Sourav Ganguly: ভারতীয় ফুটবলের ব্যান নিয়ে মুখ খুললেন সৌরভ
সামনে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly) আর তাঁকে লক্ষ করে বাউন্সার আসবে না প্রশ্নের ছদ্মবেশে এ কি হতে পারে! উড়ে এল প্রশ্ন।
নন্দন পাল
মধ্য কলকাতার একটি হোটেলে এসেছিলেন একটি বিলাসবহুল বহুতল আবাসনের ক্রেতাদের হাতে ফ্ল্যাটের চাবি তুলে দিতে, আর নেতৃত্ব নিয়ে একটি প্যানেল ডিসকাশনে বক্তব্য রাখতে। কিন্তু তিনি যখন ভারতীয় ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থার সবচেয়ে উঁচু চেয়ারে আসীন তখন এটাই প্রত্যাশিত ফিফার (FIFA) এআইএফএফকে (AIFF) ব্যানের প্রসঙ্গ উঠবেই। উঠলও। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে। ল্যাটা ব্যাটে শাসন করলেন সেই প্রশ্ন-বল। সোজা এগিয়ে এসে বাউন্ডারির বাইরে গিয়ে পড়ল উত্তর। এক সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে দাদা বলেন, “যেহেতু আমি ফুটবলের সঙ্গে যুক্ত নই তাই আমি এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারব না। কিন্তু আমার মনে হয় প্রত্যেকটি স্পোর্টস বডি একটা সিস্টেমে চলে, প্রত্যেক ক্রীড়া নিয়ামক সংস্থার নির্দিষ্ট কিছু রুল, রেগুলেশন এবং প্রটোকল রয়েছে। যেমন আমাদের বিসিসিআইতেও রয়েছে। সংস্থার এই আইন কানুন সবাই মেনে চলে থাকেন। আর সেই প্রটোকলের খাতিরেই আমি এই প্রশ্নের উত্তর দিতে অপারগ।”
সামনে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly) আর তাঁকে লক্ষ করে বাউন্সার আসবে না প্রশ্নের ছদ্মবেশে এ কি হতে পারে! উড়ে এল প্রশ্ন। ধরুন আপনি প্রধানমন্ত্রী। দিল্লিতে প্রাতঃ ভ্রমণে বেরিয়েছেন। সেই সময় নেতাজির হলোগ্রাম জীবন্ত হয়ে আপনাকে বললেন একটি বর দেব তোমায়। কোন বর চাইবেন? হালকা চালে সৌরভ বললেন, “আগে ক্যামেরা গুলো বন্ধ হোক তাহলে উত্তর দেব। ২৬ বছর ধরে এদের আমি চিনি এরা বন্ধ করবে না লেন্স গুলো। আপনাকে আমি এই অনুষ্ঠানের শেষে উত্তর দেব।”
নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মবর্ষে নেতৃত্ব নিয়ে এ দিনের প্যানেল ডিসকাশনে অংশগ্রহণ করেন সৌরভ ছাড়াও নেতাজি গবেষক অনুজ ধর, শিলাদিত্য চৌধুরী, চন্দ্রচূড় ঘোষ। সৌরভের কাছে নেতৃত্ব মানে কী? ভালো নেতারা অকুতোভয়, দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে স্বক্ষম, সাহসী এবং তেজী। কথায় কথায় বললেন, ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর ব্যস্ততা কমেনি সৌরভের। তবুও তিনি এখনও ক্রিকেট ম্যাচের শুরুতে যে স্নায়ুর চাপ ও ম্যাচের প্রেশার থাকে সেটা প্রতিনিয়ত মিস করেন।
নেতাজি বিশেষজ্ঞ অনুজ ধরের পর্যবেক্ষণ, “নেতাজি ধীর, স্তিতধী ছিলেন। তিনি যেভাবে হিটলারকে মোকাবিলা করেছিলেন ভারতের অন্য কোনও নেতার পক্ষে তা সম্ভব হত না। তাঁর সম্পর্কে এই দু এক ঘণ্টায় বিশেষ কিছু বলা অসম্ভব।”
দাদাকে নিয়ে গান বেঁধেছেন কেতন সেনগুপ্ত। সেই গানের কথায় কণ্ঠ ঊষা উত্থুপের। সর্বজনের দিদি সর্বজনের দাদাকে শোনালেন সেই গান। “দাদা দাদা ইউ আর দ্য বেস্ট… ইউ আর ক্রিকেট সুপারম্যান”। একইসঙ্গে ঊষা বললেন, “সৌরভকে আমি শ্রদ্ধা করি, ভালোবাসি, সম্মান করি। আমাদের জীবনে আর একটা দাদা হবে না। তোমার বয়স তো এখনও ২৬, তুমি আমাদের দাদা।” সর্বকালের সেরা বাঙালিদের প্রথম ১০ জনের তালিকায় একজন যদি হন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, অন্যজন অবশ্যই নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু। ঊষা উত্থুপের পরবর্তী গান নেতাজিকে নিয়ে। বাইশ গজে বল ও দল শাসনে সৌরভের মহিমা যেমন ছিল ঊষার গানে তেমনই সুভাষকে নিয়ে গানটি গাইতে গাইতে তাঁর গলা বুজে এল, চোখ ভরে গেল অশ্রু-পানিতে।