Flies Brain Hacked: এক মানুষ থেকে অন্যের মস্তিষ্ক মারফত যোগাযোগ স্থাপনে মাছিদের ব্রেন ‘হ্যাক’ করলেন বিজ্ঞানীরা

Brain To Brain Communication: মাছিদের ব্রেন হ্যাক করে তাদের রিমোট উপায়ে নিয়ন্ত্রণ করার প্রযুক্তি উদ্ভাবন করলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা। এর মাধ্যমে তাঁরা পরবর্তীতে এক মানুষ থেকে অন্য মানুষের মস্তিষ্কের যোগাযোগ স্থাপন করতে পারবেন।

Flies Brain Hacked: এক মানুষ থেকে অন্যের মস্তিষ্ক মারফত যোগাযোগ স্থাপনে মাছিদের ব্রেন 'হ্যাক' করলেন বিজ্ঞানীরা
মানুষের মস্তিষ্ক একে অন্যের সঙ্গে কথা বলবে, তার জন্য মাছিদের মস্তিষ্ক হ্যাক করলেন বিজ্ঞানীরা।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 03, 2022 | 6:52 PM

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকরা সম্প্রতি মাছিদের মস্তিষ্ক ‘হ্যাক’ করেছেন। তারপর সেই মস্তিষ্ক তাঁরা দূরবর্তী স্থান থেকে রিমোট উপায়ে নিয়ন্ত্রণ করারও নজির দেখিয়েছেন। একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা গিয়েছে, নতুন ওয়্যারলেস প্রযুক্তিটি গবেষকদের এক সেকেন্ডেরও কম সময়ে মাছির মস্তিষ্কে থাকা নিউরোন নিয়ন্ত্রণ করতে দেবে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কীভাবে মাছিদের মস্তিষ্ক হ্যাক করতে সক্ষম হলেন বিজ্ঞানীরা এবং কীভাবেই বা এই প্রযুক্তি ভবিষ্যতে তাঁদের সাহায্য করবে?

কীভাবে মাছিদের মস্তিষ্ক ‘হ্যাক’ করলেন গবেষকরা?

ইন্টারেস্টিং ইঞ্জিনিয়ারিং ডট কম নামক একটি পোর্টালের রিপোর্ট অনুযায়ী, এই মহৎ কাজের জন্য গবেষকরা জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং পদ্ধতির শরণাপন্ন হন, যার মাধ্যমে “মাছির নিউরোনাল কোষগুলিতে একটি বিশেষ আয়ন চ্যানেল প্রকাশ করে তাপ প্রয়োগের মাধ্যমে সক্রিয় করা যেতে পারে।” গবেষণায় দেখা গিয়েছে, এই আয়ন চ্যানেল যখন সক্রিয় হয়, তখন মাছিরা বাতাস বাইরের দিকে ছড়িয়ে দেয়। মিলনের আগের মুহূর্তে ঠিক এই ভাবেই বাতাস ত্যাগ করে মাছিরা।

এই বিশেষ আয়ন চ্যানেলের নিয়ন্ত্রণ নিতে বিজ্ঞানীরা মাছিদের শরীরে ন্যানো-পার্টিকল ইনজেক্ট করেন। এই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র পার্টিকল বা কণাগুলি একটি চৌম্বক ক্ষেত্রে দ্বারা উত্তপ্ত হতে পারে। তারপরে তাদের গতিবিধি রেকর্ড করার জন্য উপরে একটি ইলেকট্রোম্যাগনেট এবং একটি ক্যামেরা-সহ মাছিগুলিকে ঘিরে রাখা হয়েছিল।

Fly Brains

গবেষকরা যখনই ওই তড়িৎচুম্বক সক্রিয় করতে সক্ষম হন, ঠিক তখনই বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রটিও ন্যানো-কণাগুলিকে উত্তপ্ত করতে সক্ষম হয়। এই ভাবেই এই মাছিগুলির নিউরনগুলি সক্রিয় করা হয়েছিল, যার ফলে তারা তাদের ডানাগুলিকে বিজ্ঞানীদের উদ্দেশ্য হিসেবে ছড়িয়ে দেয়। বিজ্ঞানীরা দেখতে পেয়েছেন যে, এই মাছিগুলি তাদের ডানা ছড়িয়ে দিতে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটের জন্য প্রায় এক সেকেন্ডেরও অনেকটাই কম সময় নিয়েছে।

এ বিষয়ে রাইস ইউনিভার্সিটির অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর জেকব রবিনসন বলছেন, “জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, ন্যানোটেকনোলজি ও ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিশেষজ্ঞদের একত্রিত করে আমরা এই ধারণা সম্পর্কে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি।”

Fruit Fly Brains

গবেষণায় এই ধরনের ফ্রুট ফ্লাই ব্যবহৃত হয়েছিল।

ভবিষ্যতে কী প্রভাব ফেলতে পারে এই প্রযুক্তি?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশন এবং দ্য ডিফেন্স অ্যাডভান্স রিসার্চ প্রজেক্ট এজেন্সির গবেষকরা একটি ওয়্যারেবল হেডসেট তৈরি করার জন্য রিসার্চ করছেন, যা মানব-মস্তিষ্কের নিউরাল অ্যাক্টিভিটি পড়তে পারে। আর সেই গবেষণা দলেরই অন্যতম সদস্য হলেন রাইস ইউনিভার্সিটির অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর জেকব রবিনসন। গবেষণার প্রাথমিক পর্যায়টি তাঁরা শুরু করেছেন মাছির মস্তিষ্ক দিয়ে। বিজ্ঞানীদের আশা, এই প্রযুক্তিটি মানুষের ব্রেন টু ব্রেন কমিউনিকেশন বা মস্তিষ্ক থেকে মস্তিষ্কে যোগাযোগ নিউরোসার্জিক্যালি সক্ষম করার জবন্য ব্রেনের নিউরাল কার্যকলাপ সম্পর্কে লিখতে পারবে।

রবিনসন আত্মবিশ্বাসী যে, এই প্রযুক্তি একদিন মস্তিষ্কের দুরারোগ্য ব্যাধিগুলির চিকিৎসা করবে। এমনকি, প্রকৃত দৃষ্টিশক্তির অনুপস্থিতিতে মস্তিষ্ককে সংবেদনশীল দৃষ্টিতে উদ্দীপিত করে মানুষের দৃষ্টি পুনরুদ্ধার করবে। ব্রাউন ইউনিভার্সিটি এবং ডিউক ইউনিভার্সিটির গবেষকরাও এই গবেষণায় অবদান রেখেছেন, যা জার্নাল নেচার ম্যাটেরিয়ালসে প্রকাশিত হয়েছে।