গাড়ি পরিষ্কার করার নামে FASTag অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গায়েব করা হচ্ছে, সত্যিই কী তাই?

FASTag Scam Fact Check: গাড়ি ধুয়ে দেওয়ার নাম করে স্মার্টওয়াচের মতো ছোট্ট একটি ডিভাইসকে কাজে লাগিয়ে সত্যিই কি ফাস্ট্যাগ অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গায়েব করা হচ্ছে? সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োটির সত্যাসত্য কতটা, জেনে নিন।

গাড়ি পরিষ্কার করার নামে FASTag অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গায়েব করা হচ্ছে, সত্যিই কী তাই?
ভাইরাল ভিডিয়ো থেকে নেওয়া স্ক্রিনশট।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 26, 2022 | 5:22 AM

সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো সম্প্রতি খুব ভাইরাল (Viral Video) হয়েছে। ঘটনাটিকে অনেকেই ‘FASTag স্ক্যাম’ আখ্যা দিয়েছেন। ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, লেভেল ক্রসিংয়ে গাড়ি সাফ করছে একটি ছেলে, যার হাতে রয়েছে স্মার্টওয়াচের মতো এক ডিভাইস। দাবি করা হচ্ছে, ওই ডিভাইসের সাহায্য নিয়ে গাড়ির কাচ পরিষ্কার করার সময় FASTag স্টিকারে স্ক্যান করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, সত্যিই কি এমনটা সম্ভব? ভাইরাল এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই (Fact Check) করে দেখল টিভি 9 বাংলা ডিজিটাল।

ঠিক কী দাবি করা হচ্ছে?

হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ-সহ আরও বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ব্যাপক হারে ভিডিয়োটি ছড়িয়ে পড়েছে। দেখা যাচ্ছে, গাড়ির উইন্ডস্ক্রিন পরিষ্কার করছে একটি ছেলে। আর গাড়ির ভিতরে বসে রয়েছেন দুই ব্যক্তি, যাঁরা ছেলেটির কার্যকলাপ ক্যামেরাবন্দি করছেন। ছেলেটির হাতে স্মার্টওয়াচের মতো একটি ডিভাইস দেখা গিয়েছে। যখন সে উইন্ডস্ক্রিন পরিষ্কার করছে, তখন হুট করেই মাঝখানে এসে গাড়ির FASTag স্টিকারে হাতে থাকা ওই স্মার্টওয়াচের মতো ডিভাইস দিয়ে স্ক্যান করছে।

বাচ্চাটি যখন চলে যাচ্ছে, ড্রাইভারের সিটে থাকা ব্যক্তিটি তাকে জিজ্ঞেস করে যে,টাকা না নিয়েই সে চলে যাচ্ছে কেন? ছেলেটিকে তিনি তখন বলেন, “তোমার হাতে কি ওটা একটা ঘড়ি?” দেখে মনে হয়, ছেলেটি ভাবে যে এই ধরনের স্ক্যাম সম্পর্কে ওই ব্যক্তি অবগত। তারপরই সে দৌড় লাগায়। আর তার পিছুপিছু ছুটতে থাকেন ড্রাইভারের বন্ধু। যখন তিনি ছেলেটিকে খুঁজে না পেয়ে ফিরে আসেন, তখন ড্রাইভার ওই ব্যক্তিকে স্ক্যামটি সম্পর্কে জানান।

ড্রাইভার বলেন, এখন এই ভাবে গাড়ি পরিষ্কার করার নামে FASTag স্টিকার স্ক্যান করে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। তিনি আরও জানান যে, অনেক সময় দেখা যায়, ওরা পরিষ্কার করে চলে যায় এবং গাড়ির মালিকের মোবাইলে নোটিফিকেশন আসে যে, তাঁর Paytm FASTag অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে।

প্রথমে এই ভিডিয়োটি ফেসবুকে পোস্ট করা হয়। আর সেই ভিডিয়োর ভিউ হয় প্রায় 24 মিলিয়নের কাছাকাছি। পরবর্তীতে তা ট্যুইটার-সহ আরও বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করা হয়।

এই ঘটনা কতটা সত্যি?

ট্যুইটারে ভাইরাল হওয়া এই ভিডিয়ো দেখে FASTag কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই ধরনের স্ক্যাম কখনই ঘটানো সম্ভব নয়। কারণ, FASTag ট্রান্জ়াকশন কেবল মাত্র রেজিস্টার্ড মার্চেন্ট ছাড়া আর কেউই করতে পারেন না। এটা একমাত্র টোল এবং পার্কিং প্লাজ়ার অপারেটরদের দ্বারাই সম্ভব। একটি বিবৃতি জারি করে FASTag কর্তৃপক্ষ আরও দাবি করছে, কোনও অননুমোদিত ডিভাইস NETC FASTag-এ কোনও রকমের আর্থিক লেনদেন করতে পারে না এবং এটি এক্কেবারে নিরাপদ।

এদিকে সরকারি ফ্যাক্ট চেকিং প্ল্যাটফর্ম ‘PIB Fact Check’-এর তরফেও এই ভুয়ো স্ক্যাম সম্পর্কে একটি ট্যুইট করা হয়েছে। PIB দাবি করেছে, এই ধরনের ট্রান্জ়াকশন কখনই সম্ভব নয় এবং ওপেন ইন্টারনেট থাকলেও তা করা যায় না। PIB তাদের বিবৃতিতে আরও বলছে, “প্রতিটি টোল প্লাজ়ার একটি অনন্য কোড রয়েছে, যা ম্যাপ করা থাকে নির্দিষ্ট ব্যাঙ্ক এবং জিও-কোডের মাধ্যমে। এই সমন্বয় ম্যাপ করা হয়, ন্যাশনাল ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন সিস্টেমের মাধ্যমে।”

সিদ্ধান্ত

এত দূর পর্যন্ত বিস্তারিত আলোচনা থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার যে, হাতে ডিভাইস নিয়ে গাড়ি পরিষ্কার করার নামে FASTag অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

* এই ভাইরাল ভিডিয়োটি ভুয়ো।

* এই ধরনের ট্রান্জ়াকশন কখনই সম্ভব নয়।

* প্রত্যেকটি টোল প্লাজ়ার একটি অনন্য কোড থাকে।