এলিজা কার্সন, মৃত্যুর সম্ভাবনা জেনেও প্রথম বার মঙ্গল পাড়ি দেবে যে মেয়ে

এলিজার জন্ম ২০০১ সালের ১০ মার্চ। পালক পিতা বার্ট কার্সনের কাছে মানুষ হয়েছে সে। ছোট থেকেই তারায় ভরা মহাকাশ হাতছানিতে হারিয়ে যেত সে। ভালবাসত ওই দূর গ্রহ-উপগ্রহের নানা অজানা গল্পের তল খুঁজে পেতে।

এলিজা কার্সন, মৃত্যুর সম্ভাবনা জেনেও প্রথম বার মঙ্গল পাড়ি দেবে যে মেয়ে
মঙ্গল গ্রহে পাড়ি দিতে প্রস্তুত
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 11, 2021 | 7:07 PM

এলিজা কার্সন। উইকিপিডিয়া বলছে বয়স মাত্র ১৯। গভীর গিরিখাত আর আগ্নেয়গিরি ঘেরা ‘লাল গ্রহ’র ডাক এসেছে তাঁর কাছে। যে ডাকের কাছে তুচ্ছ পৃথিবীর ভোগ-বিলাস। তুচ্ছ নিজের প্রাণও। আজ International Day of Women and Girls in Science। এই বিশেষ দিনে জেনে নিন ‘মঙ্গল কন্যা’র ১৯ বছরের জীবনের অদ্ভুত কিছু তথ্য।

এলিজার জন্ম ২০০১ সালের ১০ মার্চ। পালক পিতা বার্ট কার্সনের কাছে মানুষ হয়েছে সে। ছোট থেকেই তারায় ভরা মহাকাশ হাতছানিতে হারিয়ে যেত সে। ভালবাসত ওই দূর গ্রহ-উপগ্রহের নানা অজানা গল্পের তল খুঁজে পেতে। মেয়ের আগ্রহ দেখে বাবা তাঁকে অ্যালবামার এক স্পেস ক্যাম্পে নিয়ে যান। তখন তাঁর বয়স মোটে সাত। এখানেই শেষ নয়, মাত্র ১২ বছরেই সবচেয়ে কম বয়সী হিসেবে কুইবেক এবং তুরস্কে হওয়া নাসার বাকি বেস ক্যাম্পের প্রত্যেকটায় অংশগ্রহণকারী হিসেবে রেকর্ড করেন এলিজা।

বাবার কোলে ছোট্ট এলিজা

২০১৪-এর মধ্যেই ৯ টি রাজ্যে নাসার ১৪ টি ভিজিটিং সেন্টর পরিদর্শন করে এলিজা ছিনিয়ে নেন নাসার পাসপোর্ট প্রোগ্রামের প্রথম স্থানের অধিকার। ডাক পান নাসার এমইআর (মঙ্গল অভিযান)-এ। শুরু হয় তাঁর স্বপ্নপূরণের নতুন অধ্যায়। তবে স্বপ্নপূরণের এই নতুন অধ্যায়ে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমও তাঁর নিত্যদিনের সঙ্গী। ভার বিহীন স্থানে থাকার কৌশল, রোবোটিকস পদ্ধতি সহ আরও নানা বিষয়ে জোরদার ট্রেনিং চলছে তাঁর। নাসার পক্ষ থেকে তাঁকে দেওয়া হয়েছে কলনেমও। তা হল ব্লু-বেরি।

শিখতে হয়েছে নানা ধরনের ভাষাও। ইংরেজি, ফ্রেঞ্চ, চিনা এবং স্প্যানিশ ভাষায় এখন সাবলীল এলিজা। শুধু যে প্রথম মঙ্গলচারী হতে চলেছে এলিজা তা কিন্তু নয়। ২০১৬ সালে এলিজা (Project Polar Suborbital Science in the Upper Mesos) পসমেও অংশ নেয়। ১৮ বছরেই সে পেয়েছে পাইলট লাইসেন্স। আপাতত ফ্লোরিডার ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজিতে অ্যাস্ট্রোবায়োলজি নিয়ে পড়াশোনা করছে সে।

আরও পড়ুন:বছরের শেষ পূর্ণিমায় ‘কোল্ড মুন’, কবে, কখন দেখা যাবে ভারতে?

নাসা যদিও এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল এলিজার সঙ্গে এখনও পর্যন্ত কোনও মিশনের জন্য আনুষ্ঠানিক কথা বার্তা হয়নি, তবে এলিজা তাঁর ওয়েবসাইট এবং সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেল গুলিতে নাসার প্রসঙ্গ ব্যবহার করে আসছেন,  ব২০৩০ নাগাদ নাসার এই প্রথম বার মঙ্গলে মানুষ পাঠানোর মিশন আদপে সফল হবে কিনা তা কেউ জানে না। এলিজার আদপে যাওয়া হবে কিনা তাও অনিশ্চিত। তবে আন্তর্জাতিক বেশ কয়েকটি জার্নাল এবং সংবাদমাধ্যম থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মাঝের এই কয়েক বছরে এলিজা কোনও প্রকার বৈবাহিক সম্পর্কে না জড়ানোর অঙ্গীকার নিয়েছেন। জোর কদমে চলছে প্রস্তুতি। মঙ্গলে পৌঁছে গাছ লাগানোর স্বপ্ন দেখেন তিনি। মঙ্গল থেকে তাঁর পৃথিবীতে আর ফেরা হবে কিনা জানেন না এলিজা। বাবার আদর, চেনা চৌহদ্দি তাঁকে স্পর্শ করবে কিনা তার কোনও গ্যারান্টিও নেই। সে সবে অবশ্য কুছ পরোয়া নেই তাঁর। তাঁর ‘মঙ্গল হোক’।

আরও পড়ুন:গুগল ডুডলেও বৃহস্পতি-শনির মহামিলন, প্রায় চার শতক পর এত কাছাকাছি আসছে দুই গ্রহ