KKR: কেকেআরে বাতিল হলেই কি কপাল খোলে? তালিকায় কে কে আছে জানেন?
Team India: কেকেআর অবশ্য নতুন তারকার জন্ম বছরের পর বছর দিয়ে আসছে। বেগুনি জার্সির হয়ে দারুণ খেলার জন্য বেঙ্কটেশ আইয়ার, কুলদীপ যাদব, প্রসিধ কৃষ্ণা, নীতিশ রানার মতো ক্রিকেটাররা ভারতীয় টিমে সুযোগ পেয়েছেন। ভারতীয় টিম থেকে বাদ পড়ার পর কেউ কেউ এই টিম থেকেই প্রত্যাবর্তন করেছেন জাতীয় দলে।
কলকাতা: ২০০৮ সালে আইপিএল (IPL) শুরু হয়েছিল। তারপর থেকে ভারতীয় টিমে (Team India) পা রাখার ক্ষেত্রে আইপিএল একটা বড় মঞ্চ হয়ে গিয়েছে। এই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে ভালো পারফর্ম করতে পারলে সরাসরি নির্বাচকদের চোখে পড়ে যাওয়ার সুযোগ মেলে। রঞ্জি ট্রফিতে সে ভাবে নিজেকে মেলে ধরতে না পারলেও ক্ষতি নেই। আইপিএলে পারফর্ম করতে পারলে ভারতের হয়ে টি-টোয়েন্টি খেলার সুযোগ এসে যায়। দেশের হয়ে কুড়ি-বিশের ক্রিকেটে আবার সেরাটা দিতে পারলে ওয়ান ডে টিমেও ঢুকে পড়ার সুযোগ মেলে। তাই আইপিএল গত পনেরো বছর ধরে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্ট হয়ে গিয়েছে তরুণদের কাছে। আইপিএলের টিমগুলোও তরুণ ক্রিকেটারদের তুলে এনে সাফল্যের মঞ্চে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। কিন্তু ভারতীয় টিমের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের দিকে তাকালে একটাই প্রশ্ন বড় হয়ে দেখা দেবে, কলকাতা নাইট রাইডার্স (KKR) ছাড়লে তবেই কি সাফল্য মেলে? কেকেআর থেকে অন্য টিমে গিয়ে সফল হয়েছেন, এমন তালিকা কিন্তু খুব একটা ছোট নয়। কারা আছেন এই তালিকায়, তুলে ধরল TV9 Bangla।
কেকেআর অবশ্য নতুন তারকার জন্ম বছরের পর বছর দিয়ে আসছে। বেগুনি জার্সির হয়ে দারুণ খেলার জন্য বেঙ্কটেশ আইয়ার, কুলদীপ যাদব, প্রসিধ কৃষ্ণা, নীতিশ রানার মতো ক্রিকেটাররা ভারতীয় টিমে সুযোগ পেয়েছেন। ভারতীয় টিম থেকে বাদ পড়ার পর কেউ কেউ এই টিম থেকেই প্রত্যাবর্তন করেছেন জাতীয় দলে। যেমন রবিন উত্থাপ্পা, লক্ষ্মীপতি বালাজি, উমেশ যাদবরা। আসলে আইপিএলের যে কোনও টিমই তার প্লেয়ারদের উত্থানে কিছু না কিছু ভূমিকা রাখে। কেকেআর নিশ্চিত ভাবেই প্রথম তিনে থাকবে। আবার কিছু প্লেয়ারকে ধরে না রাখার মতো বোকামিও করেছে এই টিমের ম্যানেজমেন্ট। সেই প্লেয়াররাই অন্য টিমে গিয়ে দুরন্ত পারফর্ম করেছেন। টিমকে চ্যাম্পিয়ন করেছেন। এমনকি, জাতীয় দলে ঢুকেও পড়েছেন। শুধু তাই নয়, ভারতীয় টিমের হয়ে অবিস্মরণীয় পারফর্মও করেছেন। সেই কারণেই কেকেআরের ম্যানেজমেন্টকে নিয়ে ওঠে প্রশ্ন। কোন ক্রিকেটারের ভবিষ্যৎ কতটা উজ্জ্বল, তা বুঝতে না পারার কারণেই কিন্তু ভুগতে হয় কেকেআরকে। আর একবার তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।
ভারতীয় টিমে এই মুহূর্তে সবচেয়ে আলোচিত না শুভমন গিল। তিন ধরনের ক্রিকেটেই নিজেকে সাফল্যের শিখরে তুলে নিয়ে গিয়েছেন। টেস্টের পাশাপাশি ওয়ান ডে ও টি-টোয়েন্টিতেও সেঞ্চুরি করেছেন। তিন ধরনের ক্রিকেটে সেঞ্চুরি করার কৃতিত্ব ভারতীয় ক্রিকেটে খুব বেশি নেই। আর তাই শুভমনকে নিয়ে চলছে হইচই। তিন ফর্ম্যাটেই ওপেনার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছেন। বিরাট কোহলির মতো ক্রিকেটার পর্যন্ত বলেছেন, শুভমনই ভবিষ্যৎ ভারতীয় ক্রিকেটের। এই শুভমন যে এমন বিস্ফোরক ক্রিকেট খেলতে পারেন, তা কি বুঝতে পারেনি কেকেআর?
