AFC Cup 2022: আই লিগ চ্যাম্পিয়নদের কাছে হেরে নকআউট কঠিন করে ফেলল বাগান

আই লিগ চ্যাম্পিয়নদের কাছে হেরে এএফসি কাপের প্রথম ম্যাচেই হেরে গেল এটিকে মোহনবাগান। ডিফেন্সের দোষেই হার গোকুলম কেরালার কাছে। এখান থেকে কি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে ফেরান্দোর টিম?

AFC Cup 2022: আই লিগ চ্যাম্পিয়নদের কাছে হেরে নকআউট কঠিন করে ফেলল বাগান
AFC Cup 2022: আই লিগ চ্যাম্পিয়নদের কাছে হেরে নকআউট কঠিন করে ফেলল বাগান
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 18, 2022 | 8:25 PM

গোকুলম কেরালা-৪ : এটিকে মোহনবাগান-২ (লুকা ৫০ ও ৬৫, রিশাদ ৫৭, জিতিন ৮৯) (প্রীতম ৫৩, লিস্টন ৮০)

কলকাতা: দেখে শেখা অনেক সময়ই কঠিন হয়। যারা দেখে শিখতে পারে না, তারা চাপে পড়লেও শেখে না। দিন কয়েক আগে এই গোকুলম কেরালাকেই গ্যালারিতে বলে চাক্ষুস করে গিয়েছিলেন এটিকে মোহনবাগান (ATK Mohun Bagan) কোচ হুয়ান ফেরান্দো। লুকা, ফ্লেচার, রিশাদ, তাহির, জিতিনদের নাম নিশ্চয়ই নোটবুকে টুকে রেখেছিলেন স্প্যানিশ কোচ। কিন্তু এঁদের কী ভাবে আটকানো উচিত, তা কি ঠিক করতে পেরেছিলেন? এই প্রশ্নেরই উত্তর শেষ ৪৫ মিনিট ধরে খুঁজল যুবভারতী। লুকা মাইসন, জর্ডিয়ান ফ্লেচারদের আটকাতে গেলে মাঝমাঠে ব্যারিকেড দরকার পড়ে। রক্ষণের সামনে প্রাচীর লাগে। আর ডিফেন্সে দরকার পড়ে সাহসী কিছু পা। এর কোনওটাই দেখা গেল না। তার নির্যাস কী দাঁড়াল? গোকুলম কেরালার (Gokulam Kerala) কাছে ২-৪ হেরে গেল সবুজ মেরুন। এএফসি কাপের (AFC Cup) প্রথম ম্যাচে হেরে বসায় রয় কৃষ্ণাদের নকআউটে যাত্রা কঠিন হয়ে গেল।

