Virat Kohli: ‘একঘর মানুষের ভিড়েও আমি একা’, মনের আগল খুললেন কোহলি
ক্যাপ্টেন হিসেবে এবং ব্যাট হাতে - দুই ভূমিকাতেই সর্বদা বিরাটের জয় দেখতে চেয়েছে অনুরাগীরা। এই সমুদ্র সমান প্রত্যাশার চাপ সামলাতে গিয়ে প্রভাব পড়েছে মনের উপর।
মুম্বই: সচিন তেন্ডুলকর, মহেন্দ্র সিং ধোনির পর বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। ক্রিকেট সমর্থক, দেশবাসীর পাহাড়প্রমাণ প্রত্যাশা বয়েছেন সচিন, ধোনিরা। বাইশ গজকে তাঁরা বিদায় জানানোর পর ক্রিকেটপ্রেমীদের প্রত্যাশার চাপ বইতে হয়েছে বিরাট কোহলিকে। ক্যাপ্টেন হিসেবে এবং ব্যাট হাতে – দুই ভূমিকাতেই সর্বদা বিরাটের জয় দেখতে চেয়েছে অনুরাগীরা। এই সমুদ্র সমান প্রত্যাশার চাপ সামলাতে গিয়ে প্রভাব পড়েছে মনের উপর। খেলোয়াড়দের মানসিক স্বাস্থ্য (Mental health) নিয়ে কথা বলতে গিয়ে নিজের মনের তোলপাড় অবস্থা লুকোনোর চেষ্টা করেননি বিরাট। বরং সংবাদমাধ্যমের কাছে মনের আগল খুলে দিয়েছেন ৩৩ বছরের প্রাক্তন অধিনায়ক। দীর্ঘদিন ধরে খারাপ ফর্মের মধ্য দিয়ে চলা বিরাট বলেছেন, “একঘর ভালোবাসার মানুষের মধ্যেও নিজেকে একা বলে মনে হয়।”
গতবছর টি-২০ বিশ্বকাপ খেলে এই ফরম্যাটে নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ান কোহলি। দায়িত্ব দেওয়া হয় রোহিত শর্মাকে। এরপর তাঁকে অন্ধকারে রেখেই ৫০ ওভারের ফরম্যাটেও রোহিত শর্মার হাতে দায়িত্ব তুলে দেয় বিসিসিআই। বোর্ড প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে যা নিয়ে মনোমালিন্য চলেছিল। বোর্ড প্রেসিডেন্টকে ঘুরিয়ে মিথ্যেবাদী বলতেও ছাড়েননি বিরাট। যাই হোক, ওয়ান ডে ফরম্যাটে নেতৃত্ব খোয়ানোর পর টিম ইন্ডিয়ার নেতা হিসেবে থাকার আর প্রয়োজন মনে করেননি। বছরের শুরুতে অনুরাগীদের অবাক করে দিয়ে পছন্দের টেস্ট ফরম্যাটের নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ান বিরাট কোহলি। আবেগঘন পোস্টে জানিয়ে দেন, ভারতীয় যুগে বিরাট রাজত্বের অবসানের কথা।
এত কিছু বদলের মাঝে যেটার পরিবর্তন হয়নি তা হল বিরাট কোহলির খারাপ ফর্ম। না আইপিএলে, না জাতীয় দলে। ব্যাট হাতে প্রত্যাশার চাপ সামলাতে ব্যর্থ কোহলি। আলোচনা, সমালোচনার অন্ত নেই। নানা লোকের নানাবিধ পরামর্শ। জাতীয় দলে তাঁর সুযোগ পাওয়া, ছুটি চাওয়া নিয়ে উঠতে বসতে খোঁটা খেতে হচ্ছে। যতই মানসিকভাবে দৃঢ় হোন, রক্ত মাংসের মানুষের মধ্যে হতাশা আসতে বাধ্য। মাঝেমধ্যে নিজেকে দমবন্ধ বলে মনে হয় কোহলির। সাক্ষাৎকারে নিজের মানসিক অবস্থার কথা জানিয়ে প্রাক্তন অধিনায়ক বলেছেন, “একঘর ভালোবাসার মানুষের মাঝে নিজেকে একা মনে হয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে বেশ কয়েকবার এমন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গিয়েছি। আমার মতে এমন অভিজ্ঞতা আরও অনেকের হয়ে থাকবে। এটা একটা সিরিয়াস ইস্যু। আমরা যতই নিজেকে শক্ত রাখার চেষ্টা করি, এই মানসিক অবস্থা আপনাকে ফালাফালা করে দিতে পারে।”
খেলোয়াড়দের উপর প্রত্যাশার চাপ থাকবে এটা স্বাভাবিক। কোহলির কথায়, অতিরিক্ত চাপে নিজস্বতা হারিয়ে যায়। অ্যাথলিটদের প্রয়োজন খেলাধুলো এবং চাপ থেকে কিছুদিন দূরে থেকে নিজের সঙ্গে পুনরায় সংযোগ স্থাপন করা। একবার নিজস্বতার সঙ্গে সম্পর্ক হারিয়ে ফেললে আশেপাশের বাকি বিষয়গুলোও ভেঙে পড়ে। ২০১৪ সালের ইংল্যান্ড সফরের ব্যর্থতায় মানসিক অবসাদে ভুগেছেন বিরাট। ইংরেজ ধারাভাষ্যকার মার্ক নিকোলাসের পডকাস্টে কোহলি একবার বলেছিলেন, “ঘুম থেকে উঠেই মনে হত আমি রাত করতে পারছি না। এই অনুভূতিটা মোটেও স্বস্তিদায়ক নয়। বিশ্বের সবচেয়ে একা মানুষ বলে মনে হত নিজেকে।”