জামাইষষ্ঠীর ঘন্টি বাজতেই বাজারেও ঢুকে পড়েছেন মাছের রাজা ইলিশ বাবাজি। এই শুরু, এরপর গোটা বর্ষাকাল জুড়ে বাজার দাপাবেন তিনি। ছোট ইলিশ, বড় ইলিশ, খোকা ইলিশ, গঙ্গার ইলিশ, পদ্মার ইলিশ, আছে নানা রকমফের।
এই মাছের নাম 'ইলীশ' হল কী করে? ভুল নয়, প্রথমে কিন্তু এই বানান ছিল আজকের 'ইলিশের'। জিমূত বাহন নিজের 'কাল বিবেক' গ্রন্থে প্রথম এই মাছের নাম দিয়েছিলেন 'ইলীশ'।
'ইল' মানে জল। 'ঈশ' মানে রাজা। এই দুই মিলিয়ে মাছের রাজা 'ইলীশ'। যা আজকের বানান হয়ে দাঁড়িয়েছে 'ইলিশ'। ইলিশের কিন্তু আছে আরও নানা নাম।
সৈয়দ মুজতবা আলি পঞ্চতন্ত্রে লিখেছেন, নানা স্থানে ইলিশের নানা নাম। নর্মদা সাঁতরে যে ইলিশ ডিম পাড়তে আসে, ভেগু কচ্ছের মানুষের কাছে সে পরিচিত 'মদার' নামে।
পার্সিদের কাছে এই মাছ পরিচিত 'বিম' বলে। সিন্ধু নদ দিয়ে যে ইলিশ আসে, তাকে বলে 'পাল্লা'। তামিলরা বলে 'উলম'। গুজরাটে আবার ছেলে ইলিশের নাম 'পালভো'। মহিলা ইলিশের নাম 'মোদেন'।
বাংলাতেও কিন্তু রয়েছে ইলিশের নানা নাম। যেমন ধরুন, খোকা, খয়ড়া, গৌড়ি, চন্দনা, গুর্তা, মুখপোড়া, ফ্যাশা কত রকমের যে ইলিশ আছে! এখানে বলে রাখা ভাল বাংলাদেশের পদ্মার ইলিশের ঠোঁট খানিকটা ভাঙা হয়, তাই একে ঠোঁটভাঙা বলে।
বাংলাদেশে বিলে যে ইলিশ পাওয়া যায় তাকে বলে 'বেলিশ'। যে মাছের স্বাদ নিয়ে এত মাতামাতি, সেই ইলিশের কিন্তু রয়েছে বদনামও। শোনা যায় একবার নদীপথে গুজরাটে বিদ্রোহ দমনে যাচ্ছিলেন মহম্মদ বিন তুঘলক।
সেই সময় তাঁর নৌকায় ঝাপিয়ে পড়ে একটি ইলিশ। সেই ইলিশ খেয়েই পেট ছেড়ে দিয়েছিল সুলতানের। কয়েকদিন পরে মারা যান তিনি। মৃত্যু মাছের কারণে হয়েছিল কিনা জানা যায় না। তবে তার পরে ইলিশের নাম হয় 'খুনে মাছ'।