ISL: কিংবদন্তি সুনীল ছেত্রীর সঙ্গে খেলার জন্য মুখিয়ে প্রবীর
বন্ধুত্ব, পেশাদারিত্বের জায়গা আলাদা।
দীপঙ্কর ঘোষাল
বাংলা ছেড়ে বেঙ্গালুরু। সবুজ মেরুন জার্সিকে অতীত করে এক অন্য মিশন নিলেন তিনি। দীর্ঘ সাত বছর খেলেছেন এটিকে ও মোহনবাগানে (ATK Mohunbagan)। বাংলার ক্লাব ছেড়ে বেঙ্গালুরু এফসিতে সই করলেন প্রবীর দাস (Prabir Das)। তিন বছরের চুক্তি। প্রাক্তন, বর্তমান ক্লাব, স্মৃতি, সম্ভাবনা। সুনীল ছেত্রীর (Sunil Chhetri) সঙ্গে খেলার উত্তেজনা, জাতীয় দলের স্বপ্ন। টিভি নাইন বাংলার কাছে মন খুললেন প্রবীর।
প্রশ্ন: মোহনবাগান, এটিকে মোহনবাগান মিলিয়ে আপনি সাত বছর ছিলেন। নতুন দলে যাওয়া কতটা আনন্দের? নাকি খারাপ লাগাও আছে?
প্রবীর: সামাজিক এবং পেশাদার জীবন মিলিয়ে দিলে চলবে না। ক্লাবের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা আবেগ, সমর্থকদের ভালোবাসা এক রকম। নতুন জায়গায় যাওয়া, নতুন চ্যালেঞ্জ আর এক রকম। পেশাদার ফুটবলের অংশ। বিশ্ব ফুটবলেও এই বিষয়টা হতাশারই হয়। পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়। আমি খুব ভাগ্যবান, এ রকম সমর্থকদের পেয়েছি। খারাপ, ভালো সবসময়ই ওরা পাশে ছিল। আমার অস্ত্রোপচার, সাফল্য পাওয়ার আগে, পরে— সব সময় ওরা পাশে থেকেছে। ওদের ভালোবাসা সঙ্গী করেই নতুন দলে যাচ্ছি। বেঙ্গালুরু এফসির হয়ে ভালো কিছু করাটা এখন চ্যালেঞ্জ।
প্রশ্ন: যুবভারতীতে ম্যাচ হলে, অন্য দলের জার্সিতে এটিকে মোহনবাগান সমর্থকদের সামনেই খেলতে হবে…
প্রবীর: এটিকে মোহনবাগান সমর্থকরা অবশ্যই তাদের প্রিয় দলকেই সমর্থন করবে। দলের সাফল্য চাইবে। তবে আমার বিশ্বাস, মোহনবাগান সমর্থকরা একটু হলেও অন্য রকম। নিশ্চিত ভাবেই এটিকে মোহনবাগানের জয় দেখতে চাইবে। পাশাপাশি এটাও চাইবে, আমিও যেন ভালো খেলি। সমর্থকদের প্রতি এটুকু ভরসা রয়েছে।
প্রশ্ন: ডার্বি ম্যাচের আবহ কতটা মিস করবেন?
প্রবীর: সব কিছু প্রত্যাশা মতো হয় না। পেশাদার ফুটবলে এ সবের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়। সমর্থকরা আমাকে যে ভালোবাসা দিয়েছে, আমার জীবনের অনেকটা পাওয়া হয়ে গিয়েছে। আমি এতেই খুশি।
প্রশ্ন: বেঙ্গালুরু এফসি গত দু’বছর একেবারে ছন্দে নেই…
প্রবীর: ফর্মে নেই, ঠিক বলা যায় না। বেঙ্গালুরু দারুণ একটা টিম। গত দু’বছরের পারফরম্যান্স দিয়ে ওদের বিচার করা যাবে না। এ বছর কী হবে, সেটা নিয়ে ভাবছি। বেঙ্গালুরু ফেডারেশন কাপ, আই লিগ, আইএসএল, সুপার কাপ, সব জিতেছে। ভালো কিংবা খারাপ সময় তো থাকবেই। আশা করছি, নতুন মরসুমটা ভালো হবে। আমিও চেষ্টা করবো সবার সঙ্গে মিলে ভালো পারফর্ম করার।
প্রশ্ন: জাতীয় দল নিয়ে ভাবনা…
প্রবীর: জাতীয় দল নিয়ে সবারই স্বপ্ন থাকে। আমারও রয়েছে। সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য পরিশ্রম করব। সুযোগ না পেলেও, আমি যেটুকু পেয়েছি, তাতে সন্তুষ্ট। আমি খুশি থাকতে ভালোবাসি, সময়ের সঙ্গে মানিয়ে চলব। এতদিন যে ক্লাবেই খেলেছি, সর্বস্ব দেওয়ার চেষ্টা করেছি, বেঙ্গালুরুতেও একই চেষ্টা করব।
প্রশ্ন: সুনীল ছেত্রীর মতো অন্যতম সফল ফুটবলারের পাশে খেলবেন…
প্রবীর: সুনীল ভাই আমাদের কাছে কিংবদন্তি। ওর সঙ্গে খেলা, ড্রেসিংরুম শেয়ার করার জন্য মুখিয়ে রয়েছি। কিংবদন্তির সঙ্গে খেলার ইচ্ছে সবারই থাকে। সুনীল ভাইয়ের থেকে অনেক কিছু শেখার রয়েছে। ওর বিরুদ্ধে খেললেও কখনও আড্ডা মারার সুযোগ পাইনি। সেটা এ বার হবে। কী করলে আরও দীর্ঘ সময় ধরে খেলা যাবে, সেটা জানার চেষ্টা করব। ওর ডায়েটও জানতে হবে।
প্রশ্ন: রয় কৃষ্ণা আপনার বন্ধু। তিনিও কি আপনার সঙ্গে বেঙ্গালুরুতে যেতে পারেন?
প্রবীর: রয়ের সঙ্গে বন্ধুত্ব খুবই ভাল। রোজই কথা হয়। তবে এসব নিয়ে কেউ কারও কাছে জানতে চাই না। বন্ধুত্ব, পেশাদারিত্বের জায়গা আলাদা। যেমন আমার বিষয়ে জানিয়েছি, ও কোথাও সই করলে নিশ্চয়ই জানতে পারব।