BCCI Selection Committee sacked: টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ব্যর্থতার জের! নির্বাচন কমিটিকে বরখাস্ত করল বিসিসিআই
BCCI: সিনিয়র দল নির্বাচন কমিটির প্রধান চেতন শর্মা সহ সকলকেই বরখাস্ত করল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড।
নয়াদিল্লি : টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে (T20 World Cup 2022) সেমিফাইনালেই বিদায়। আইসিসি টুর্নামেন্টে ব্যর্থতার ধারা এ বারও জারি। সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের কাছে ১০ উইকেটে লজ্জার হার। এর জেরেই নেমে এল শাস্তির খাড়া! সিনিয়র দল নির্বাচন কমিটির প্রধান চেতন শর্মা (Chetan Sharma) সহ সকলকেই বরখাস্ত করল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (BCCI)। দ্বিপাক্ষিক সিরিজে ভারতের পারফরম্যান্স ভালো। কিন্তু আইসিসি কিংবা মাল্টিনেশন টুর্নামেন্ট হলেই সব ওলটপালট হয়ে যায়। এ বারও তার অন্যথা হল না। ভারতের মতো শক্তিশালী দল এশিয়া কাপের ফাইনালে যেতেও ব্যর্থ হয়েছে। এরপর বিশ্বকাপের ধাক্কা। অদ্ভুত সব সিদ্ধান্ত নিতে দেখা গিয়েছে নির্বাচন কমিটিকে। বিস্তারিত তুলে ধরল TV9Bangla।
শেষ বার ২০১৩ সালে আইসিসি-র কোনও টুর্নামেন্ট জিতেছিল ভারত। মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়। এরপর থেকে সেমিফাইনাল, ফাইনাল অবধিই আটকে থেকেছে ভারত। যার জেরেই এমন অভাবনীয় সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হল বোর্ড। চেতন শর্মার নেতৃত্বে দল নির্বাচন কমিটিতে ছিলেন হরবিন্দর সিং, সুনীল যোশী, দেবাশিস মোহান্তি। ওয়েস্ট জোন থেকে কোনও প্রতিনিধি ছিলেন না। সাম্প্রতিক সময়ের নিরিখে বলা যায়, এত কম সময়ের মধ্যে নির্বাচন কমিটিই বরখাস্ত করা দেখা যায়নি। এই কমিটির কেউ বা ২০২০তে এসেছেন, অনেকে ২০২১ এ। ভারতীয় ক্রিকেটের চেহারা বদলায়নি। সিনিয়র দল নির্বাচকের অন্তত চার বছরের মেয়াদ থাকে। বিসিসিআইয়ের গত বার্ষিক সাধারণ সভাতেই কার্যত রূপরেখা তৈরি হয়েছিল যে, এই কমিটিকে রাখা হবে না।
চেতন শর্মার কমিটির সময় কালেই ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম রাউন্ডের বাধাই টপকাতে পারেনি ভারত। এরপর এক বছর ধরে নানা পরীক্ষা হয়েছে। লক্ষ্য ছিল ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। একঝাঁক কম্বিনেশন, ভিন্ন সিরিজে নেতৃত্বে বদল। কোনও প্লেয়ারেরই স্থান যেন নিরাপদ ছিল না। হাতে গোনা কয়েকজন ছাড়া একের পর এক বদল হয়েছে। প্লেয়ারদের ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টেও ব্যর্থতা ধরা পড়েছে। চোটের কারণে জসপ্রীত বুমরাকে এশিয়া কাপে খেলানো হয়নি। ছিলেন না হর্ষল প্যাটেলও। বুমরার মতো প্লেয়ার না থাকা সত্ত্বেও মহম্মদ সামিকে সুযোগ দেওয়া হয়নি। ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে ২০২২। মাঝের এক বছরে দেশের হয়ে টি-টোয়েন্টি ফর্ম্যাটে সুযোগ দেওয়া হয়নি মহম্মদ সামিকে। এ বারের বিশ্বকাপের স্কোয়াডে তাঁকে স্ট্যান্ড বাইতেই রাখা হয়। এশিয়া কাপে ব্যর্থতার জেরে তড়িঘড়ি বুমরা, হর্ষলকে দলে ফেরানো হয়। যদিও ঘরের মাঠে দুই ম্যাচ খেলেই ফের চোটের কবলে বুমরা। বিশ্বকাপ থেকেও ছিঁটকে যান। সারা বছর টি-টোয়েন্টিতে না খেলানো সিনিয়র বোলার সামিকে সরাসরি বিশ্বকাপে খেলতে হয়।
চেতন শর্মার এই নির্বাচন কমিটির সময়ে ভারতীয় ক্রিকেটে নানা বিতর্ক দেখা দিয়েছে। বিরাট কোহলি পর্বই যেমন। টি-টোয়েন্টি ফর্ম্যাট থেকে নেতৃত্ব ছাড়ার ঘোষণা করেছিলেন বিরাট। চেয়েছিলেন টেস্ট এবং ওয়ান ডে-তে নেতৃত্ব চালিয়ে যাবেন। হঠাৎই দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের দল ঘোষণার সময় ওয়ান ডে নেতৃত্ব থেকে সরানো হয় বিরাটকে। নির্বাচক প্রধান দাবি করেছিলেন, বিরাটের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। যদিও বিরাট পাল্টা দাবি করেন, তাঁকে দল নির্বাচনী সভার দেড় ঘণ্টা আগে জানানো হয়েছিল। দল বাছাই থেকে শুরু করে স্বচ্ছতা। সব বিষয়েই ধোঁয়াশা থেকেছে। নির্বাচক প্রধান সাংবাদিক সম্মেলনও করেছেন হাতে গোনা। বিশ্বকাপের মাঝেই নিউজিল্যান্ড এবং বাংলাদেশ সফরের স্কোয়াড ঘোষণা হয়। যেখানে বেশ কিছু প্রশ্নে তাঁকে চরম অস্বস্তিতে দেখায়। নিউজিল্যান্ড সফরে কেন রোহিত, বিরাট, রাহুলদের বিশ্রাম দেওয়া হল, অথচ স্কোয়াডের অন্যান্যরা সুযোগ পেলেন! কত ম্যাচের পর ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টের বিশ্রাম প্রয়োজন, এর কোনও জবাব ছিল না তাঁর কাছে। এই কমিটিকে বরখাস্ত করার পাশাপাশি ইতিমধ্যেই বোর্ডের পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনও দেওয়া হয়েছে। ২৮ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচক পদের জন্য আবেদন করা যাবে। শর্তাবলী সহ যাবতীয় তথ্য ওয়েবসাইটে দিয়েছে বোর্ড।