Car Wrapped In Cow Dung: তাপপ্রবাহের সঙ্গে মোকাবিলা করতে মারুতি ওমনি ভ্যানে গোবরের আবরণ, সত্যিই কি ঠান্ডা হয়?
Cow Dung Treatment For Cars: বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন গাড়িতে দেখা গিয়েছে গোবরের আবরণ। সম্প্রতি একটি Maruti Suzuki Omni গাড়িতেও এমনটা দেখা গিয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, গরমের সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য একটা গাড়িতে গোবরের কোটিং কতটা কার্যকর?
প্রচণ্ড গ্রীষ্মের দাবদাহে ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় বিশেষ করে উত্তর ভারতের মানুষজনকে। গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বেরোনো মানেই পুড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা। সব গাড়িতে যে এসি থাকবে বা এসি বসানো হবে, এমন তো না-ও হতে পারে। আর প্রচণ্ড গরমে সাধের গাড়িটাকে অন্য ভাবে কাজে লাগানোর বিকল্প উপায় উত্তর ভারতের মানুষজনের থেকে আর ভাল কারাই বা জানে। গোবর দিয়ে গোটা গাড়িটা মুড়ে দিলেই একবারে ঠান্ডা ঠান্ডা কুল কুল হয়ে যাবে। মনেই হবে না যে, গাড়িটা গরমে চলছে। বিগত কিছু বছর আগে গোবরে মোড়া একটি গাড়ির ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছিল। ফের তেমনই একটা গাড়ির সন্ধান মিলল। আর এবারের গোবর মোড়া (Cow Dung Coating) গাড়িটি হল একটি মারুতি সুজ়ুকি ওমনি (Maruti Suzuki Omni) ভ্যান। গাড়ি বিষয়ক সংবাদমাধ্যম Rushlane সেই গাড়িটিকে সর্বপ্রথম চিহ্নিত করে। সেই ছবিই এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।
গরমের সঙ্গে মোকাবিলা করতে ওই মারুতি ওমনি ভ্যানের মালিক তাঁর গাড়িতে গোবরের পুরু আচ্ছাদন দিয়েছেন। গাড়িটার মেটাল সারফেসেও দেওয়া হয়েছে গোবর। বাদ রাখা হয়েছে কেবল মাত্র উইন্ডশিল্ড, বাম্পার এবং লাইট। জানা গিয়েছে, গাড়িটি মহারাষ্ট্রের পুণের।
এর আগেও অনেক গাড়িতে ব্যবহৃত হয়েছে গোবর
এই প্রথম বার যে কোনও গাড়িতে কাও-ডাং ট্রিটমেন্ট করা হয়েছে এমনটা নয়। এর আগেও একাধিক গাড়িতে এ ভাবে গোবর মাখিয়ে রাজপথে চালাতে দেখা গিয়েছে। কয়েক বছর আগে সেজাল শাহ নামের এক ব্যক্তি প্রথম কাও-ডাং র্যাপ গাড়ি ব্যবহার করেছিলেন। নিজেও জনপ্রিয় হয়েছিলেন, জনপ্রিয়তা দিয়েছিলেন এই পন্থাটিকে। সেজাল সে সময় জানিয়েছিলেন, কাও ডাং ব্ল্যাঙ্কেট তাঁর গাড়ির জন্য খুবই সহায়ক হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। তিনি আরও দাবি করেছিলেন, গাড়ির ভিতরে তাপমাত্রা খুবই নিয়ন্ত্রিত থাকে। সেজালের কথায়, বাইরের তাপমাত্রা যখন 45 ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল, তখন গাড়ির ভিতরে এসি না চালিয়েও তাপমাত্রা ছিল 36-37 ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এরপরে আর একটি ছবি ভাইরাল হয়। ডাক্তার নবনাথ দুধাল নামেরও এক ব্যক্তিও তাঁর মাহিন্দ্রা XUV গাড়িটি মুড়েছিলেন গোবরে। যে ছবিটি দেখা গিয়েছিল, তাতে লাইট ও কাঁচের জায়গা বাদ দিয়ে সম্পূর্ণ ভাবে গোবর দিয়ে আচ্ছাদিত করা হয়েছিল গাড়িটি। এতটাই পুরুত্ব ছিল সেই মাহিন্দ্রা গাড়ির কাও-ডাং ট্রিটমেন্টে, তাতে কোনও দিক থেকে গাড়ির ভিতরটা গরম হওয়া সম্ভব ছিল না। ওই গাড়িতে তিনটি লেয়ারের গোবর দিয়ে কোটিং করেছিলেন নবনাথ দুধাল।
তিরুমালার একটি কমপ্লেক্সের ভিতরে একটি পুরনো প্রজন্মের Hyundai i20-র সন্ধান মিলেছিল, যাতে কাও-ডাং কোটিং দেওয়া হয়েছিল। সেই গাড়িটির মালিক কে ছিলেন, সে বিষয়ে কোনও তথ্য মেলেনি। স্থানীয়রা জানিয়েছিলেন যে, তিরুমালা মন্দির দর্শনে এসেছিল একটি পরিবার, গাড়িটি তাঁদেরই। যাঁরা প্রথম বার এমন একটা অবাক করা গাড়ি লক্ষ্য করেন, তাঁরাই ছবি তোলেন এবং পরবর্তীতে ভাইরালও করেন।
সত্যিই কি গাড়ির উপরে গোবরের আবরণ কাজ করে
বৈজ্ঞানিক ভাবে, এই ধরনের গোবরের আবরণ মাটির কুঁড়ে ঘরে ব্যবহার করা হয়। গোবরের আবরণ ব্যবহারের সবথেকে বড় সুবিধা হল, বাড়িতে দেওয়ার ফলে তা প্রায়শই আর্দ্র থাকে এবং পৃষ্ঠ থেকে জল বাষ্পীভূত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অভ্যন্তরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। এর আর্দ্র আবরণ নিশ্চিত করে যে, সূর্যের তাপ কেবিনে পৌঁছতে আরও বেশি সময় নেয়। যদিও একটা বিষয়ে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি যে, একটি গাড়িতে কতটা ভাল কাজ করে গোবরের আবরণ। যেহেতু বৃহৎ কাঁচের জানালা এবং উইন্ডশিল্ডের মাধ্যমে গাড়ির কেবিনে প্রচুর তাপ বিকিরণ করে, তাই গ্রিনহাউস প্রভাব এখনও গাড়ির কেবিনের তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে একটি প্রধান ভূমিকা পালন করে।