২০১৮ সালে অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে ভারতকে চ্যাম্পিয়ন করার পর শুভমনকে নিয়েছিল কেকেআর। চার বছর তিনি বেগুনি জার্সির হয়ে খেলেছেন। নিজেকে প্রমাণ করতেও কোনও কার্পণ্য রাখেননি। কেকেআরের হয়ে ৫৫টা ইনিংস খেলে করেছেন ১১৪৭ রান। সেই তাঁকে ২০২২ সালের আইপিএলের জন্য আর রিটেইন করেনি কেকেআর। গুজরাত টাইটান্স তাঁকে নিয়ে নেয়। সিদ্ধান্ত যে ভুল ছিল না, তা প্রমাণও করে দিয়েছেন। গুজরাতকে আইপিএল চ্যাম্পিয়ন করেছেন গত বার। হার্দিক পান্ডিয়ার টিমের হয়ে দুরন্ত ফর্মে থাকাটাই তাঁর আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছিল। তারই সুফল পাচ্ছেন শুভমন।
শুধু শুভমনই নন, বাতিলের তালিকায় সূর্যকুমার যাদবের মতো ক্রিকেটার। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সে কেরিয়ার শুরু করলেও সে ভাবে ছাপ রাখতে পারেননি শুরুর দিকে। যে কারণে মুম্বই ছেড়ে কলকাতায় পা রাখেন সূর্য। বেগুনি জার্সির হয়ে নিজেকে মেলে ধরেছিলেন। ফিনিশার হিসেবে আত্মপ্রকাশ হয়। তবু ভারতীয় টিমে জায়গা পাচ্ছিলেন না। কেকেআর থেকে মুম্বইয়ে ফিরতেই ভাগ্যের সূর্যোদয় দেখতে পান সূর্য। সেই সূর্যই এখন তেজ দেখাচ্ছেন সারা বিশ্বে।
শুভমন, সূর্যের পাশাপাশি রাহুল ত্রিপাঠীকেও রাখতে হবে তালিকায়। ২০১৭ সালে রাইজ়িং সুপার জায়ান্টসের হয়ে চমৎকার পারফর্ম করার পর নজরে পড়েন তিনি। রাজস্থান রয়্যালস ঘুরে কেকেআরে পা দিয়েছিলেন ২০২০ সালে। পরের ২টো বছরে যথেষ্ট ভালো পারফর্ম করেছেন। কিন্তু সেই রাহুলকে শুভমনের মতোই গত বছরের আইপিএল টিমে রাখেনি কেকেআর। গত বছর সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে দুরন্ত পারফর্ম করেছেন রাহুল। ভারতীয় টিমেও ঢুকে পড়েন তিনি।
শুভমন, সূর্য, রাহুলদের মতো কি আগামী দিনেও কেকেআরের ছেড়ে দেওয়া কোনও ক্রিকেটার সাফল্য পেয়ে যাবেন?