দিন-রাতের মোতেরায় বিরাটদের চাপে রাখতে পারে রুটরা

এই টেস্টে ভারতের প্রাপ্তি তিনটে। এক, অক্ষর প্যাটেল নামের ছেলেটা। দুই, রবিচন্দ্রন অশ্বিন। তিন, দারুণ ঘুরে দাঁড়ানো ভারত আত্মতুষ্ট নয়, আত্মবিশ্বাসী।

দিন-রাতের মোতেরায় বিরাটদের চাপে রাখতে পারে রুটরা
Follow Us:
| Updated on: Feb 16, 2021 | 7:12 PM

শরদিন্দু মুখোপাধ্য়ায়

ইংল্যান্ডের প্রাক্তনদের টুইটগুলো দেখতে খুব ইচ্ছে করছে। চিপকের পিচ নিয়ে নতুন কী বলছে ওরা? খেলার অযোগ্য? স্পিনের সামনে ফেলে জোর করে হারানো হল রুটদের? ইংরেজদের এই এক সমস্যা, হারটা কিছুতেই মেনে নিতে পারে না ওরা। কিছু না কিছু একটা খুঁত ঠিক খুঁজে বের করবে! মজার কথা হল, ইংল্যান্ডের প্রাক্তন ক্রিকেটাররা, ওদের দেশের মিডিয়া কী বলল, তাতে কিন্তু কিছু যায় আসে না। ভারতের দারুণ প্রত্যাবর্তনের সামনে সে সব গুরুত্বহীন।

সত্যি বলতে কী, ম্যাচটা আজই যে শেষ হবে, জানতাম। শুধু অপেক্ষায় ছিলাম, লাঞ্চের আগে, না লাঞ্চের পর। সোজা কথায়, চিপকে শেষ দিন ব্যাট করে টেস্ট বাঁচানো সম্ভব ছিল না। ভারত যে বিশাল রানের টার্গেট দিয়েছিল, তাড়া করে জেতাও সম্ভব ছিল না। দুরন্ত ফর্মে থাকা বিরাটদের তিন স্পিনার, তেতে থাকা ভারতকে সামলানো সহজ হত না। এতটাও ভাবতে হত না, যদি না রুট ক্রিজে থাকত। এই ইংল্যান্ড টিমে একমাত্রই স্পিনটা খেলতে জানে। রুটকে ৩৩ রানের মাথায় ফেরাল অক্ষর। তার পর শুধু উইকেট গুনে যাওয়ার কাজটা বাকি ছিল। এই টেস্টে ভারতের প্রাপ্তি তিনটে। এক, অক্ষর প্যাটেল নামের ছেলেটা। দুই, রবিচন্দ্রন অশ্বিন। তিন, দারুণ ঘুরে দাঁড়ানো ভারত আত্মতুষ্ট নয়, আত্মবিশ্বাসী।

অক্ষর যে এই পিচে দারুণ সফল হবে, জানতাম। উইথ দ্য আর্ম বল করতে জানে। সোজা বলে উইকেট যে কারণে বেশি পায়। টার্নের সঙ্গে পেসটাও নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। যে কারণে ওর বল বোঝাই যায় না। আর, একটা নির্দিষ্ট লেন্থে টানা বল করে যাওয়ায় ক্ষমতা আছে। এই অক্ষরে আমি মুগ্ধ। অভিষেক টেস্টে যে কোনও ক্রিকেটারের মধ্যে একটা জড়তা থাকে। অক্ষরের মধ্যে সেটা দেখিনি। বরং প্রথম বল থেকেই নিজেকে নিয়ে ভেবেছে। বিপক্ষকে চাপে রাখার পথ খুঁজেছে। সেরাটা দিয়েছে। প্রথম ইনিংসে ও ২ উইকেট নিয়েছিল। দ্বিতীয় ইনিংসে নিল ৫ উইকেট। অভিষেক ম্যাচে সব মিলিয়ে ১০০ রান দিয়ে ৭ উইকেট নিলে যে কেউ তৃপ্তি পাবে। রুট, পোপকে ফিরিয়ে ভারতের জয়ের রাস্তাটা অনেক মসৃণ করে দিয়েছিল অক্ষর। এই টেস্ট ম্যাচ কিন্তু সব অর্থেই রবিচন্দ্রন অশ্বিনের। প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছিল। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে সেঞ্চুরি। আবার বল করতে এসে সব মিলিয়ে তিন উইকেট। সেঞ্চুরি ও ৮ উইকেট নিয়ে ও ম্যাচের সেরা তো বটেই। ঘরের মাঠ যে কোনও ক্রিকেটারকে বাড়তি এনার্জি দেয়। সেটাই চিপক থেকে পেয়েছে অশ্বিন। টিমের সিনিয়র হিসেবে সব সময় বাড়তি কিছু দেওয়ার তাগিদ দেখতে পাই অশ্বিনের মধ্যে। যে কারণে ও টিমের স্তম্ভ।

আরও পড়ুন:ডার্বিতেই এসিএলের স্বপ্ন মুঠোয় ধরতে চান রয়-প্রীতমরা

চিপকের গল্প শেষ। এখন সবাই ভাবতে শুরু করবে আমেদাবাদের দুটো টেস্ট নিয়ে। মোতেরায় তৃতীয় টেস্টটা দিন-রাতের। পরেরটা লাল বলের। একটা জিনিস মনে হচ্ছে, গোলাপি টেস্ট কিন্তু ইংল্যান্ডের কাছে সিরিজে ফেরার বিরাট সুযোগ। অ্যান্ডারসন, আর্চার, ব্রডকে নিয়েই নামবে ওরা। দিন-রাতের টেস্টের চরিত্রও অন্য রকম হয়। বল বেশি সুইং করে। সন্ধের পর খেলা কঠিন হয়। বিরাটদের কিন্তু গোলাপি বলে একটু দুর্বলতা আছে। বুমরাকে ফেরানো হবে ওই ম্যাচে। ইশান্ত, সিরাজও থাকবে হয়তো টিমে। এই ম্যাচটা কিন্তু বিরাটদের অঙ্ক কষে খেলতে হবে। মোতেরায় আরও একটা উত্তেজক লড়াইয়ের অপেক্ষায় থাকছি।