I League 2022: সুযোগ নষ্টের খেসারত দিয়ে আই লিগ ট্রফিটা গোকুলমের হাতে তুলে দিল মহমেডান

শেষ ১৫ মিনিট ঝড় তুলেছিল মহমেডান। তাতেও শেষ রক্ষা হল না। মহমেডানকে হারিয়ে আবার আই লিগ জিতল গোকুলম কেরালাই। ইতিহাসের কাছে এসেও কেন পারল না সাদা-কালো শিবির?

I League 2022: সুযোগ নষ্টের খেসারত দিয়ে আই লিগ ট্রফিটা গোকুলমের হাতে তুলে দিল মহমেডান
I League 2022: সুযোগ নষ্টের খেসারত দিয়ে আই লিগ ট্রফিটা গোকুলমের হাতে তুলে দিল মহমেডান
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 14, 2022 | 9:56 PM

গোকুলম কেরালা-২ : মহমেডান-১ (রিশাদ ৪৯, এমিল ৬১) (জোসেফ ৫৭)

কলকাতা: যুবভারতীর সঙ্গে সপ্তাহ দুয়েক আগের মাঞ্জেরির স্টেডিয়াম গুলিয়ে যেতে পারে। হয়তো শ’খানেক সমর্থক এসেছিলেন। কিন্তু তাঁরাই লাল পতাকা দিয়ে যেন আস্ত একটা মাঞ্জেরির ঝলক দেখিয়ে গেলেন। সপ্তাহ দুয়েক ওই মাঞ্জেরিতেই হেরেছিল বাংলা। সন্তোষ ট্রফির (Santosh Trophy) ফাইনালে এক্সট্রা টাইমে এগিয়েও গিয়েও শেষ পর্যন্ত ১-১ ড্র হয়। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে ভারতসেরা হয়েছিল কেরল। সপ্তাহ দুয়েক যেতে না যেতে ক্লাব ফুটবলেও ভারতসেরা সেই কেরল। গোকুলম কেরালা (Gokulam Kerala) যুবভারতীতে মহামেডান স্পোর্টিংকে (Mohammedan Sporting) ২-১ হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হল আই লিগের (I League 2022) ।

কখনও আই লিগ না জেতা মহমেডানকে প্রথম বার চ্যাম্পিয়ন হতে সোজা অঙ্ক মেলাতে হত। ঘরের মাঠে গোকুলমকে হারালেই তারা হেড-টু-হেডে জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়ে যেত। তা হল না কেন? ‘ফাইনাল’ ম্যাচের নব্বই মিনিট পর নির্যাস যদি তুলে ধরতে হয়, কী বলা উচিত? সুযোগ নষ্টের খেসারত দিয়ে কেরলের টিমের হাতে আই লিগের ট্রফি তুলে দিলেন ফয়জল আলি, মার্কোস জোসেফরা। দুটো অর্ধ ধরলে অসংখ্য গোলের সুযোগ পেয়েছিল সাদা-কালো শিবির। কিন্তু সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি তারা। তাই ০-১ থেকে ১-১ করেও শেষ পর্যন্ত ২-১ হার। টানা দ্বিতীয় বার আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইতিহাস তৈরি করে ফেলল গোকুলম।

ঘরের মাঠে মহমেডান যে আগ্রাসী ফুটবল খেলবে, নিশ্চিত ছিল গোকুলম। তাই শুরুতে কিছুটা কোণঠাসা থাকলেও ধীরে ধীরে নিজেদের মেলে ধরেছিল। মহমেডান প্রথম অর্ধে সুযোগ নষ্ট করলেও টিম হিসেবে যথেষ্ট ভালো পারফর্ম করেছে। যে কারণে মনে হয়েছিল বিরতির পর অন্য ফুটবল উপহার দেবেন আজহারউদ্দিনরা। আগুন ছিল সাদা-কালো শিবিরের খেলায়, কিন্তু তা বিপক্ষের বক্সে ছড়িয়ে দিতে পারেননি তাঁরা। বিরতির পর কাউন্টার অ্যাটাকে এসে প্রথম সাফল্য পায় কেরল। বিরতির ৪ মিনিটের মধ্যেই ১-০ করে ফেলে গোকুলম। ৪৯ মিনিটে রিশাদ এগিয়ে দেন টিমকে। সাদা-কালো ডিফেন্ডাররা তাঁকে আটকাতেই পারলেন না। ০-১ পিছিয়ে পড়েও মহমেডান কিন্তু দ্রুত লড়াইয়ে ফিরেছিল। ৫৭ মিনিটে ফ্রি কিক থেকে ১-১ করে দেন মার্কাস জোসেফ। তাঁর নেওয়া কিক আজহারউদ্দিন মল্লিকের পায়ে গেলে ঢুকে যায়। ৬১ মিনিটে আবার ২-১ করে ফেলেন কেরলের এমিল বেনি। লুকা মাজসিনের পাস থেকে টিমকে এগিয়ে দেন তিনি। প্রথম গোলটাও ডিফেন্সের ভুলে খেলেছিল মহামেডান। দ্বিতীয় গোলটাও তা-ই।

৩৭ হাজারেরও বেশি সমর্থক খেলা দেখতে এসেছিলেন যুবভারতীতে। তাঁদের অনেকেই ইস্টবেঙ্গল কিংবা মোহনবাগানের সমর্থক। তবু বাংলার টিমকে আই লিগে চ্যাম্পিয়ন করার জন্য গলা ফাটাতে এসেছিলেন। শেষ ১৫ মিনিট মহমেডান ঝড় বইয়ে দিয়েছিল। ৭৮ মিনিটে অল্পের জন্য গোল মিস করেন ফয়জল আলি। গোকুলম বক্সের মধ্যে আজহারউদ্দিনের পাস পেয়েও কিপার রক্ষিত ডাগারের হাতে তুলে দেন। ৮৫ মিনিটেও সুযোগ ছিল সাদা-কালো শিবিরের ঘুরে দাঁড়ানোর। বিপক্ষের বক্সে আজহারের নিখুঁত মাইনাস পেয়েও বাইরে মারেন ফ্রাঙকি বুয়াম। ৮৯ মিনিটেও সেই একই ভুল। ফয়জলের ক্রস পেয়েও বাইরে মারেন মার্কোস। শেষ ১৫টা মিনিট যেন একাই মহমেডানের বিরুদ্ধে রক্ষাকর্তা ছিলেন গোকুলমের কিপার রক্ষিত।

ইতিহাস তৈরি হয় দুরন্ত পারফরম্যান্সে। ইতিহাস হাতছাড়া হয়, সুযোগ নষ্টের জন্য। মহমেডান চেষ্টা করেও প্রথম দলে নাম লেখাতে পারল না!