India vs Pakistan Retro Story: কুম্বলের ১০ উইকেটের নজির আটকাতে ‘পাক ষড়যন্ত্র’, রান আউট হতে চেয়েছিলেন ওয়াকার!

ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হতে বেঁচেছিলেন অনিল কুম্বলে। তাঁর এক ইনিংসে ১০ উইকেটের কীর্তি ভেস্তে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন পাক ক্রিকেটাররা!

India vs Pakistan Retro Story: কুম্বলের ১০ উইকেটের নজির আটকাতে 'পাক ষড়যন্ত্র', রান আউট হতে চেয়েছিলেন ওয়াকার!
ক্রিকেটের মহারণ
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 19, 2022 | 8:00 PM

২৮ অগাস্ট ফের ভারত-পাক মহারণ। এশিয়া কাপে ভারত-পাক (India vs Pakistan) মহারণের কথা মাথায় রেখে এই দুই দেশের ক্রিকেট ইতিহাস থেকে বাছাই করা কিছু ঘটনা তুলে ধরল TV9 Bangla। ১৯৯৯ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১০ উইকেট একাই সাবাড় করেছিলেন অনিল কুম্বলে। জানেন কি, কুম্বলের নজির আটকাতে কোটলার বাইশ গজে ষড়যন্ত্রে সামিল হয়েছিল পাক ক্রিকেটাররা। কী ঘটেছিল সেদিন? সেই গল্প শোনালেন তিথিমালা মাজী। আজ ষষ্ঠ কিস্তি

সঈদ আনোয়ার, শাহিদ আফ্রিদি, ইনজামাম-উল-হক, মহম্মদ ইউসুফ, সেলিম মালিক, ওয়াসিম আক্রম, সাকলায়েন মুস্তাক, ওয়াকার ইউনিস…আরও কত নাম। এমনই তারকাখচিত দল নিয়ে ভারত সফরে এসেছিল পাকিস্তান। পাহাড়প্রমাণ চাপ, প্রত্যাশা, স্নায়ুর চাপ কি শুধু মাঠে খেলতে নামা ১১ জন খেলোয়াড়ের? উত্তেজনা এ দেশের প্রতিটি বাড়ির ড্রয়িংরুমে, প্রতিটি গলিতে, ক্লাবে, চায়ের আসরে। ইতিহাস গড়ার আদর্শ পরিবেশ। এমন পরিস্থিতিতেই তো নজির গড়া হয়। ভারতীয় দলের লম্বা, গোঁফওয়ালা, রোগাপাতলা, শ্যামবর্ণ চেহারার ছেলেটি ছিলেন সেদিনের ইতিহাস গড়ার কারিগর। ১৯৯৯ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি। নতুন বছরের দ্বিতীয় মাসের প্রথম সপ্তাহে দিল্লিবাসীর একটু উষ্ণতার প্রয়োজন ছিল। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ফিরোজ শাহ কোটলায় (বর্তমানে অরুণ জেটলি স্টেডিয়াম) পাঁচদিন ধরে চলা ভারত-পাকিস্তান টেস্টের উত্তেজনা তার কিছুটা জোগান দিয়েছিল। প্রতিবেদন শুরুর দিকে যে কটি নাম রয়েছে তাঁদের একার হাতে প্যাভিলিয়নে পাঠিয়েছিলেন অনিল কুম্বলে। কিন্তু জানেন কি, কোটলায় দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে কুম্বলের ১০ উইকেটের নজির গড়া ভেস্তে যেতে বসেছিল পাক ক্রিকেটারদের ষড়যন্ত্রে!

দ্বিতীয় ইনিংসে পাকিস্তানের সামনে ছিল ৪২০ রানের লক্ষ্য। সইদ আনোয়ার এবং শাহিদ আফ্রিদির ১০১ রানের পার্টনারশিপের পর মনে হচ্ছিল এ যাত্রায় টেস্ট বাঁচিয়ে ফেলবে পাকিস্তান। কুম্বলে ঝড় আছড়ে পড়েছিল তারপরই। আফ্রিদি আউট হতেই যেন সব প্রতিরোধ ভেঙে পড়ল। একে একে প্যাভিলিয়নের পথ ধরলেন ইজাজ, ইনজামাম, ইউসুফ, আনেয়ার, মইন, সেলিম মালিক। চা বিরতির পরও চলে কুম্বলে জাদু। এক ওভারের পরপর দুটি বলে মুস্তাক আহমেদ এবং সাকলায়েনকে সাজঘরে ফেরত পাঠান জাম্বো। ঝুলিতে ৯টা উইকেট। গোটা স্টেডিয়াম উত্তেজনায় কাঁপছে। বিরল মুহূর্তের অপেক্ষায় ভারতীয় দলের ক্রিকেটাররা। এক ইনিংসে ‘পারফেক্ট টেন’-এর নজির গড় তখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। ওই একটা দিন উইকেট না নেওয়ার জন্য মাঠে নেমেছিলেন জাভাগল শ্রীনাথ।

ক্রিজে তখন ব্যাট করছেন ওয়াসিম আক্রম ও ওয়াকার ইউনিস। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দল তাঁদেরই বিরুদ্ধে নজির গড়বে সেটা কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলেন না ওয়াকার। কুম্বলেকে নিয়ে এত হইচই, বিপক্ষ দলের আনন্দকে মাঠে মারার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। মাথার মধ্যে দুষ্টু বুদ্ধি যেন কিলবিল করছিল। ষড়যন্ত্রের বাস্তবায়ন তো একা করা যায় না। তাই সামিল করতে চাইলেন উইকেটে থাকা আরও এক ফাস্ট বোলার ওয়াসিম আক্রমকে। তাঁর দিকে এগিয়ে এসে ওয়াকার বলেন, “রান আউট হয়ে যাই। কুম্বলেকে কিছুতেই ১০ উইকেট নিতে দেওয়া যাবে না!” নিজের নাক কেটে পরের যাত্রাভঙ্গের মতো অবস্থা! পরে একটি সাক্ষাৎকারে আক্রমের দাবি করেন, তিনি এই প্রস্তাবে রাজি হননি। সতীর্থকে বুঝিয়ে বলেছিলেন, “এমনটা করা মানে খেলোয়াড়ী সুলভ মনোভাবে আঘাত হানা। তুমি স্বাভাবিক ক্রিকেট খেলো। আমি কিছুতেই কুম্বলেকে আমার উইকেট দেব না।” কুম্বলেকে শেষ পর্যন্ত উইকেট দিয়ে এসেছিলেন আক্রমই। ১১তম খেলোয়াড় হওয়ায় সে যাত্রা জাম্বোর হাত থেকে রক্ষা পান ‘ষড়যন্ত্রকারী’ ওয়াকার ইউনিস।