গোকুলমের বিরুদ্ধে বাগানের প্রথমার্ধটা নিয়ে খুব বেশি হিসেবের দরকার নেই। কাউন্টার অ্যাটাক এবং কিছু গোল মিসের আক্ষেপ ছাড়ার আর কিছু নেই। বিরতির পরই ম্যাচটা ৬টা গোল হল। সোজা কথা বললে, ০-১ থেকে ১-১ করেও বাগাবের ১-২ হয়ে যাওয়া, শেষ পর্যন্ত ২-৪ হারের পিছনে ডিফেন্সই দায়ী। বিপক্ষের সেরা অস্ত্রদের সামলাতে না পারলে এমনই হয়। ৫-২ কিংবা ৬-২ও হতে পারত। আই লিগে খেললেও ইতালিয়ান কোচ ভিনসেঞ্জো আলবের্তো আনিসির টিম যে আইএসএলের যে কোনও টিমকে কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিতে পারেন, তা প্রমাণ করে দিলেন। বিরতির একেবারে পরের মিনিটেই গোলের সুবর্ণ সুযোগ মিস করে গোকুলম কেরালা। বাঁড দিক থেকে বেনির পাঠানো ক্রস পা ছোঁয়ালেই গোল হতে পারত। কিন্তু লুকা মাইসন মিস করেন। ৩ মিনিটের মধ্যেই ১-০ করে ফেলে কেরালার টিম। মোহনবাগানের ডিফেন্স তছনছ করে ছোট বক্সের কোণ থেকে তাহির জামানের মাইনাস। সবুজ মেরুনের ডিফেন্ডাররা বুঝতেই পারেননি। তিরিকে তুলে নেওয়ার পর রক্ষণের মেরুদণ্ডটাই ভেঙে গিয়েছিল।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে পিছিয়ে পড়লেও মোহনবাগান অবশ্য দ্রুত সমতা ফিরিয়েছিল। ৫৩ মিনিটে লিস্টন কোলাসোর কর্নার থেকে ১-১ করে বাগান। বঙ্গ সন্তান প্রীতম কোটালের দুরন্ত গোলে। ডিফেন্ডারার অনেক ক্ষেত্রেই বিপক্ষ স্ট্রাইকারদের থামাতে থামাতে গোলও করে ফেলেন। কিন্তু প্রীতম যে ভাবে গোলটা করলেন, স্ট্রাইকাররা সে ভাবে করেন। এক ডিফেন্ডারকে কাঁধে নিয়ে লিস্টনের কর্নারটা আলতো ছোঁয়ায় সমতা ফেরান ম্যাচের। বাগান-ঝলক বলতে ওইটুকুই। তার পর আবার কেরলের টিম খেলা নিজেদের মুঠোয় নিয়ে নেয়। মূলত কাউন্টার অ্যাটাকে প্রতিপক্ষের উপর ভাঙচুর চালাল গোকুলম। ফ্লেচারের মাইনাস থেকে কমজোরি শটে গোল করেন রিশাদ। তাঁর শট অমরিন্দরের হাতে লেগে গোলে ঢুকে যায়। প্রশ্ন হল, বাগানের কিপার সরাসরি গোলটা খেলেন কি করে? সোজাসুজি শট নেবেন রিশাদ, বুঝেও কেন নিজের জায়গা নিতে পারেননি তিনি? গোকুলমের জোড়া ফলা লুকা ও ফ্লেচারকে সামলাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন বাগান স্টপাররা। ৬২ মিনিটে ফ্লেচার বাগান ডিফেন্সকে ভেঙে বড় বক্সের মাথা থেকে বল বাড়ান। বক্সের মধ্যে কার্যত ফাঁকা জায়গায় বল পেয়ে যান লুকা। ৩-১ করতে ভুল করেননি।

শেষ ১০ মিনিটে আবার খেলার মেরু বদলাতে শুরু করেছিল। ৮০ মিনিটে ফ্রি কিক থেকে লিস্টনের দুরন্ত ফ্রি কিকে খেলার গতি পাল্টে গিয়েছিলেন। ২-৩ স্কোরলাইন করার পর মরিয়া মোহনবাগান তখন ড্রয়ের জন্য মুখিয়ে ছিল। কিন্তু ৮৯ মিনিটে ৪-২ করে ফেলে কেরলের টিমের। ফেরান্দোর টিমের এই ম্যাচের ডিফেন্স নিয়ে শুরু থেকেই কথা উঠছিল। কাউন্টার অ্যাটাকের মুখে বারবার ভেঙে পড়েছে প্রীতমদের ডিফেন্স। ম্যাচের শেষেও তাই হল। লুকার পাস থেকে পরিবর্ত হিসেবে নামা জিতিন স্কোরলাইনে নাম লিখিয়ে ফেলেন।

প্রথম ম্যাচে হারের ফলে বাগান পরের পর্বে যেতে পারবে কিনা, তা নিয়েই এখন প্রশ্ন। গ্রুপ পর্বে বাগানের পরের দুটো ম্যাচ বসুন্ধরা কিংস ও মাজিয়ার বিরুদ্ধে। এই দুটো ম্যাচ জিতলেও নকআউটে যেতে পারবে ফেরান্দোর টিম, তা কিন্তু জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না। গোকুলমকে হারতে হবে। আর তা যদি না হয়, গ্রুপ পর্বেই শেষ হয়ে যাবে বাগানের যাত্রা।