেটিজেনরা। অন্যদিকে কিছু নেটিজেনের মতে, ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে ফারাক ক্রমশ এতটাই বেড়ে গিয়েছে যে ধনীরা বুঝতে পারছেন না তারা ঠিক কতটা ধনী। বিপুল অর্থও তাই তাদের সন্তুষ্ট করতে পারছে না। এই ধরনের ট্যুরের সাহায্যে তারা নিজেদের সঙ্গে গরিব মানুষের তুলনা করে আত্মসন্তুষ্টি লাভ করতে চাইছেন। সেই ধর্ষকামী লিপ্সায় তৈলমর্দন করতে উঠেপড়ে লেগেছে কিছু মাদারি ভ্রমণ সংস্থা যাদের কাছে দরিদ্র মানুষ আসলে রোজগারের নাচনি বানর বই আলাদা কিছু নয়।