Football vs Cricket in Brazil: ফুটবল নয়, পেলের দেশের মেয়েরা এখন মজেছেন ভারতের জনপ্রিয় খেলায়

পেলের দেশের মেয়েরা ফুটবল নয়, অন্য খেলায় মজে। কী সেই খেলা? ভারতের জনপ্রিয়তম খেলাতেই মজে গিয়েছে একটি ছোট্ট শহর। শুধু তাই নয়, রীতিমতো পেশাদারি পথেও হাঁটতে শুরু করেছে।

Football vs Cricket in Brazil: ফুটবল নয়, পেলের দেশের মেয়েরা এখন মজেছেন ভারতের জনপ্রিয় খেলায়
ব্রাজিল মহিলা ক্রিকেট দলের অধিনায়ক রবার্তা মোরেত্তি আভেরি।Image Credit source: Cricket Brasil
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 08, 2022 | 8:00 AM

পোকোস দি কালদাস: পেলের দেশে ফুটবলের জনপ্রিয়তা কি কমছে? নতুন প্রজন্মের তরুণদের যদি বাদ দেওয়া হয়, তা হলে এই প্রশ্নে খানিকটা সম্মতি জানাতেই হবে। মেয়েদের মধ্যে ক্রমশ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে ক্রিকেট। আশ্চর্যের হলেও এটাই সত্যি। ফুটবলের ব্রাজিল, সাম্বার ব্রাজিল কি সত্যিই স্বাদ পাল্টাতে চলেছে? একেবারেই তাই। ছেলেদের মধ্যে না হলেও মেয়েরা ক্রিকেট প্রেমে বিভোর। ঠিক ব্রাজিলের হৃদপিণ্ডে না হলেও পোকোস দি কালদাসে পা রাখলে কিন্তু ব্যাট-বলের ঝঙ্কারই শোনা যাবে। ইংলিশ ও ভারতীয়দের দাপটে পেলে, নেইমারদের দেশে ক্রিকেটের বোধন শুরু হয়ে গিয়েছে অনেক আগেই। সেই খেলাই এখন জালপালা মেলতে শুরু করে দিয়েছে। মেয়েদের ক্রিকেটে ব্রাজিল টিম যথেষ্ট স্বপ্ন দেখাচ্ছে। ২০২০ সালেই জাতীয় টিমে জায়গা পাওয়া মেয়ে ক্রিকেটারদের সঙ্গে পেশাদার চুক্তিও করেছে ওই দেশের ক্রিকেট বোর্ড।

পেলের দেশে ক্রিকেট বিপ্লব সম্ভব হল কী ভাবে? ইংল্যান্ডের প্রাক্তন পেশাদার ক্রিকেটার ম্যাট ফেদারস্টোনই অসম্ভব কাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেছেন। তাঁর স্ত্রী ব্রাজিলিয়ান। তাই বেশ কিছুদিন ধরেই ওই দেশের পাকাপাকি বাসিন্দা। তিনিই ক্রিকেটকে প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছেন ব্রাজিলের মাটিতে। তিনি বলতেও দ্বিধা করছেন না, ‘যখন ব্রাজিলে ক্রিকেট ছড়ানোর কথা ভেবেছিলাম আমার স্ত্রী পাগল বলেছিল। সত্যিই তো ব্রাজিলের মতো ফুটবল কেন্দ্রীক দেশে কি এটা সম্ভব? কিন্তু কালদাস ব্রাজিলের একমাত্র শহর, যেখানে বাচ্চারা ফুটবল নয় ক্রিকেটই খেলে। প্রথম দিন থেকেই জানতাম, এই দেশ হয় ফুটবল, নয় ফুটবলই খেলে। রাগবি, হকি, সেলিংয়ের মতো খেলাগুলো তার পরেই থাকবে। কিন্তু প্রাইভেট স্কুলগুলোতে খেলাটা ছড়াতে গিয়ে বুঝেছিলাম, নতুন একটা খেলাকে ওরা অ্যাডভেঞ্চার হিসেবে নিচ্ছে। ইংল্যান্ডে ক্রিকেটকে বড়লোকদের খেলা হিসেবে দেখা হয়। ব্রাজিলে সেটা নয়।’

ব্রাজিলের মেয়েদের টিমের ক্যাপ্টেন মোরেত্তি আভেরি প্রথম দিন ক্রিকেট ম্যাচ দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। ৩৬ বছরের ক্রিকেটার বলছেন, ‘খুব অবাক হয়েছিলাম। একদল ছেলে-মেয়ে সাদা জামাকাপড় পরে খেলছে। বুঝতে পারছিলাম না ওরা সবাই কেন একই রকম পোশাক পরেছে। কিন্তু ভালোও লেগে গিয়েছিল খেলাটা।’

ব্রাজিলের রাস্তায় ক্রিকেট ধাঁচের একটা খেলার চল আছে। যার নাম ‘টাকো’। কালদাসে ২০০৯ সাল থেকে ক্রিকেট ছড়াতে শুরু করে। এখন ক্রিকেট খেলিয়ে প্লেয়ারের সংখ্যা প্রায় ৫ হাজার। এ বার কালদাস ছাড়িয়ে বেরোতে চাইছেন ম্য়াট। লরা কার্দোসোকে হয়তো মনে নেই অনেকেরই। কিন্তু মেয়েদের ক্রিকেটে ইতিমধ্যেই সাড়া ফেলে দিয়েছেন। ১৬ বছরের অলরাউন্ডার এক ওভারে ৫ উইকেট নিয়ে কানাডার বিরুদ্ধে রোমহর্ষক ম্যাচ জিতিয়েছিলেন। লরার দাপট, আভেরি, লিন্ডসে মারিয়ানোর সাফল্য ব্রাজিলকে ভাবিয়েছে। সেই সঙ্গে খেলার সঙ্গে জুড়ে যাওয়া অর্থ অন্য ভাবে স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছে মেয়েদের।

এখানেই গল্পটা শেষ ব্রাজিলের ক্রিকেটের? না। বরং পেশাদার হয়ে ওঠার যাবতীয় মশলা মজুত রয়েছে। কালদাসে তৈরি হয়ে গিয়েছে ব্য়াট তৈরির কারখানা। ক্রিকেটের প্রভাব ও প্রসার না থাকলে হয়? কাঠমিস্ত্রি লুইস রবের্তো ফ্রান্সিকো ব্যাট বানাতে শুরু করেছেন। মিনাসের ওই ছোট্ট শহর যে ভীষণ ভাবে ক্রিকেটে ডুবে গিয়েছে, এতেই বোঝা যায়।