Cricket Retro story: ‘ঘরে ঢুকে তোমাদের হারাব’, ইমরানের হুঙ্কার, ভেস্তে গেল গাভাসকরের অবসর পরিকল্পনা

"একটু অপেক্ষা করো। ঘরে ঢুকে তোমাদের হারাব।" ইমরান খানের ছুঁড়ে দেওয়া চ্যালেঞ্জ বলে কথা। না লুফে উপায় কোথায়? আর তাতেই পিছিয়ে গেল সুনীল গাভাসকরের 'বড়' পরিকল্পনা?

Cricket Retro story: 'ঘরে ঢুকে তোমাদের হারাব', ইমরানের হুঙ্কার, ভেস্তে গেল গাভাসকরের অবসর পরিকল্পনা
সুনীল গাভাসকরের সঙ্গে ইমরান খানImage Credit source: Twitter
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 28, 2022 | 9:30 AM

কলকাতা: লন্ডনের শান্ত এক দুপুরবেলা। রেস্তোরাঁয় ঢুকে ইতালিয়ান মেনুর অর্ডার দেওয়া হয়ে গিয়েছে। খাবার এসেছে কি আসেনি। টেবিলের উল্টোদিকে বসা মানুষটির কাছে মনের কথাটা পেড়েই ফেললেন সুনীল গাভাসকর (Sunil Gavaskar)। “সিরিজ শেষে অবসর ঘোষণা করার পরিকল্পনা করে ফেলেছি।” সুস্বাদু ইতালিয়ান খাবার তখন যেন পানসে। শুনেই যেন চমকে উঠলেন গাভাসকরের মধ্যাহ্নভোজের সঙ্গী ইমরান খান (Imran Khan)। আরে না না, তুমি কি করে এখনই অবসর নিতে পার। তুমি না থাকলে…

১৯৮৬ সালের ভারতীয় দলের ইংল্যান্ড সফর। কপিলদেবের নেতৃত্বে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে রানির দেশে। প্রথম টেস্ট ক্রিকেটের মক্কা লর্ডসে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় টেস্ট লিডস ও বার্মিংহামে। রানির দেশে সিরিজ শেষে অবসর ঘোষণা করার ভাবনা নিয়েই বিমানে উঠেছিলেন সুনীল গাভাসকর। কিন্তু ভাবলেই তো আর হয় না। দৃঢ় পরিকল্পনাও অনেক সময় ভেস্তে যায়। ইংল্যান্ডে গাভাসকরের অবসর পরিকল্পনা জলে ধুয়ে গেল প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী পাক ক্রিকেটার ইমরানের খানের ‘দৌলতে’। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে রেস্তরাঁয় বসেই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন গাভাসকরের দিকে। বললেন, “তুমি তো এখনই অবসর নিতে পার না। শোনো, আগামী বছর পাকিস্তান টিম ভারত সফরে যাচ্ছে। আমি চাই ভারতের মাটিতে ভারতকে হারাতে। আর সেই দলে তুমি না থাকলে সেই মাধুর্য্যটা থাকবে না। চলো না, শেষবারের মতো একে অপরের বিরুদ্ধে মাঠের লড়াইয়ে নামি।”

মাঠের প্রতিদ্বন্দ্বিতা ব্যক্তিগত সম্পর্কে প্রভাব ফেলেনি। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দলের দুই মুখ সুনীল গাভাসকর ও ইমরান খান। একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা ছিল ভরপুর। সেদিন বন্ধুর প্রতি অধিকার থেকে কথাগুলি বলেছিলেন। কাপ্তানের চ্যালেঞ্জটা আকর্ষণীয় হলেও মনটা খচখচ করছিল ভারতীয় ক্রিকেটের কিংবদন্তির। তখনও পাকিস্তান সফর ঘোষিত হয়নি। শেষ পর্যন্ত ইমরানের কাছে একটা শর্ত রাখলেন গাভাসকর। বললেন, “শেষ টেস্টের আগে পাকিস্তান সফরের ঘোষণা হলে ভালো। না-হলে অবসর নিয়ে নেব।” ইমরানের ইচ্ছেতে সেবার সায় দিয়েছিলেন ক্রিকেট দেবতা। কয়েকদিনের মধ্যেই পাকিস্তান দলের ভরত সফরের সূচির ঘোষণা হয়ে গেল।

একটি সর্বভারতীয় সংবাদপত্রের কলামে স্মৃতির পাতা উল্টে অনেক কিছুই লিখেছিলেন লিটল মাস্টার। সেই প্রথমবার ভারতের মাটিতে গাভাসকরদের টেস্ট সিরিজে হারিয়ে দিয়েছিল পাকিস্তান। পাঁচ ম্যাচের সিরিজের চারটি ড্র হওয়ার পর বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামীতে শেষ টেস্ট জিতে নিয়েছিল সফরকারী দল। ইচ্ছেপূরণ হয়েছিল ইমরানের। পরাজয় সত্ত্বেও শেষ টেস্টের সেরা হন সুনীল গাভাসকর। আর সিরিজ সেরার তকমা গিয়েছিল ইমরানের ঝুলিতে।