Farman Basha: প্রশংসা পেয়েছিলেন মোদীর, জাতীয় পুরস্কার ফেরানোর হুঁশিয়ারি সেই প্যারালিম্পিয়ানের
জাতীয় পুরস্কার ফেরানোর হুঁশিয়ারি দিলেন পাঁচবারের প্যারালিম্পিয়ান এবং কোচ ফরমান বাশা। কী কারণে অভিমান হল প্যারা এশিয়াডে তিনবারের পদকজয়ী এই ভারোত্তলক।
নয়াদিল্লী: শারীরিক সমস্যাকে জয় করে দেশের ক্রীড়াজগতে তাঁর অবদানকে কুর্নিশ জানিয়েছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। টোকিয়ো অলিম্পিকসের পর প্রধানমন্ত্রীর পাশে তাঁর ছবি নেটমাধ্যমে খুঁজলেই পাওয়া যাবে। পাঁচবারের সেই প্যারালিম্পিয়ান (Paralympics) ফরমান বাশার (Farman Basha) মুখে হঠাৎই জাতীয় পুরস্কার ফেরানোর কথা। দেশকে প্রতিনিধিত্ব করার পাশাপাশি কোচিংও করান তিনি। কিন্তু এমন কী হল যে ৪৮ বছর বয়সী এই অ্যাথলিট পুরস্কার ফেরানোর চিন্তা ভাবনা করছেন ? জানা গিয়েছে, অর্জুন পুরস্কারে সম্মানিত বাশার কোচিং চুক্তি পুনর্নবীকরণ করতে চাইছে না স্পোর্টস অথরিটি অব ইন্ডিয়া (SAI)। বিষয়টি ফরমান বাশাকে জানানো হলে বেজায় ক্ষুব্ধ হন। চুক্তি পুনর্নবীকরণ না হলে পুরস্কার ফেরানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
এই বর্ষীয়ান প্যারা ভারোত্তলক ভিন্ন ভিন্ন প্রতিযোগিতায় সম্প্রতি ছয়টি পদক ঝুলিতে পুরেছেন। তার মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত এশিয়া-ওশিয়ানিয়া বিশ্ব প্যারা পাওয়ারলিফটিং চ্যাম্পিয়নশিপের মাস্টার্স এবং ওপেন বিভাগে চার চারটি রূপোর পদক। তারপরও নিজের প্রতি এই অন্যায় মেনে নিতে পারছেন না তিনি। ইতিমধ্যেই চুক্তি পুনর্নবীকরণের আর্তি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের দরজায় কড়া নেড়েছেন। সাই যেন তাঁর কোচিং চুক্তি মেয়াদ বাড়ায় তার আবেদন করেছেন। তিনি বলেন, “আমি এখনও অ্যাথলিটদের দেশের হয়ে পদক জয়ের জন্য তৈরি করতে পারি।” তিনবারের প্যারা এশিয়ান গেমসে পদক জয়ী ফরমান বাশা ২০০৮ সালে অর্জুন পুরস্কার এবং একলব্য পুরস্কারে ভূষিত হন। তিনিই হলেন একমাত্র প্যারা ভারোত্তলক কোচ যাঁর ২০১৫ সাল থেকে সাইয়ের সঙ্গে চুক্তি রয়েছে।
যে স্পোর্টস অথরিটি অব ইন্ডিয়া ফরমান বাশাকে আজ চাইছে না সেই তারাই অতীতে দু’দুবার সেরা কোচের পুরস্কার পান সাইয়ের তরফে। গতবছরের ১৭ নভেম্বর তাঁকে সেরা কোচের পুরস্কারে ভূষিত করেছিল সাই। তিন মাসের মধ্যে সেই ছবিটা পুরোপুরি উল্টে গিয়েছে। চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি সাইয়ের এই কর্তা তাঁকে চুক্তির পুনর্নবীকরণ না করা হবে না বলে জানিয়ে দেন। ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই চুক্তি ছিল। এরপর ২৫ মে বাশা-সহ আরও চারজন কোচকে বেঙ্গালুরুর ন্যাশনাল সেন্টার অব এক্সেলেন্সের কোয়ার্টার খালি করে দেওয়ার নির্দেশ দেয় সাই। ৫ জুনের মধ্যে কোয়ার্টার খালি করার সময় দেওয়া হয়।
ভারাক্রান্ত প্যারা অ্যাথলিট প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে লিখেছেন, “গত তিনমাস ধরে মাইনে ছাড়াই অ্যাথলিটদের ট্রেনিং করিয়ে যাচ্ছি। যাতে আসন্ন আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের জন্য তারা তৈরি থাকতে পারে। এর মধ্যে বার্মিংহাম কমনওয়েলথের অ্যাথলিটরাও রয়েছে। বলতে ভীষণ খারাপ লাগছে যে আমার এত পরিশ্রম সব ব্যর্থ হচ্ছে। এভাবে কী করে ট্রেনিং চালিয়ে যাব?” তিনি আরও বলেন,”আমার মতো বিশেষভাবে সক্ষম অ্যাথলিটের প্রতি যে ভেদাভেদ করা হচ্ছে তা স্পষ্ট। এতদিন যা অর্জন করেছি তাতে আমি সাইয়ের স্থায়ী কোচের দায়িত্ব পাওয়ার যোগ্য।”
সাকিনা খাতুন, রামুভাই, জবি ম্যাথু, আবদুল সালেমের মতো প্যারা অ্যাথলিটরা কোচ ফরমান বাশার তত্ত্বাবধানেই উঠে এসেছেন। ২০১৪ সালের গ্লাসগো প্যারা কমনওয়েলথে প্রথম মহিলা প্যারা অ্যাথলিট হিসেবে পদক জেতেন সাকিনা। টোকিয়ো অলিম্পিকসেও তাঁর পারফরম্যান্স ছিল নজরকাড়া।