Hermit Spyware: নতুন হারমিট স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে নাগরিক জীবনে নজরদারি সরকারের, অ্যান্ড্রয়েড-আইফোন ব্যবহারকারীদের সতর্কবার্তা গুগলের

New Italian Spyware: পেগ্যাসাস এখন অতীত। সেই জায়গায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তার নাগরিকদের নজরদারি চালাতে ব্যবহার করছে হারমিট নামক একটি স্পাইওয়্যার। Android ও iOS ব্যবহারকারীদের জন্য তা যথেষ্ট বিপজ্জনক বলে দাবি করল Google।

Hermit Spyware: নতুন হারমিট স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে নাগরিক জীবনে নজরদারি সরকারের, অ্যান্ড্রয়েড-আইফোন ব্যবহারকারীদের সতর্কবার্তা গুগলের
খুব সাবধান! আতঙ্কের নতুন নাম এখন হারমিট।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 26, 2022 | 4:24 PM

আসাদ মল্লিক

পেগ্যাসাস (Pegasus) নামক একটি স্পাইওয়্যার (Spyware) নিয়ে কয়েক মাস আগে ঝড় ওঠে দেশের রাজনীতিতে। এবার সেই পেগ্যাসাসের উত্তরসূরি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিলেন গবেষকরা, যার নাম ‘হারমিট’ (Hermit)। দাবি, এই স্পাইওয়্যার ব্যবহার করছে বিভিন্ন দেশের সরকারই। সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে গবেষণা করছেন এমন বিশেষজ্ঞ দলের তরফে এই নতুন এন্টারপ্রাইজ়-গ্রেড অ্যান্ড্রয়েড স্পাইওয়্যারের বিষয়ে প্রথম জানানো হয়। মূলত এসএমএস-এর মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন খ্যাতনামা ব্যক্তির মুঠোফোনে নাকি ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে এই স্পাইওয়্যার। ব্যবসায়ী থেকে মানবাধিকার কর্মী, এমনকী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করেও ছাড়া হচ্ছে ভয়ঙ্কর হারমিট নামক স্পাইওয়্যারটি। সম্প্রতি গুগল-এর তরফ থেকেও জানানো হয়েছে যে, আইফোন এবং অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের জন্য হারমিট স্পাইওয়্যার হল বিপজ্জনক।

পেগ্যাসাসের সঙ্গে অনেক মিল হারমিটের

যদিও পেগ্যাসাস বা হারমিটের মতো সাইবার অস্ত্র এই প্রথম নয়। এর আগে সাইবার-নিরাপত্তা সংস্থা লুকআউট থ্রেট ল্যাবের বিশেষজ্ঞ দল ‘সার্ভিলেন্সওয়্যার’ নামক এক স্পাইওয়্যারের খোঁজ পেয়ে ছিলেন। আন্তর্জাতিক সূত্র মারফত দাবি করা হয়েছিল, ওই স্পাইওয়্যার কাজাখস্তান সরকার ব্যবহারও করেছে একাধিকবার। সরকারি নিয়ম-নীতির বিরুদ্ধে দেশব্যাপী আন্দোলনকে সমূলে বিনাশ করতেই ব্যবহৃত হয় সার্ভিলেন্সওয়্যার, মত বিশেষজ্ঞমহলের।

হারমিট সম্বন্ধে হাড়হিম করা তথ্য

‘হারমিট’ আসলে পেগ্যাসাসের মতোই এক মড্যুলার স্পাইওয়্যার। যে কোনও রকমের সিস্টেমে একবার ডাউনলোড হলেই খেলা শুরু করে হারমিট! এই স্পাইওয়্যার সাধারণত একটি রুটেড ডিভাইস হিসেবে সিস্টেমের পুরো নিয়ন্ত্রণ নিজের করায়ত্ত করে ফেলে। টার্গেট ডিভাইসে একবার হারমিট ঢুকে পড়লে আক্রান্তের অডিও রেকর্ড, কললিস্ট রেকর্ড, কল লগ, ব্যক্তিগত তথ্য, ছবি/ভিডিয়ো, ডিভাইসের স্থান, এসএমএস, ব্যাঙ্কিং তথ্য-সহ যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি সংগ্রহ করতে পারবে নিয়ন্ত্রণকারী।

হারমিট কারা তৈরি করেছে?

‘নানা জটিল অঙ্ক কষে ও লাগাতার নজরদারির পর এই স্পাইওয়্যারটিকে সনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। সম্ভবত ইতালীয় স্পাইওয়্যার নির্মাতা টাইকিল্যাব এসআরএল (Tykelab Srl) সংস্থা এই স্পাইওয়্যার সৃষ্টি করেছে’, সাইবার গবেষকরা ঠিক এমনটাই বলছেন। 2019 সালে ইতালির সরকার দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে এই স্পাইওয়্যার ব্যবহার করে বলে মত আন্তর্জাতিক কূটনীতিকদের। উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার কুর্দ অঞ্চলে ব্যক্তিগত কাজে এই স্পাইওয়্যার ব্যবহার করেন ধনকুবেররা, এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে একাধিক রিপোর্ট থেকে।

স্পাইওয়্যার তৈরির যজ্ঞলীলা চলছে তিন দশক ধরে

সাইবার বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, পেগ্যাসাসের জন্মদাতা সংস্থা এনএসও গ্রুপ টেকনোলজিস এবং গামা গ্রুপের মতো RCS Lab-ও প্রায় তিরিশ বছর ধরে এই ধরনের জটিল সফটওয়্যার নিয়ে গবেষণা করে চলেছে। ইন্টেলিজেন্সের তথ্য মোতাবেক, চিলি, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, মঙ্গোলিয়া, ভিয়েতনাম, তুর্কমেনিস্তান ও মায়ানমারের সামরিক ক্ষমতাকে নিজেদের অপারেশনে পাশে পায় আরসিএস ল্যাব।

টার্গেট হতে পারেন আপনিও

পেগ্যাসাস হোক বা হালের হারমিট, স্পাইওয়্যার নিয়ে যতবারই বিতর্ক দানা বেঁধেছে, ততবারই বৈধ ও আইনসম্মত উপায়ে স্পাইওয়্যার বিক্রির কথা জানিয়েছে এই সকল টেক সংস্থা। দেশের সুরক্ষা ও নিরাপত্তাকে নিশ্চিত করার কথা বললেও আদতে সেই কাজে কতটা দরকার এই স্পাইওয়্যার প্ৰযুক্তি, সে বিষয়ে বারংবার প্রশ্ন তুলেছেন মানবাধিকার কর্মীরা। জাতীয় নিরাপত্তার মোড়কে যে আসলে রাষ্ট্রশক্তির প্রধানরা সাইবার অস্ত্র হিসেবে হারমিটের মতো প্ৰযুক্তি ব্যবহার করে থাকেন, তা সাফ জানিয়েছেন গবেষকরা।