India vs South Africa: স্পিনত্রয়ীর দাপট, ২-১ ওয়ান ডে সিরিজ জিতল টিম ইন্ডিয়া
দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে সিরিজের নির্ণায়ক ম্যাচে দেখা গেল ভারতীয় স্পিনত্রয়ীর দাপট।
নয়াদিল্লি: দক্ষিণ আফ্রিকার (South Africa) বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে টি-২০ সিরিজের পর, একদিনের সিরিজেও ২-১ ব্যবধানে জিতল ভারত (India)। দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে সিরিজের নির্ণায়ক ম্যাচে দেখা গেল ভারতীয় স্পিনত্রয়ীর দাপট। প্রোটিয়াদের আটটি উইকেট নিয়েছেন ভারতের তিন স্পিনার কুলদীপ যাদব (Kuldeep Yadav) (৪/১৮), ওয়াশিংটন সুন্দর (২/১৫) এবং শাহবাজ আহমেদ (২/৩২)। বাকি ২টি উইকেট গিয়েছে তারকা পেসার মহম্মদ সিরাজের (২/১৭) খাতায়। স্কোরবোর্ডে চোখ রাখলে দেখা যায়, দক্ষিণ আফ্রিকার মাত্র তিন জন ক্রিকেটার দুই অঙ্কের রানে পৌঁছতে পেরেছেন। ২৭.১ ওভারে ৯৯ রানে গুটিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ভারতের বিরুদ্ধে একদিনের ক্রিকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার এটাই সর্বনিম্ন রান। ভারতীয় বোলাররা তাঁদের কাজ দায়িত্ব সহকারে করে যান। এরপর ম্যাচ জিতে, সিরিজ ভারতের নামে করার দায়িত্ব গিয়ে দাঁড়ায় ব্যাটারদের কাঁধে। সহজেই সেই দায়িত্ব পূর্ণ করলেন শুভমন গিল-শ্রেয়স আইয়াররা।
ভারত ১০৫-৩ (১৯.১ ওভার)
দক্ষিণ আফ্রিকা ৯৯ (২৭.১ ওভারে)
তিন ম্য়াচের ওয়ান ডে সিরিজের নির্ণায়ক ম্যাচে টসে জিতে শুরুতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ব্য়াট করতে পাঠিয়েছিলেন ভারত অধিনায়ক শিখর ধাওয়ান। শুরু থেকেই প্রোটিয়াদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন ভারতীয় বোলাররা। তৃতীয় ওভারের মাথায় কুইন্টন ডি’ককের উইকেট তুলে নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে প্রথম ধাক্কা দেন ওয়াশিংটন সুন্দর। সেই শুরু, এরপর পর পর উইকেট হারাতে থাকে প্রোটিয়ারা। কোনও জুটিকেই জমাট হওয়ার সুযোগ দেননি সিরাজ-সুন্দররা। অষ্টম ওভারে ওপেনার জানেমন মালান (১৫) এর উইকেট এনে দেন ভারতীয় পেসার মহম্মদ সিরাজ। দশম ওভারে ফের উইকেটপ্রাপ্তি সিরাজের। তাঁর দ্বিতীয় শিকার রিজা হেন্ড্রিক্স (৩)। চতুর্থ উইকেটে যেই না পার্টনারশিপ গড়ার চেষ্টা শুরু করেছিলেন হেনরিখ ক্লাসেন ও এইডেন মার্করাম, শাহবাজ আহমেদ তখন মার্করামকে (৯) প্যাভিলিয়নের রাস্তা দেখান।
দক্ষিণ আফ্রিকাকে আজ নেতৃত্ব দিলেন ডেভিড মিলার। এই প্রথম বার প্রোটিয়াদের ক্যাপ্টেন্সির দায়িত্ব পাওয়া মিলারের ব্যাট আজ চলেনি। ১৯তম ওভারে সুন্দর ফেরান মিলারকে (৭)। ২০তম ওভারের চতুর্থ বলে এ বার প্রোটিয়াদের ষষ্ঠ ধাক্কা দেন কুলদীপ যাদব। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে লড়াই চালিয়ে যাওয়া হেনরিখ ক্লাসেনের উইকেট তুলে নেন শাহবাজ আহমেদ। প্রোটিয়াদের হয়ে আজ সর্বাধিক রান করেছেন ক্লাসেনই (৩৪)। ২৬তম ওভারের তৃতীয় বলে বিয়ন ফরচুনকে (১) আউট করেন কুলদীপ। পরের বলেই অনরিখ নর্টজের (০) উইকেট তুলে নেন। হ্যাটট্রিকও করে ফেলতে পারলেন কুলদীপ। অল্পের জন্য তা হয়নি। ১০ ওভারের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। সেখান থেকে ২৮তম ওভারে এসে অল আউট হয়ে গেল দক্ষিণ আফ্রিকা। শেষ ছ’টি উইকেট মিলাররা হারিয়েছেন মাত্র ৩৩ রান তুলে।
১০০ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে ভারতের ওপেনিং জুটির দাপট দেখা যায়। গিল-ধাওয়ান জুটিই ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়তে পারতেন। কিন্তু সপ্তম ওভারের প্রথম বলের পর রান আউট হন শিখর (৮)। এই সিরিজের তিন ম্যাচেই রান পেলেন না শিখর। গিল-ধাওয়ানের ওপেনিং জুটিতে ওঠে ৪২ রান। এরপর শিখর ফিরলে মাঠে আসেন ঈশান কিষাণ। গত ম্যাচে তিনি ভালো পারফর্ম করার জন্য আজ ব্যাটিং অর্ডারে তাঁর প্রমোশন হয়েছিল। এ ছাড়া ডানহাতি ব্যাটার শিখর আউট হওয়ার পর কম্বিনেশনের জন্য বাঁ হাতি ঈশানকে ক্রিজে পাঠানো হয়।
রাঁচিতে ৭ রানের জন্য সেঞ্চুরি হাতছাড়া হয়েছিল ঈশানের। ছিলেন দুরন্ত ছন্দে, তবে আজ দিল্লিতে বেশিক্ষণ ক্রিজে কাটাতে পারেননি তিনি। ১১ ওভারের মাথায় ব্যক্তিগত ১০ রানে ফেরেন ঈশান। তৃতীয় উইকেটে শ্রেয়স-গিল জুটিতে ওঠে ৩৯ রান। ১৯তম ওভারে এসে লুনগি এনগিডি তুলে নেন শুভমন গিলের উইকেট। শেষ অবধি ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়তে পারলেন না গিল। হাফসেঞ্চুরি হাতছাড়া করে ৪৯ রানের মাথায় গিল ফেরেন ড্রেসিংরুমে। সিরিজের প্রথম ২টি ম্যাচে রান পাননি গিল। তৃতীয় ম্য়াচে ছাপ রেখে গেলেন তিনি। শিখরের ডেপুটি শ্রেয়স অপরাজিত থাকেন ২৮ রানে এবং সঞ্জু অপরাজিত থাকেন ২ রানে। ২০তম ওভারের প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে জেতান শ্রেয়স। ১৮৫ বল বাকি থাকতেই ম্যাচ ও সিরিজ জিতে নিল ভারত।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: দক্ষিণ আফ্রিকা ৯৯ (হেনরিখ ক্লাসেন ৩৪, জানেমন মালান ১৫, কুলদীপ যাদব ৪-১৮, ওয়াশিংটন সুন্দর ২-১৫)।
ভারত ১০৫-৩ (শুভমন গিল ৪৯, শ্রেয়স আইয়ার ২৮*, বিয়ন ফরচুন ১-২০, অনরিখ নর্টজে ১-২১)