রবীন্দ্রনাথের জন্য ৩১ বছর আকাশবাণীতে নিষিদ্ধ ছিল হারমোনিয়াম! কেন জানেন?
credit:TV9
TV9 Bangla
বাঙালির সঙ্গে সংস্কৃতি চর্চা যেন এক বিশেষ যোগ রয়েছে। ছোটবেলা থেকে প্রায় প্রত্যেক বাচ্চাকে হয় আবৃত্তি, নয় নাচ বা গান শিখতে পাঠানো হয়। যা একটি শিশুর সামগ্রিক বিকাশে সাহায্য করে।
তেমনই বাঙালির গান চর্চার সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে আরেকটি বাদ্য যন্ত্রও। সেটি হল হারমোনিয়াম। যারা গানের চর্চা তাঁরা এই যন্ত্রটির সঙ্গে বিশেষ ভাবে পরিচিত।
আবার বাংলার সঙ্গীত চর্চার অন্যতম পীঠস্থান জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবার। সেই পরিবারের সন্তান আমাদের প্রাণের ঠাকুর রবীন্দ্রনাথ। হারমোনিয়ামে সুর তুলে রবীন্দ্রনাথের গান গাওয়ার ছবি খুবই সাধারণ বিষয় এই বাংলায়।
কিন্তু হারমোনিয়াম বাজিয়ে আজ যার গান সবচেয়ে বেশি করে গাওয়া হয় সেই রবীন্দ্রনাথ কি হারমোনিয়াম পছন্দ করতেন? তিনি গানে সুর দেওয়ার সময় হারমোনিয়াম ব্যবহার করতেন?
হারমোনিয়াম আবিষ্কার হয় ১৮৪০ সালে। ফ্রেঞ্চ নাগরিক আলেকজান্ডার ডিঁবের হাতে। সময়ের সঙ্গে সেই হারমোনিয়াম এসে পৌঁছোয় ভারতেও। নতুন এই বাদ্যযন্ত্র বেশ মনে ধরেছিল পন্ডিত ভীমসেন যোশী, উস্তাদ বড়ে গুলাম আলি সাহাব কিংবদন্তী শিল্পীর।
এমনকি সেই তালিকায় ছিলেন বেগম আখতার এবং স্বয়ং রবিঠাকুর নিজেও। তাহলে হঠাৎ কি হল? কেন হারমোনিয়াম ব্যবহারের জন্য চিঠি দিয়ে বসলেন তিনি? আসলে কিছুদিন পরে শুরু হয় স্বদেশী আন্দোলন।
সেকালের সঙ্গীতজ্ঞদের কেউ কেউ বলেন হারমোনিয়াম ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের সব রাগকে নিঁখুত ভাবে ফোটাতে পারে না। এর পরেই আকাশবাণীতে চিঠি দিয়ে হারমোনিয়াম বাজানোর সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে বলেন তিনি।
ওই চিঠির জেরে ১৯৪০ সালে আকাশবাণীতে নিষিদ্ধ হয় হারমোনিয়াম। যা কায়েম ছিল স্বাধীনতার পর প্রায় ২৫ বছর। ১৯৭১ সালে অল ইন্ডিয়া রেডিয়ো থেকে সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়।