18 JUN 2025

১৩৫০ কোটির হিরের 'পেপারওয়েট'! ২০ লক্ষ কোটির মালিক, ভারতের ধনীতম রাজা কে?

credit:Getty Images, pinterest

TV9 Bangla

ভারতের রাজা এবং তাঁদের কাহিনি বলতে শুরু করলে একটা গোটা জীবন কেটে যেতে পারে। বিশেষ করে তাঁদের ঐশ্বর্য্য এবং বিলাসবহুল জীবনযাত্রার কথা উঠলে তো তা আরও বেশি। তবে এই রাজার ধারে কাছে কেউ আসে কিনা তা তদন্ত সাপেক্ষ।

তিনি হলেন মীর ওসমান আলি খান, হায়দরাবাদের সপ্তম নিজাম। শোনা যায় এক সময় নাকি তিনিই ছিলেন বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তি। ওজন করে মাপত হত সোনা-হিরে। এই প্রতিবেদনে রইল তাঁরই গল্প।

শোনা যায় ওসমান আলি খানের সম্পত্তির পরিমাণ এত ছিল যে হিরেও দাম দিয়ে নয় মাপা হত ওজনে, কিলোগ্রামে। সোনার হিসেব রাখতে হত টনে। কালেকশনে ছিল ৫০ বেশি রোলস রয়্যালস গাড়ি।

ওসমান আলির মোট সম্পত্তির পরিমাণ ছিল প্রায় ২৩৬ বিলিয়ন ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় ২০,৩৫,৫৭,৬৭,০০,০০০ বা ২০ লক্ষ কোটি টাকার বেশি।

তাঁর হিরের কালেকশনে একটি হিরে হল জেকব ডায়মন্ড। ১৮৫ ক্যারেটের ওই হিরের দাম প্রায় ১৩৫০ কোটি টাকারও বেশি। শোনা যায় ওই হিরেটিকে নাকি 'পেপারওয়েট' বা পাতা চাপা দেওয়ার কাজে ব্যবহার করতেন নিজাম।

নিজামের বেশিরভাগ সময় কাটত হায়দরাবাদের বুকে অবস্থিত বিলাসবহুল ফলকনুমা প্যালেসে। ৩২ একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এই প্যালেস তৈরি হয় ১৮৯৩ সালে। আছে ২২০টি ঘর।

এই প্যালেসে আছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ৮০ ফুট দীর্ঘ ডাইনিং টেবিল। যেখানে ১০১ জন অতিথি একসঙ্গে বসে খাবার খেতে পারেন। তবে বিপুল সম্পত্তির মালিক হলেও উদার ছিলেন নিজাম। ১৯৬৫ সালে ভারত-চিন যুদ্ধের সময় ভারত সরকারকে ৫০০০ কিলোগ্রাম সোনা দান করেন নিজাম।

এহেন ধনী এবং উদার নিজাম নাকি ব্যক্তিগত জীবনে ছিলেন বড়ই সাধাসিধে। নিন্দুকেরা অবশ্য বলে কিপটে। ডমিনিক ল্যাপিয়ের এবং ল্যারি কলিন্স তাঁদের বই 'ফ্রিডম অ্যাট মিডনাইট'-এ লিখেছেন, নিজাম নাকি অতিথিদের ফেলে আসা ব্যবহৃত সিগারেটের টুকরো তুলে ধূমপান করতেন।

তিনি ৩৫ বছর ধরে একই টুপি পরতেন। নিজের জামাকাপড় সবসময় ইস্ত্রি করতেন না। সোনা, কাঁসা, রুপো সহ বহু দামী দামী বাসন থাকলেও পুরনো টিনের প্লেটে খাবার খেতেন। যদিও নিজামের কাছে এত সোনার বাসন ছিল যে একসঙ্গে ২০০ জনকে খাবার পরিবেশন করা সম্ভব ছিল।  

বিলাসবহুল গাড়ির বিশাল সম্ভার থাকা সত্ত্বেও নিজে কিন্তু চড়তেন পুরনো ভাঙা গাড়িতেই। শহরে কোনও গাড়ি দেখে তাঁর হঠাৎ পছন্দ হলে সেই গাড়ি নাকি তাঁর থেকে উপহার চেয়ে বসতেন তিনি। নিজামকে না বলার সাধ্য ছিল না খুব একটা কারও কাছে।

মীর ওসমান আলি খানের চরিত্র অন্তর্দ্বন্দ্ব পরিপূর্ণ। বিপুল সম্পদের অধিকারী, দেশের প্রয়োজনে মুক্ত হস্ত, অথচ নিজে কেন এমন অদ্ভুত জীবনযাপন করতেন? তার উত্তর জানা যায়নি আজও।