Shohreh Bayat: ইরানের রেফারি সোহরের অভিজ্ঞতা যদি জানেন, চমকে উঠবেন

Anti Hijab Protest: ইরানি দাবা রেফারি সোহরে বায়াত সম্প্রতি যে অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন, তা থেকে পরিষ্কার সে দেশে খেলোয়াড়দের থাকা কেন এতটা কঠিন।

Shohreh Bayat: ইরানের রেফারি সোহরের অভিজ্ঞতা যদি জানেন, চমকে উঠবেন
ইরানের রেফারি সোহরের অভিজ্ঞতা যদি জানেন, চমকে উঠবেন
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 14, 2023 | 8:30 PM

জেনেভা: ইরানে (Iran) হিজাব বিরোধী আন্দোলন এখনও সক্রিয়। শুধু তাই নয়, সেখানে কেউ হিজাব বিরোধী আন্দোলনে (Anti Hijab Protest) যুক্ত হলে এখন আর রক্ষা পাচ্ছে না। ইরানি দাবা (Chess) রেফারি সোহরে বায়াত (Shohreh Bayat) সম্প্রতি এক অপ্রীতিকর ঘটনা তুলে ধরেছেন। ইরানে আপাতত কোনও মহিলা গ্র্যান্ডমাস্টার নেই। সেখানে পাঁচজন সক্রিয় গ্র্যান্ডমাস্টার ছিলেন। তাঁরা অন্য দেশে চলে গিয়েছেন। বলা ভালো তাঁদের অন্যত্র আশ্রয় নিতে হয়েছে। ইরানি দাবা রেফারি সোহরে বায়াত সম্প্রতি যে অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন, তা থেকে পরিষ্কার সে দেশে খেলোয়াড়দের থাকা কেন এতটা কঠিন। বিস্তারিত TV9Bangla-র এই প্রতিবেদনে।

ইরানি দাবা রেফারি সোহরে বায়াত জানান, যে আইসল্যান্ডে একটি টুর্নামেন্ট চলাকালীন নিজের দেশের এক প্রতিযোগীকে সমর্থন করার জন্য তাঁকে একটি কমিশন থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। সঠিকভাবে হিজাব না পরার ‘অপরাধে’ গত ১৬ সেপ্টেম্বর পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হয় মাহসা আমিনির। তার পর থেকে হিজাব বিরোধী আন্দোলনে শুরু করে একাধিক দেশ। তাতে যুক্ত হয় বিভিন্ন ব্যক্তি। উল্লেখ্য, বায়াত গত বছরের অক্টোবরে এক টুর্নামেন্টে “নারী, জীবন, স্বাধীনতা” টি-শার্ট পরেছিলেন। ইন্টারন্যাশনাল চেজ ফেডারেশনের পক্ষ থেকে বায়াতকে এই টি-শার্ট বদলে নিতে বলা হয়।

৩৫ বছর বয়সী বায়াত সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে একটি ভিডিয়ো সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমি মনে করি না এই বিষয়ে চুপ থাকা স্বাভাবিক।” হিজাব নীতি নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সংঘর্ষ এবং সরকার বিরোধী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করার জন্য বায়াত ক্রীড়া ব্যক্তিত্বদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য একজন। তিনি বলেন, “এটি একটি বড় মানবাধিকারের বিষয়। আমি মনে করি আমরা যদি এই বিষয়গুলো নিয়ে চুপ থাকি, তা হলে আমরা নিজেদের ক্ষমা করতে পারব না।”

বায়াত ২০২০ সালে চিনে অনুষ্ঠিত একটি টুর্নামেন্টে প্রধান সালিশি হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। হিজাব নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য তাঁকে অভিযুক্ত বলে দাবি করা হয়েছিল। তিনি বলেন যে, “দাবা ফেডারেশনের সভাপতি আমাকে একটি বার্তা পাঠিয়েছেন। তিনি জানান, আমার হিজাব ঠিক ছিল না। এই বার্তা আমাকে ক্ষিপ্ত করে তুলেছিল।” আন্তর্জাতিক দাবা ফেডারেশনের রাষ্ট্রপতি দাবি করেন, বায়াতের হিজাব অনেকটা পেছনে ছিল, যে কারণে তাঁর অনেক বেশি চুল প্রকাশ্যে ছিল।

বায়াত বলেন, “আমি তাঁর বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কিন্তু এমনভাবে যাতে আমি এখনও ইরানে ফিরতে পারি। এবং সমস্যায় না পড়ি। ওই বার্তা পাওয়ার পরের দিন আমি আমার হিজাবকে একটু পেছনে ঠেলে দিয়েছিলাম।” তিনি এর পর ভেবেছিলেন সেটা ঠিক ছিল। ওই সময় বায়াত ইরান থেকে আরও বার্তা পেতে থাকেন। ইরানে তাঁর হিজাব ‘সঠিক’ না পরার প্রচুর ছবি ছড়িয়ে পড়েছিল। তাঁর পরিচিত অনেকেই তাঁকে যে কারণে দেশে ফিরে আসতে নিষেধ করেছিল।

পরিস্থিতি এতটাই উত্তেজনাপূর্ণ ছিল যে বায়াত ইরানে নিরাপদে ফিরে আসার জন্য ইরানী দাবা ফেডারেশনের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করেছিলেন। তারা বায়াতকে কী করতে হবে, তার একটি ২ পৃষ্ঠার তালিকা দিয়েছিল। বায়াত জানতেন যে, তাঁর পক্ষে ইরানে ফিরে আসা নিরাপদ হবে না। তাঁর কাছে বড় সমস্যা ছিল অন্য কোন দেশে তাঁর বৈধ বাসস্থানও ছিল না। এবং তার স্বামীও ইরানে ছিলেন।

এর পর একজন আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন বায়াত। যিনি তাঁকে কী করা দরকার সে বিষয়ে পরামর্শ দেন। বায়াতকে অবশেষে যুক্তরাজ্যে আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল। দেড় বছর পর তার স্বামীও ইরান থেকে পালাতে সক্ষম হয়। এ বার সেই বায়াতই মুখ খুলেছেন তাঁর দেশের কড়া নিয়মের বিরুদ্ধে। উল্লেখ্য, হিজাব বিরোধী আন্দোলনে কয়েক হাজার পুরুষ-নারীকে গ্রেফতার করেছে ইব্রাহিম রইজির সরকার। তবে গ্রেফতার করেই ক্ষান্ত থাকেনি ইরান সরকার। অভিযোগ উঠেছে, হিজাব বিরোধী আন্দোলনে যুক্ত সকলের ওপর অকথ্য অত্যাচার চালানো হচ্ছে। সম্প্রতি ইরানে তিন জনকে ফাঁসিও দেওয়া হয়েছে।