Ganesh Chaturthi 2022: গণেশ চতুর্থীতে ভুল করে চাঁদ দেখেছেন! বিনাকারণে বদনাম হওয়ার প্রতিকার জানা আছে কী?

Moon sighting: অপতবিত্র অবস্থাকে পুনরায় পবিত্র অবস্থায় ফেরাতে চাইলে আপনার উচিত বিশেষ মন্ত্র উপ করা। তাতে বাধা বিপত্তি ও মিথ্যা অপবাদের বোঝা আপানার মাথায় চাপবে না।

Ganesh Chaturthi 2022: গণেশ চতুর্থীতে ভুল করে চাঁদ দেখেছেন! বিনাকারণে বদনাম হওয়ার প্রতিকার জানা আছে কী?
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 31, 2022 | 11:26 PM

গণেশ চতুর্থীতে (Ganesh Chaturthi 2022 )চন্দ্রদর্শন (Moon sighting )একেবারেই অনুচিত। প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে, এই পবিত্র দিনে চাঁদের (Moon) দিকে তাকালে তার জীবনে নেমে আসে দুর্ভাগ্য। ওই ব্যক্তিকে বিনা কারণে বদনামের শিকার হতে হয়! মিথ্যা কলঙ্কের (Kalank Chaturthi) বোঝা বয়ে নিয়ে বেড়াতে হয়। অপবাদ বইতে হয় কোনও কারণ ছাড়াই। এমনকী ভুলক্রমেও গণেশ চতুর্থীতে চাঁদের দিকে থাকলে ওই ব্যক্তির গায়ে লাগতে পারে মিথ্যা চুরির বদনামও। তাই কোনওভাবে গণেশ চতুর্থীর দিন চাঁদের দিকে তাকিয়ে ফেললে, সিদ্ধি বিনায়কের পূজার দিনে কোনওভাবে চাঁদের দিকে তাকিয়ে ফেললে তার একটাই প্রতিকার রয়েছে! অপতবিত্র অবস্থাকে পুনরায় পবিত্র অবস্থায় ফেরাতে চাইলে আপনার উচিত বিশেষ মন্ত্র উপ করা। তাতে বাধা বিপত্তি ও মিথ্যা অপবাদের বোঝা আপানার মাথায় চাপবে না।

প্রভু গণেশ চাঁদকে অভিশাপ দিয়েছিলেন

পুরাণ অনুসারে, একদিন প্রভু গণেশ দেবী পার্বতীর আদেশে তাঁর দ্বার রক্ষার কাজে নিযুক্ত ছিলেন। সেইসময় মহাদেব গৃহসম্মুখে আসেন ও দ্বার খুলে প্রবেশ করতে যান। বালকরূপী গণেশ মহাদেবকে বাধা দেন। মহাদেব বারবার বালকরূপী গণেশকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। তা সত্ত্বেও মাতৃ আদেশে প্রভু গণেশ অটল থাকেন ও শিবকে গৃহে প্রবেশে বাধা দেন। বালক গণেশের কার্যকলাপে অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হয়ে ওঠেন শিব। তৎক্ষণাৎ ত্রিশূল দিয়ে গণেশের শিরচ্ছেদ করেন। এরপরেই দেবী পার্বতী ওই স্থান. আসেন ও সন্তানের এমন অবস্থা দেখে শোকাতুর হয়ে ওঠেন। তিনি মহাদেবকে বোঝান বালকরূপী গণেশের কোনও দোষ নেই। সে শুধু মাতৃআদেশই পালন করছিল। শোকাকুলা দেবী বারংবার মহাদেবকে তাঁর কাছে পুত্রকে ফিরিয়ে দেওয়ার আবেদন করতে থাকেন। দেবীর শোকাতুর অবস্থা দেখে মহাদেবও আর স্থির থাকতে পারনে না। গজানন রূপে প্রভু গণেশের প্রাণ ফিরিয়ে দেন। স্থির হয় সকল দেবতার পুজোর আগে প্রভু গণেশের পুজো শুরু হবে। স্বর্গের সকল দেবী ও দেবতা প্রভু গণেশের বন্দনা করেন ও প্রশংসা করেন। কেবলমাত্র চন্দ্রদেব প্রভু গণেশের এহেন রূপে মজা পেয়ে মুচকি মুচকি হাসতে থাকেন।

প্রভু গণেশ সঙ্গে সঙ্গে বুঝতে পারেন, রূপের গর্বে গর্বিত চন্দ্রদেব তাঁকে নিয়ে উপহাস করছেন। এর ফলে প্রভু গণেশ অত্যন্ত কুপিত হন ও চন্দ্রদেবকে অভিশাপ দেন— চন্দ্রদেবের রূপে ছটা অন্তর্হিত হবে তিনি সম্পূর্ণরূপে কালো হয়ে যাবেন। এখানেই শেষ নয়, গণেশ চতুর্থীতে গজাননের পুজোর সময় যে ব্যক্তি চন্দ্রদেবের দিকে তাকাবেন তাকেও কলঙ্কের বোঝা বইতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে চন্দ্রদেবের গাত্রবর্ণ কালো হয়ে যায়। চন্দ্রদেব অনুধাবন করেন তিনি প্রভু গণেশের ক্ষমতা সম্পর্কে ভ্রান্ত ছিলেন। তিনি সত্যিই একটা বড় ভুল করে ফেলেছেন। অনুতপ্ত চন্দ্রদেব এরপর প্রভু গণেশের কাছে ক্ষমা চান ও বারংবার অভিশাপ ফিরিয়ে নেওয়ার কথা বলতে থাকেন। প্রভু গণেশ চন্দ্রদেবের কাতর অনুরোধে নরম হন ও বলেন— শাপ ফিরিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। তবে মাসে একবার করে পূর্ণরূপে চন্দ্রদেব ফিরে আসবেন। তবে বাকিসবদিন তাঁর রং ধীরে ধীরে কালো হতে থাকবে। এই কারণেই পূর্ণিমার দিন পূর্ণরূপে আমরা চন্দ্রকে দেখতে পাই বলে কথিত রয়েছে। এই কারণেই গণেশ চুতর্থীর দিন চাঁদের দিকে তাকাতে নেই বলে কথিত আছে।

জানা যায় শ্রীকৃষ্ণ একবার গণেশ চতুর্থীর দিন চন্দ্রদর্শনের দোষে দুষ্ট হয়েছিলেন। পুরাণ অনুসারে এই কারণে কৃষ্ণের উপর স্যমন্তক মণি চুরির মিতা অপবাদ পড়েছিল। তখন নারদমুনি তাঁকে মনে করান যে গণেশ চতুর্থীতে চাঁদ দেখার জন্যই তাঁর উপর এই কলঙ্কের বোঝা নেমে এসেছে।

অতএব কোনও ব্যক্তি যদি ভুল করে গণেশ চতুর্থীতে চাঁদের দিকে তাকিয়ে ফেলেন তাহলে তাঁর উচিত এক বিশেষ মন্ত্র জপ করা—

‘ওম সিংহঃ‌ প্রসেনমবধিত সিংহ জাম্ববতা হতঃ। সুকুমারাক মা রোদস্তব হেশ্য শ্যামন্তক।’

এই মন্ত্রটি অন্তত ১৬ বার গণেশের সামনে নতমস্তকে পাঠ করবেন ও বলবেন এই ভুল আর কখনও হবে না।