Sankranti 2022: সংক্রান্তির দিন বিউলির ডালের খিচুড়ি খাওয়ার রীতি কীভাবে শুরু হয়েছিল জানেন?

বাড়িতে খিচুড়ি তৈরি করা ছাড়াও সংক্রান্তির সময় বহু জায়গায় খিচুড়ি বিতরণ করা হয়। মনে করা হয়, সংক্রান্তির শুভ দিনে খিচুড়ি বিতরণ করলে সূর্য এবং শনিদেব উভয়ের আশীর্বাদ পাওয়া যায়।

Sankranti 2022: সংক্রান্তির দিন বিউলির ডালের খিচুড়ি খাওয়ার রীতি কীভাবে শুরু হয়েছিল জানেন?
মকর সংক্রান্তিতে খিচুড়ি খাওয়ার চল রয়েছে ভারতে।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 07, 2022 | 1:58 PM

মকর সংক্রান্তি হল ফসল কাটার উৎসব যা সূর্যের অবস্থান পরিবর্তনের দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। এ বছর সারা ভারতজুড়ে ১৪ জানুয়ারি মকর সংক্রান্তি উত্‍সব পালন করা হবে। সূর্য মকর রাশিতে প্রবেশ করে (হিন্দি এবং সংস্কৃতে মকর) এবং তার উত্তরমুখী যাত্রা শুরু করে, যাকে সংস্কৃতে উত্তরায়ণ বলা হয়। বছরের শেষ ত্রৈমাসিকে, যখন সূর্য দক্ষিণ দিকে যাত্রা করে, তখন সীমিত সূর্যালোক এবং কঠোর আবহাওয়ার কারণে ফসল কাটার কাজ পিছিয়ে যায়। এই কারণেই যখন সূর্য উত্তর দিকে যাত্রা শুরু করে, তখন এটি শুধুমাত্র কৃষিজীবী সম্প্রদায়ের জন্য নয়, পুরো দেশের জন্য একটি উদযাপন উপলক্ষ করে তোলে।

মকর সংক্রান্তি উদযাপনের পাশাপাশি অন্যান্য আঞ্চলিক বৈচিত্রের সঙ্গে ফসল কাটার উৎসবের সাথে মিলে যায়। পঞ্জাবের লোহরি, তামিলনাড়ুর পোঙ্গল এবং অসমের ভোগালি বিহু হল ফসল কাটার উৎসব যা এই সময়ে ঘটে যাওয়া একটি ঋতুতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনকে চিহ্নিত করে। আনন্দ উদযাপন করতে, বিভিন্ন খাবার প্রস্তুত করা হয় এই সময়। এই সময় বিউলির ডালের খিচুড়ি খাওয়ারও একটি রীতি রয়েছে ভারতে।

বাড়িতে খিচুড়ি তৈরি করা ছাড়াও সংক্রান্তির সময় বহু জায়গায় খিচুড়ি বিতরণ করা হয়। মনে করা হয়, সংক্রান্তির শুভ দিনে খিচুড়ি বিতরণ করলে সূর্য এবং শনিদেব উভয়ের আশীর্বাদ পাওয়া যায়। এই কারণে উত্তরপ্রদেশের বহু জায়গায় সংক্রান্তি খিচুড়ি উৎসব নামেও পরিচিত। চলুন জেনে নেওয়া সংক্রান্তির শুভ দিনে খিচুড়ির তাৎপর্য সম্পর্কে।

কথিত আছে, বাবা গোরক্ষনাথের সময় থেকেই মকর সংক্রান্তির দিনে ভারতে খিচুড়ি তৈরির প্রচলন শুরু হয়। কথিত আছে যে, খিলজি যখন আক্রমণ করত, তখন নাথ যোগীরা যুদ্ধের সময় খাবার তৈরির সময় পেত না এবং তাঁরা ক্ষুধার্ত অবস্থায় যুদ্ধে রওনা দিত। তখন বাবা গোরক্ষনাথ ডাল, ভাত ও সবজিকে একসঙ্গে রান্না করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। এটা চটজলদি প্রস্তুত হয়ে যায় এবং এতে যোগীদের পেট ভরত। তাছাড়া খিচুড়ি অত্যন্ত পুষ্টিকর খাদ্য।

বাবা গোরক্ষনাথ এই খাবারের নাম দেন খিচুড়ি। খিলজির হাত থেকে মুক্ত পাওয়ার পর যোগীরা মকর সংক্রান্তি উদযাপন করেন এবং সেদিন খিচুড়ি বিতরণ করেন। সেই থেকে মকর সংক্রান্তিতে খিচুড়ি তৈরির প্রচলন শুরু হয়। মকর সংক্রান্তির দিন নতুন যে চাল, ডাল ও সবজি ওঠে, সেটা দিয়েই রন্ধিত হয় খিচুড়ি। এবং সেটি ভোগ হিসাবে উৎসর্গ করা হয় বাবা গোরক্ষনাথকে। এই উপলক্ষে উত্তরপ্রদেশের গোরখপুরের বাবা গোরক্ষনাথ মন্দিরে খিচুড়ি মেলারও আয়োজন করা হয়। সেখানে ভক্তদের খিচুড়ি বিতরণ করা হয়।

এছাড়াও কথিত আছে, মকর সংক্রান্তির দিন সূর্য দেবতা তাঁর পুত্র শনির বাড়িতে আসেন। জ্যোতিষশাস্ত্রে বিউলির ডালকে শনি গ্রহের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে মনে করা হয়। এমন অবস্থায় বিউলির ডালের খিচুড়ি খেলে শনিদেব ও সূর্যদেব উভয়ের আশীর্বাদ পাওয়া যায়। এছাড়া চালকে চন্দ্রের কারক, লবণকে শুক্র, হলুদ বৃহস্পতির এবং সবুজ শাকসবজিকে বুধের কারক ধরা হয়। একই সঙ্গে খিচুড়ির তাপের সঙ্গে এর সম্পর্ক মঙ্গল গ্রহের। এভাবে মকর সংক্রান্তির দিনে খিচুড়ি খেলে কুণ্ডলীর প্রায় সব গ্রহের অবস্থানের উন্নতি ঘটে।

আরও পড়ুন: সংক্রান্তিতে তিল ও গুড়ের ব্যবহার কেন গুরুত্বপূর্ণ, জানেন?