Tokyo Olympics 2020: লড়াকু সতীশকে কুর্নিশ
Satish Kumar: প্রথম অলিম্পিকের স্মৃতিটা সুখকর না হলেও সতীশ পাশে পেলেন গোটা দেশকে। সাতটা সেলাই নিয়ে তাঁর অলিম্পিক রিংয়ে নামার গল্প সিনেমাকেও হার মানাবে!
টোকিও: যে কোনও সিনেমাকে হার মানাবে আর্মি অফিসারের রিংয়ে পৌঁছানোর গল্প। প্রথম বাউটে যেভাবে ক্ষতবিক্ষত হয়েছিলেন, তাতে মনে হয়েছিল তাঁকে হয়তো কোয়র্টার ফাইনালে দেখা যাবে না। কিন্তু, সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে টপকে শেষ পর্যন্ত রিংয়ে নেমেছিলেন সতীশ কুমার (Satish Kumar)। উজবেকিস্তানের বাখোদির জালোলভের (Bakhodir Jalolov) বিরুদ্ধে ৫-০ ব্যবধানে হেরে গেলেন সতীশ, কিন্তু তাঁর এই লড়াইকে চিরকাল কুর্নিশ করবে ভারতীয় খেলাধূলা।
প্রথম বাউটের পর থেকেই সতীশকে নিয়ে তীব্র আলোচনা চলছিল। জামাইকান প্রতিপক্ষ সতীশকে এমন মারেন, যার ফলে সতীশ ডান চোখের ভ্রু-তে এবং থুতনিতে চোট পান। মোট ৭টি সেলাই পড়ে ক্ষতস্থানে। এই পরিস্থিতিতে শনিবার থেকেই একটা বিষয় নিয়েই আশঙ্কা ছিল, উত্তরপ্রদেশের ছেলে কী কোয়ার্টার ফাইনাল খেলতে আদৌ নামতে পারবেন! এই প্রথম অলিম্পিকে সুপার হেভিওয়েট বিভাগে ভারতের কোনও বক্সার নেমেছিলেন। ৯১+কেজি বিভাগের কোয়ার্টার ফাইনালে তিনি নামবেন কিনা সে নিয়ে সংশয় তৈরি হয় রিংয়ে নামার জন্য দরকার ছিল ডাক্তারদের ফিট সার্টিফিকেট। রবিবার সকালে ভারতীয় বক্সারকে পরীক্ষার পর রিংয়ে নামার অনুমতি দেন তাঁরা। সতীশ অবশ্য চোট উপেক্ষা করে রিংয়ে নামার জন্য মরিয়া ছিলেন। অলিম্পিক পদক ছোঁয়ার তাগিদ দেখিয়েছিলেন। তাই শরীর সঙ্গ না দিলেও মনের জোরেই জালোলভের বিরুদ্ধে বাউটে নামেন।
শুরু থেকেই সতীশের ওপর চাপ তৈরি করতে থাকেন জালোলভ। ওই রাউন্ডে কিছু স্লথ ছিলেন সতীশ। সেই সুযোগটাই নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন জলোলভ। একের পর এক পাঞ্চে বিপর্যস্ত করে দিয়েছিলেন ভারতীয় বক্সারকে। সতীশ দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন। জালোলভ তাঁর থেকে লম্বা হলেও পাল্টা চাপ তৈরি করতে থাকেন। তৃতীয় রাউন্ড চলাকালীন জলোলভের জ্যাবে ফের ক্ষতস্থান থেকে রক্ত বেরতে শুরু করে। সামান্য পরিচর্যার পর আবার রিংয়ে ফেলেন সতীশ। লড়াই চালান শেষ মুহূর্ত অবধি। তা সত্ত্বেও জয়ের স্বাদ পাননি সতীশ। সাতটা সেলাই নিয়ে সতীশের রিংয়ে নামা চিরকাল খেলাধূলার জগতে জ্বলন্ত উদাহরণ হয়ে থাকবে। এখানেই শেষ হল সতীশের টোকিও সফর। কিন্তু ভারতবাসী তাঁর লড়াইকে কুর্নিশ জানাতে ভোলেনি। সতীশের এই লড়াই ভারতীয়দের মনে গাঁথা থাকবে চিরকাল। প্রথম অলিম্পিকের স্মৃতিটা সুখকর না হলেও সতীশ পাশে পেলেন গোটা দেশকে।
অলিম্পিকের আরও খবর পড়তে ক্লিক করুনঃ টোকিও অলিম্পিক ২০২০