07 JUN 2025

পঞ্জাবের নয়, বাংলারও নয়! বাঙালির সাধের পাঞ্জাবি আসলে কোথাকার পোশাক?

credit:AI Generated

TV9 Bangla

বাঙালিয়ানা বললেই আমাদের চোখের সামনে যে ছবিটা ফুটে ওঠে তা হল হয় শাড়িতে নারী। না হলে ধুতি-পাঞ্জাবি পরিহিত পুরুষ। কিন্তু বাঙালির আদি পোশাক বলে পরিচিত পাঞ্জাবি কি আদৌ বাঙালির?

ইতিহাস কিন্তু বলছে একদম অন্যকথা। বাঙালির পুরনো পোশাক কিন্তু কখনই পাঞ্জাবি ছিল না। আসলে একটা সময়ে বাঙালিদের মধ্যে সেলাই করা কোনও পোশাক পরার চল ছিল না।

প্রাচীন কালে এক কাপড়ের পোশাক পরার চল ছিল। যেখানে কোনও কাটা বা সেলাই থাকত না। সেলাই করা পোশাককে অপবিত্র বলেও মনে করা হত। অর্থনীতিবিদ, রাজনীতিক, কূটনীতিক চাণ্যকের অর্থশাস্ত্র ঘাঁটলে দেখা যায় এক বিশেষ পোশাকের উল্লেখ।

মৌর্য্য যুগে বঙ্গদেশে কার্পাস, সন, পাট গাছের ছাল তৈরি সুতো দিয়ে বোনা হত সুতির কাপড়। পুরুষরা নিজের নিম্নাঙ্গে বিশেষ পদ্ধতিতে এই কাপড় পরতেন। যাকে বলা হত দুকুল। প্রথমে এই দুকুল বুনে তাকে বারবার ধুয়ে সাদা রং আনা হত।

বারবার ধোয়া হত বলে এর নাম হয় ধৌত। যা কালক্রমে অপভ্রংশ হয়ে আজকের ধুতিতে এসে দাঁড়িয়েছে। সে সময় পুরুষরা বস্ত্ররূপে নিম্নাঙ্গে কেবল ধুতি পরতেন। উর্ধাঙ্গে থাকত না কোনও বস্ত্র।

শীতকালে চরম ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচতে, গায়ে উত্তরীয়র মতো এক খন্ড কাপড় জড়িয়ে নিতেন বলে জানা যায়। এরপর মধ্য এশিয়া থেকে পাঠান, মোঘলরা এলে পরিচয় ঘটে আলখাল্লা, ফতুয়ার মতো পোশাকের সঙ্গে।

এর মধ্যে ভারতে জনপ্রিয়তা লাভ করে এক বিশেষ সাদা রঙের মোলায়েম ফতুয়া জাতীয় পোশাক। যদিও বাঙালিরা প্রথমে এই পোশাক গ্রহণ করেনি। তবে ১৫০০ শতক থেকে অভিজাত বাঙালিরা বাদশাহের দরবারে যাওয়ার সময় এই পোশাক পরা শুরু করেন।

ধীরে ধীরে আমবাঙালির মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ফতুয়া। উত্তর ভারতে থেকে আসা মানুষরা বাঙালিদের কাছে একচেটিয়া ভাবেই পঞ্জাবি বলতেন। পাঠান, মোঘলরাও সেখান থেকে আসায় এর নামকরণ হয় পাঞ্জাবি। ধীরে সেই পঞ্জাবি ফতুয়া বাঙালি ছোঁয়ায় আজকের পাঞ্জাবি হয়ে ওঠে।