ছিল না কোনও ফ্রিজ, প্রযুক্তি! ব্রিটিশ আমলে কী ভাবে মিটত বরফের চাহিদা?
credit:PTI
TV9 Bangla
বরফ আর ঠান্ডা পানীয় ছাড়া দিন কাটছে না। এখন বরফ জমানো খুব সহজ। জল জমিয়ে ফ্রিজে ঢুকিয়ে দিলে তা ঘন্টাখানেকের মধ্যেই জমে বরফ হয়ে যায়। কিন্তু একটা সময় বিষয়টা এত সহজ ছিল না। তখন কীভবে মিটত চাহিদা?
ব্রিটিশ ভারতে সাহেবদের প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে উঠত বরফের অভাবে। সেই সময় প্রাথমিক ভাবে এক ধরনের বরফ তৈরি হত চুঁচড়ায়। সে সময় শীতকালে মাটির সরায় জল নিয়ে বাইরে সারারাত রেখে দিলে জলের উপর একটা আস্তরণ পড়ত।
যা নুন দিয়ে সংরক্ষণ করে নিয়ে আসা হত ৪০ কিলোমিটার দূর কলকাতায়। কিন্তু এই জল ছিল নোংরা। তাই বরফও খাওয়ার অযোগ্য। বড়জোর বোতল ডুবিয়ে রেখে তাকে ঠান্ডা করা যেত। বরফের চাহিদা দেখে বুদ্ধি খেলে গেল ফ্রেড্ররিক টিউডরের মাথায়।
এটিকে ঘিরে ব্যবসা ফেঁদে বসলেন তিনি। বোস্টনের বাইরে বড় বড় লেকের স্বচ্ছ পরিষ্কার জল শীতকালে জমে বরফ হয়ে যেত। ফ্রেডরিক সেই বরফ কেটে জাহাজে করে নিয়ে আসা শুরু করলেন ভারতে।
১২ মে ১৮৩৩, তাস্কানি নামক একটি বরফ ভর্তি জাহাজ কলকাতায় এসে পৌঁছোয়। সেই বরফ নামানোর সঙ্গে জড়িয়ে এক মজার কাহিনি। শ্রমিকরা জাহাজে উঠে দেখে সাদা মতো একটা জিনিস থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। ভাবলেন বোধহয় গরম কিছু হবে।
কাছে যেতেই দেখেন একি! এতো চরম ঠান্ডা। ভয় পেয়ে চিৎকার করে উল্টোদিকে দে ছুট! আসলে ওই শ্রমিকরা এর আগে কোনও দিন অত বরফ দেখেনি। আজ হেয়ার স্ট্রিট ক্রসিংয়ের স্মল কসেস কোর্ট সেখানে এক সময় ছিল আইস হাউস।
বরফ ভর্তি জাহাজ আনলোড করে ওই আইস হাউসে বিশেষ ব্যবস্থা করে তাকে সংরক্ষণ করা হত। এর দাম ছিল বেশ চড়া। শোনা যায়, প্রথম দিকে প্রেসক্রিপশন না থাকলে মিলত না বরফ।
সময়ের সঙ্গে প্রযুক্তির উন্নতির হলে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ে এই ব্যবসা। তবে সেই মাত্র ২০ বছরে নাকি ২ লক্ষ ডলার আয় করেছিলেন ফ্রেডরিক। কলকাতা ছাড়াও, মাদ্রাস এবং বম্বেতেও ছিল এই আইস হাউস।