সেলিব্রেশনে চাই বৌদির হাতের কষা মাংস, দাদাকে হারিয়ে আবদার মুখ্যমন্ত্রীর ভাইয়ের
রবিবাসরীয় বিকেলে দাদা অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Ajit Banerjee) ৩৭-২৪ ফলে হারিয়ে বিওএ সভাপতির ম্যাচ জিতে নিলেন ভাই স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় (Swapan Banerjee)।
কলকাতাঃ রবিবার মধ্য কলকাতার অভিজাত হোটেলে ছিল বেঙ্গল অলিম্পিক অ্যাসোশিয়েসনের (BENGAL OLYMPIC ASSOCIATION)নির্বাচন। সারা বছর অ্যাসোশিয়সনের কাজের ফিরিস্তি সাদামাঠা হলেও, নির্বাচনের দামামা কিন্তু বাজে উচ্চগ্রামে। এবারের নির্বাচনও তার অন্যথা হয়নি। এবার যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CHIEF MINISTER Mamata Banerjee) ২ ভাই যে ছিলেন সম্মুখ সমরে। দুই যুযুধান প্রতিপক্ষের মুখ দুজনই ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর দুই ভাই। আর লড়েছিলেন সভাপতি পদের জন্য। প্রথমবার। রবিবাসরীয় বিকেলে দাদা অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়কে(Ajit Banerjee) ৩৭-২৪ ফলে হারিয়ে বিওএ সভাপতির ম্যাচ জিতে নিলেন ভাই স্বপন বন্দ্য়োপাধ্যায়(Swapan Banerjee)।
মুখ্যমন্ত্রীর ২ ভাই যখন সেয়ানে-সেয়ানে
এদিনের নির্বিষ বিওএ নির্বাচনে উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দুই ভাইয়ের বিওএ সভাপতি পদে লড়াই-ই। ঘনিষ্ঠমহলসূত্রের খবর, বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের অনেকেই চাননি বিওএ নির্বাচনে সম্মুখসমরে উত্তীর্ণ হোন দাদা-ভাই। দুইপক্ষকেই বুঝিয়ে নির্বাচন থেকে সরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি বলে সূত্রের খবর। কারন, দুজনেই ময়দানের রাজনীতিতে অনেকদিন ধরেই বিদ্যমান।
দাদা-ভাইয়ের ময়দানী রাজনীতির ইতিহাস
দাদা অজিত বন্দ্যোপাধ্যায় তো বহুদিনের পোড়খাওয়া ময়দানি কর্তা। বাড়ির পাশের ক্লাব কালিঘাট এমএসের কর্তা তিনি বহুদিনের। পরে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত হওয়া। এরপর বিওএ ও আইএফএ-তে নিজেকে মেলে ধরেন ময়দানের পরিচিত ‘ষষ্ঠীদা’। বর্তমানে তিনি আইএফএ সভাপতি।
অন্যদিকে ভাই স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়ও ময়দানের রাজনীতিতে জড়িত অনেকদিনই। হকি, বক্সিং অ্যাসোশিয়েসনে জড়িত বহুদিন ধরে। শুধু তাই নয়, মোহনবাগান কর্তা হিসেবেও জড়িত ময়দানে পরিচিত ‘বাবুনদা’। দাদা অজিত যখন ইস্টবেঙ্গলের কার্যকরী কমিটির সদস্য, ভাই তখন মোহনবাগানের ফুটবল সচিব। ফুটবল সচিব হওয়ার আগে সামলেছেন মাঠ সচিবের দায়িত্ব।
বিওএ-র সুপার সানডে
দুই ভাই ময়দানের দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবের কর্তা। রবিবার দুই ভাই বিওএ নির্বাচনে নেমেছিলেন সেয়ানে সেয়ানে লড়াইয়ে। এদিন নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ হয় দুপুর ২টো নাগাদ। ৩টে থেকে গণনা শুরু হতেই প্রথম থেকে কোনঠাসা হতে শুরু করেন দাদা অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়। যত সময় গড়াতে থাকে ততই চওড়া হতে থাকে ভাইয়ের হাসি।
এদিন ৬৪জন ভোটারের মধ্যে ৬১ জন ভোট দেন। ৩জনের মধ্যে ব্যাডমিন্টন কর্তা শেখর বিশ্বাস করোনাআক্রান্ত হওয়ায় ভোট দিতে পারেননি। বিওএ-র নির্বাচন কমিশনেের সঙ্গে যুক্ত থাকার জন্য ভোট দিতে পারেননি ভলিবল কর্তা পল্টু রায়চৌধুরি। বক্সিং অ্যাসোশিয়েসনের আইনি জটিলতার জন্য দেননি তাঁদের কর্তাও। ৬১টি ভোটের মধ্যে ৩৭টি ভোট পেয়ে দাদা -ভাইয়ের ম্যাচ জিতে নেন স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, স্বপনের প্যানেলের সচিব পদে দাঁড়ানো জহর দাস প্রতিপক্ষ বিশ্বরূপ দে-কে হারান ৩৮-২৩ ফলে।
যুদ্ধ ভুলে শুভেচ্ছা বিনিময়
নির্বাচনের ফল প্রকাশের কয়েক মিনিটের মধ্যে অতীত দুই-ভাইয়ের মধ্যে যুদ্ধের আবহ। দাদাকে রসগোল্লা খাইয়ে মিষ্টিমুখ করালেন ভাই স্বপন। আর সভাপতি পদে জয়ী ভাই স্বপনকে মালা পরিয়ে দিলেন বিদায়ী সভাপতি দাদা। জয়ের পর ভাইয়ের দাবি, ” বাড়ি ফিরে বৌদির হাতে কষা মাংস খেয়েই দাদাকে হারানোর সেলিব্রেশন করতে চান তিনি।” দিদি মুখ্যমন্ত্রী। তাই তো আপনাদের নির্বাচন আলাদা গুরুত্ব পেয়েছিল? ভাই স্বপনের সাফ কথা, ” দিদি আমার আর দাদার বিষয় নিয়ে কোনও কথা বলেন না। তবে জয়ের পর বাড়িতে গিয়ে দিদিকে নমস্কার করব।”
আর হারের পর অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছোট্ট মন্তব্য, ” নতুন টিম ভাল কাজ করুক। শুভেচ্ছা জানাই।”