India vs Pakistan Retro Story: হরভজন কোথায়? ভাজ্জিকে পেটাতে হোটেলের কামরায় পৌঁছে গিয়েছিলেন শোয়েব!

বাইশ গজে ভারত-পাকিস্তান লড়াই কি শুধুই মাঠেই সীমাবদ্ধ? একেবারেই নয়। এমন উদারহণ পাওয়া যাবে ভুরি ভুরি। মাঠের লড়াই ছাপিয়ে এই ম্যাচ মর্যাদার লড়াই। স্লেজিং, বাদানুবাদ, ধাক্কাধাক্কি পর্যন্ত ঠিক ছিল। তা বলে ভারতীয় ক্রিকেটারের উপর খাপ্পা হয়ে হোটেল পর্যন্ত ধাওয়া করবেন?

India vs Pakistan Retro Story: হরভজন কোথায়? ভাজ্জিকে পেটাতে হোটেলের কামরায় পৌঁছে গিয়েছিলেন শোয়েব!
ক্রিকেটের মহারণ
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 17, 2022 | 10:00 PM

২৮ অগাস্ট ফের ভারত-পাক মহারণ। এশিয়া কাপের ওই উত্তেজক ম্যাচের কথা মাথায় রেখে এই দুই দেশের ক্রিকেট ইতিহাস থেকে বাছাই করা কিছু ঘটনা তুলে ধরল TV9 Bangla। ২০১০ এশিয়া কাপের হরভজন সিং ও শোয়েব আখতারের মধ্যে বাদানুবাদের জল গড়িয়েছিল অনেকদূর। কী ঘটেছিল সেদিন? শোনালেন তিথিমালা মাজী। আজ চতুর্থ কিস্তি।

পাগড়ি পরিহিত সর্দারের সিংহনাদ সব কিছুকে ছাপিয়ে যাচ্ছিল। হেলমেট খুলে হাওয়ায় দু’হাত ছড়িয়ে দিলেন। নন স্ট্রাইকার এন্ড থেকে প্রবীণ কুমার ছুটে এসে জাপটে ধরতে গর্জনের মাত্রা বেড়ে গেল কয়েকগুণ। এমন উল্লাসের কারণ অবশ্য রয়েছে। পাকিস্তানের বাঁ হাতি পেসার মহম্মদ আমিরকে মিড উইকেটের উপর দিয়ে যখন পেল্লাই ছক্কা হাঁকিয়েছেন হরভজন সিং। তখন জয়ের জন্য ভারতের প্রয়োজন ছিল ২ বলে ৩ রান। দলকে জিতিয়ে শোয়েব আখতারের দিকে ঘুরে মুষ্টিবদ্ধ হাত বারে বারে ছুঁড়ে দিচ্ছিলেন হরভজন। শোয়েবও হাতের ইশারায় ভাজ্জিকে সাজঘরের দিকে যাওয়ার ইঙ্গিত করলেন। শেষ ওভারের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত দুই ক্রিকেটারের মধ্যে কথা কাটাকাটিতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল পরিবেশ। যার শেষ হল ভারতের জয় দিয়ে। ম্যাচ শেষে সৌজন্যের খাতিরে ভাজ্জি ও শোয়েব দু’জনেই হাত মেলালেন। এই দৃশ্য দেখে যদি ভেবে থাকেন, মাঠের লড়াই মাঠেই শেষ, তা হলে ভুল করবেন। এরপরের ঘটনা আরও টানটান।

২০১০ সালের এশিয়া কাপের আসর বসেছিল শ্রীলঙ্কায়। মার্চ মাসের গরমে রঙ্গগিরি ডাম্বুলা স্টেডিয়ামের উষ্ণতা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছিল ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথ। মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বাধীন ভারতকে ২৬৮ রানে লক্ষ্য দেয় পাকিস্তান। ম্যাচে ওপেনার গৌতম গম্ভীর, ক্যাপ্টেন ধোনি অর্ধশতরান করলেন। একটা সময় জয়ের জন্য ভারতের প্রয়োজন ছিল ২৪ বলে ৩৬ রান। ক্রিজে সুরেশ রায়না ও হরভজন সিং। ৪৭তম ওভারে বল করতে আসেন শোয়েব আখতার। দ্রুত রান তোলা প্রয়োজন। ওভারের দ্বিতীয় বলটাই লং অনের উপর দিয়ে বাউন্ডারির বাইরে ফেললেন ভাজ্জি। ব্যাস, আর যায় কোথায়! ছক্কা হজম করে রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস হরভজনের পাঁজর লক্ষ্য করে বাউন্সার দেওয়া শুরু করেন। একই সঙ্গে চলল বাক্যবাণ। পাক পঞ্জাবের রাওয়ালপিন্ডির ছেলে শোয়েবের মুখ থেকে দেশীয় ভাষায় বেরল চোখা চোখা বাণ। ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নন ভাজ্জিও। পঞ্জাবি ভাষায় উত্তপ্ত কথোপকথন বাকিদের মাথায় না ঢুকলেও কথার লড়াই চলে শেষ ওভারের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত। ১১ বলে ১৫ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস ইনিংস খেলে শেষ হাসি হাসেন হরভজনই। ৩ উইকেটে ম্যাচ জিতে যায় ভারত।

সবাই ভেবেছিল মাঠের লড়াই মাঠেই শেষ হয়েছে। দুটি দলের ক্রিকেটাররা সাজঘরে ফিরে গিয়েছেন। ভারতীয় দলের ড্রেসিংরুমে উচ্ছ্বাস, সবুজ বাহিনীদের সাজঘরে সাময়িক নিস্তব্ধতা। শেষ কয়েকটি ওভারে মাঠের উত্তেজনার কথা ভুলে যাওয়ারই কথা। উত্তেজক ম্যাচে অমন ঘটনা অনেকসময়ই ঘটে। ভুলতে পারেননি শোয়েব। ঘরের এক কোনায় বসে তখনও ফুঁসে যাচ্ছিলেন। আজই একটা এসপার ওসপার করে ফেলতে হবে। মাঝখানে কাঁটাতারের বেড়া থাকলেও হরভজনকে পঞ্জাবি ভাই বলে ভাবেন শোয়েব। লাহোরে দু’জন মিলে একসঙ্গে ঘুরেছেন, খেয়েছেন। তাই ভাজ্জির ব্যবহার মেনে নিতে পারেননি। দিকবিদিকজ্ঞানশূন্য হয়ে রাতের বেলায় হরভজনকে মারার জন্য হোটেলে পৌঁছে যান! শোয়েব আসছে, সেখবর হরভজনের কাছে আগেই ছিল। হাট্টাগোট্টা চেহারা পাক পেসারের সঙ্গে কোনওদিক থেকেই যে পেরে উঠবেন না তা জানতেন খুব ভালোমতো। তাই আগেই লুকিয়ে পড়েছিলেন। হরভজনকে খুঁজে না পেয়ে মাথা ঠান্ডা হয় শোয়েবের। ফিরে যান নিজের হোটেল রুমে।

ওই ঘটনার পরও দুই দেশের তারকা ক্রিকেটারের মধ্যে সু সম্পর্কে ছেদ পড়েনি। মাঠের বাইরে দু’জনের মধ্যে বন্ধুত্ব অটুট রয়েছে। অবসরের পর প্রচুর টিভি শোয়ে একসঙ্গে কাজ করেছেন। গতবছর নিজের ইউটিউব চ্যানেলে হরভজনকে আমন্ত্রণ জানান পাক কিংবদন্তি।